এএফপি'র সম্পাদনা ও নৈতিক নীতিমালা

বিশ্বব্যাপী এএফপি'র ফ্যাক্ট চেক সাংবাদিক এবং সম্পাদকরা এএফপি ফ্যাক্ট চেকিং স্টাইলবুক, এএফপি এডিটরিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস ও বেস্ট প্র্যাকটিস এবং এএফপি চার্টার অনুসরণ করে থাকেন।

রেঞ্চ আইনে সংস্থাটির বিশেষ একটি স্ট্যাটাস আছে যেখানে বলা হয়েছে যে তথ্যের নির্ভুলতা বা বস্তুনিষ্ঠতার সাথে আপোস করে এমন কোন অবস্থাতেই এএফপি বাণিজ্যিক, রাজনৈতিক কিংবা আদর্শিক স্বার্থ দ্বারা প্রভাবিত হতে পারবে না।

এএফপি'র ফ্যাক্ট চেকিং স্টাইলবুক

ফ্যাক্ট চেকার হিসেবে আমাদের মিশন বিস্তারিতভাবে এএফপি স্টাইলবুকে ব্যাখ্যা করা আছে। এর মধ্যে রয়েছে ক্ষতিসাধর করতে পারে এরকম বিভ্রান্তিকর দাবিকে প্রাধান্য দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করা, আমাদের প্রতিবেদনে ভারসাম্য বজায় রাখা এবং নির্ভুলতা নিশ্চিত করা।

এখানে ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদন নির্বাচন করার প্রক্রিয়া, লেখা, সূত্র বের করা নিয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করা হয়েছে, এবং কনফার্মেশন বায়াসের ব্যাপারে সচেতনতা তৈরি করা, এবং আমাদের অনুসন্ধানে স্থান পাওয়া মানুষদের ব্যাপারে আমাদের যত্নের  করার প্রক্রিয়া।

আমরা কিভাবে অনুসন্ধান করি এবং ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদন লিখি এ ব্যাপারে এখানে বিস্তারিত পড়তে পারেন।

এডিটরিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস এবং বেস্ট প্র্যাকটিস

এএফপি'র ফ্যাক্ট চেকিং টিমও সংবাদ সংস্থাটির এডিটরিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস এবং বেস্ট প্র্যাকটিস মেনে চলে। এটি আমাদের সম্পাদনা নীতিমালার মৌলিক বিষয়াদি নির্ধারণ করে দেয় এবং নির্ভুল, নিরপেক্ষ এবং ভারসাম্যপূর্ণ কাভারেজ এর ব্যাপারে দায়বদ্ধ।

এই নীতিমালার প্রধান ১০ টি মৌলিক নীতি নীচে দেয়া হলো। এগুলোর কোন একটিতে অসঙ্গতি থাকলে তা প্রতিবেদনে নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে।

  1. এএফপি সাংবাদিকরা নির্ভুল, ভারসাম্যপূর্ণ এবং নিরপেক্ষ সংবাদ প্রদানে, এবং কোন ভুল হলে তা দ্রুততম সময়ে ও স্বচ্ছভাবে সংশোধন করতে নীতিগতভাবে বাধ্য।
  2. এএফপি সাংবাদিকদের অবশ্যই স্বাধীনভাবে ও পূর্বানুমান, পক্ষপাত কিংবা বাহ্যিক প্রভাব থেকে মুক্ত থেকে কাজ করতে হবে। বিচারবুদ্ধির আওতার ভেতরে নয় এমন কাজ করার জন্য সাংবাদিকরা বাধ্য নয়।
  3. এএফপি সাংবাদিকরা তাদের তথ্যের উৎসের গোপনীয়তা রক্ষা করতে বাধ্য এবং তাদেরকে কোনভাবেই হুমকির সম্মুখীন করতে পারবেন না।
  4. দোষী প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত যে কেউ নির্দোষ এই নীতির প্রতি এএফপি সাংবাদিকরা অবশ্যই সম্মান প্রদর্শন করবেন।
  5. এএফপি সাংবাদিকদের দায়িত্ব হলো সত্য খোঁজা এবং তাদের কাছে যেভাবে তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে সেভাবে সাথে সাথে প্রতিবেদন না করা।
  6. এএফপি'র ফটো এবং টিভি সাংবাদিকরা কোনভাবেই ছবি কিংবা ভিডিও বিকৃত করতে পারবেন না এবং বিষয়বস্তু পরিবর্তন করতে পারবেন না। টেক্সট সাংবাদিকরা কোনভাবেই তাদের প্রতিবেদনে কোন উক্তি নিজেদের ইচ্ছেমতো পরিবর্তন করতে পারবেন না।
  7. এএফপি সাংবাদিকদের অবশ্যই তথ্যের সূত্র স্বচ্ছভাবে সনাক্ত করা এবং কোনভাবেই কৃতজ্ঞতা ছাড়া কারো লেখা অনুকরণ যাবে না। তারা কোনভাবেই একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার আগ পর্যন্ত সূত্রের কাছে পাঠাতে পারবেন না।
  8. কোন ভিকটিম অথবা তার আত্নীয়ের সাথে কথা বলার সময় এএফপি সাংবাদিকদের সংবেদনশীল থাকতে হবে। শিশুদের ছবি বা সাক্ষাতকার নেয়ার সময় বিশেষভাবে সতর্ক হতে হবে এবং যখনই সম্ভব পিতা-মাতার সম্মতি নিতে হবে।
  9. এএফপি সাংবাদিকরা নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে পারবেন না। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে সংবাদ ব্যবস্থাপনা টিমের অনুমতি সাপেক্ষে নিজের পরিচয় গোপন রেখে কাজ করতে পারবেন।
  10. এএফপি সাংবাদিকরা সংবাদ প্রকাশের স্বার্থে সংগৃহীত তথ্য নিজস্ব স্বার্থ অথবা আর্থিক লাভের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন না। তারা তাদের সোর্স বা সূত্রকে কোন অর্থ প্রদান করেন না।

সংস্থাটির কাভারেজের নির্দলীয়তা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য এএফপি'র এডিটরিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস এবং বেস্ট প্র্যাকটিস সাংবাদিকদের জন্য কিছু নির্দেশনাও প্রণয়ন করেছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, "তাদের কাজকে প্রভাবিত করতে পারে এমন কোন স্বার্থের দ্বন্দ্ব থাকলে তা স্পষ্ট উল্লেখ করে দেয়া, নিরপেক্ষতায় এএফপি'র স্বার্থ ও খ্যাতির সাথে দ্বন্দ্ব তৈরী করে এরকম কোন বাহ্যিক স্বার্থ বা কর্মকান্ডকে প্রশ্রয় দেয়া যাবে না, সোর্স বা সূত্রের কাছ থেকে কোন উপহার বা আতিথেয়তা গ্রহণ করা যাবে না। নির্দেশনাগুলোর বিস্তারিত বর্ণনা পলিসি ডকুমেন্টটির চার নম্বর সেকশনে উল্লেখ রয়েছে।

এএফপি চার্টার  

বৈশ্বিক ঘটনাবলীর নির্ভুল, সামঞ্জস্যপূর্ণ ও নিরপেক্ষ কাভারেজকে মূল লক্ষ্য হিসেবে নিয়ে বহুভাষী ও বহুসংস্কৃতির একটি সংবাদ সংস্থা হিসেবে এএফপি'র চার্টারে এর কাজের নৈতিক মূলনীতিসমূহ স্পষ্ট করে দেয়া আছে।

রাজনৈতিক, বাণিজ্যিক অথবা আদর্শিক প্রভাবমুক্ত থেকে স্বাধীনভাবে সত্য উদঘাটন এবং প্রকাশে সংস্থাটির কর্তব্য এখানে বিবৃত রয়েছে।

একইসাথে এতে মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সাংবাদিকদের অধিকারের বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে। একইভাবে চার্টারটি বর্ণ, লিঙ্গ, জাতীয়তা অথবা ধর্মকে ভিত্তি করে কোন বৈষম্যকে স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করে।

মান নিয়ন্ত্রণে ফ্যাক্ট চেকিং কম্যুনিটির সাথে সহযোগিতা 

নিজের সম্পাদনা ও নৈতিক নীতিমালা প্রণয়নের সাথে সাথে ইউরোপে ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থাসমূহের জন্য কোড অব স্ট্যান্ডার্ডস তৈরি করা ইউরোপিয়ান ফ্যাক্ট চেকিং স্ট্যান্ডার্ডস নেটওয়ার্ক প্রণয়নেও এএফপি  নেতৃত্ব দিয়েছে।

এতে ভুয়া বা অপতথ্য প্রতিরোধে স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা এবং সাংবাদিকতার সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করতে দায়বদ্ধতার নীতি উল্লেখ রয়েছে। আপনি যদি মনে করেন এএফপি কোথাও এই কোডের লঙ্ঘন করেছে তবে এখানে ইএফসিএসএন-কে জানাতে পারেন। 

এতে ভুয়া বা অপতথ্য প্রতিরোধে স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা এবং সাংবাদিকতার সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করতে দায়বদ্ধতার নীতি উল্লেখ রয়েছে। আপনি যদি মনে করেন এএফপি কোথাও এই কোডের লঙ্ঘন করেছে তবে এখানে ইএফসিএসএন-কে জানাতে পারেন।

এএফপি একইসাথে ইন্টারন্যাশনাল ফ্যাক্ট চেকিং নেটওয়ার্ক (আইএফসিএন) এরও স্বাক্ষরকারী। এতে নিরপেক্ষতা, সূত্রের স্বচ্ছতা, সংগঠন এবং এর অর্থায়নের স্বচ্ছতা, পদ্ধতির স্বচ্ছতা এবং উন্মুক্ত ও সৎ সংশোধনী নীতিমালার প্রতি দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করা হয়েছে।  আপনি যদি মনে করেন এএফপি এই নীতিমালা পালন করতে পারেনি তবে এখানে আইএফসিএনকে সরাসরি জানাতে পারেন।

এএফপি বিশ্বস্ত সাংবাদিকতার উন্নয়নে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস (আরএসএফ) এর পরিচালিত বৈশ্বিক প্রকল্প জার্নালিজম ট্রাস্ট ইনিশিয়েটিভেরও সহযোগী অংশীদার।