বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে ট্রাম্পের প্রশংসার ভিডিওটি সম্পাদিত

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সমর্থকরা সামাজিক মাধ্যমে একটি সম্পাদিত ভিডিও ছড়িয়েছেন, যেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দক্ষিণ এশিয়ার এই নেতার প্রশংসা করতে দেখা যায়। জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের সুনির্দিষ্ট সময়সূচী ঠিক করার বিষয়ে  ভিন্ন রাজনৈতিক দল যখন ড. ইউনূসকে চাপ প্রয়োগ করতে শুরু করে, তখন ভিডিওটি ছড়ানো হয়। তবে মূল ক্লিপটিতে ট্রাম্পকে তাঁর এক মন্ত্রিসভার বৈঠকে দেখা যায়, যেখানে ইউনূস ও বাংলাদেশ নিয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি। 

১২ মে ২০২৫ তারিখে একটি ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, “ড. ইউনূসের প্রশংসা করলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প”। 

পোস্টে যুক্ত একটি ঝাপসা ভিডিওতে একটি বৈঠকের সময় ট্রাম্পকে ইউনূসের প্রশংসা করতে দেখা যায়। 

ভিডিওতে ট্রাম্পকে বলতে দেখা যায়, “ইউনূস অত্যন্ত উচ্চ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ এবং আমার  বন্ধু। তিনি সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিয়েছেন। বাংলাদেশের উন্নয়নে ড. ইউনূস বড় ভূমিকা রাখবেন”।  

Image
লাল ক্রস চিহ্নসহ ১৯ জুন ২০২৫ তারিখে নেয়া অসত্য পোস্টের স্ক্রিনশট

বাংলাদেশে ক্ষমতার জন্য লড়াইরত রাজনৈতিক দলগুলো যখন নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসের কাছে নির্বাচনের সময়সূচী নির্ধারণের দাবি জানাতে শুরু করে, তখন ইউনূসের সমর্থকদের মাঝে একই ধরনের পোস্ট ফেসবুকে ছড়ানো হয়। আন্দোলনের মুখে ২০২৬ সালের এপ্রিলে নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দেন তিনি (আর্কাইভ লিংক)।

এসব পোস্টের মন্তব্য দেখে মনে হচ্ছে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীরা ভিডিওটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। 

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার প্রতি ইঙ্গিত করে একজন লিখেন, “এটা শুনলে তো আপা স্ট্রোক করবে”। 

অন্য একজন লিখেন, “আমেরিকা তার প্রশংসা করছে, কারণ তারা অনেক সুবিধা পাবে”। 

গুগলে একটি রিভার্স ইমেজ সার্চে দেখা যায় যে, সভার ফুটেজটি ৩০ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে আমেরিকার নিউজ চ্যানেল ফক্স নিউজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে প্রকাশিত হয়েছিল (আর্কাইভ লিংক)।

কিন্তু ফুটেজটির অডিও সম্পাদন করা হয়েছে এবং মূল ক্লিপটির কোথাও ট্রাম্পকে ইউনূসের বিষয়ে কিছু বলতে দেখা যায়নি। 

ট্রাম্প বলেন, “আমি প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাতে চাই। এটা সত্যিই খুব চিত্তাকর্ষক এবং আশা করি বাড়ির লোকেরা এর কিছু অংশ দেখতে পাবে”।

“কেউ কখনও প্রকাশ্য মন্ত্রিসভার সভা করেনি। তারা চুপ ছিল কারণ তারা চিত্তাকর্ষক ছিল না, বিশেষ করে গত প্রশাসন”।

একই দিন হোয়াইট হাউসের অফিসিয়াল ইউটিউব অ্যাকাউন্টে ওই সভার সম্পূর্ণ ভিডিও প্রকাশ করেছিল (আর্কাইভ লিংক).

Image
সম্পাদিত ভিডিও(বামে) এবং ফক্স নিউজের ক্লিপের সাথে যেসব মিল রয়েছে সেগুলো হাইলাইট করে তুলনামূলক স্ক্রিনশট

ভেরিফিকেশন প্লাগইনে ভয়েস ক্লোনিং ডিটেকশন ট্যুল হিয়া ব্যবহার করে অনলাইনে ছড়ানো ক্লিপের অডিওটির বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ‘এটি খুব সম্ভবত এআই দিয়ে বানানো”(আর্কাইভ লিংক).  

Image

ট্রাম্প এবং বাংলাদেশকে নিয়ে এর আগে ছড়ানো অপতথ্য খণ্ডন করে এএফপি প্রতিবেদন করেছে এখানেএখানে। 

এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?

আমাদের সাথে যোগাযোগ