অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ভিডিও, সাবেক এমপির বাড়ি ভাঙচুরের নয়

  • প্রকাশিত 28 মে 2025, 15:40
  • আপডেট করা হয়েছে 28 মে 2025, 15:45
  • 2 এক্স মিনিটে পড়ুন
  • লেখক: এএফপি বাংলাদেশ
  • অনুবাদ এবং অভিযোজন Rasheek MUJIB
২০২৪ সালে সরকার উৎখাতের আন্দোলনের সাথে সম্পর্কিত একাধিক অভিযোগে ১২ মে বাংলাদেশের জনপ্রিয় লোকসংগীত শিল্পী এবং সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে অনলাইনে ছড়ানো ভিডিওটি তাঁর বাড়ি ভাঙচুরের নয়। স্থানীয় পুলিশ এএফপিকে জানিয়েছেন যে, তাঁর বাড়ির কোন ক্ষতি হয়নি। সরকারি জমিতে অবৈধ ভবন ভাঙার বিষয়ে মার্চের বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদনে একই রকমের ফুটেজের সাথে ক্লিপটির মিল পাওয়া যায়। 

১৯ মে একটি ফেসবুক পোস্টে প্রকাশিত ভিডিওটিতে একটি এক্সকাভেটর দিয়ে একটি সাদা ভবন গুঁড়িয়ে দিতে দেখা যায়। পোস্টটি ২৮,০০০ বার ফেসবুকে ভিউ হয়েছে। 

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য লোকসংগীত শিল্পী মমতাজ বেগমের প্রতি ইঙ্গিত করে পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়, “শিল্পী মমতাজের বাড়ি ভেঙ্গে দেওয়া হচ্ছে”। 

Image
২২ মে ২০২৫ তারিখে নেয়া অসত্য পোস্টের স্ক্রিনশট

২০২৪ সালের আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন অভ্যুত্থানে হাসিনার পতনের পর থেকে রাজনৈতিক অস্থিরতায় নিমজ্জিত বাংলাদেশ। এসময় সাবেক ক্ষমতাসীন দলের সদস্যদের বাড়িঘর ও সম্পত্তি ভাঙচুর করে আন্দোলনকারীরা। 

জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিক্ষোভকারীদের দমাতে হাসিনা সরকারের শুরু করা এক নৃশংস অভিযানে ২০২৪ সালের জুলাই ও আগস্ট মাসে অন্তত ১,৪০০ জন লোককে হত্যা করা হয়েছে (আর্কাইভ লিংক)।  

তখন থেকে হাসিনা সরকারের সিনিয়র নেতাদের বিচার শুরু করেছে বাংলাদেশ, যা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ক্ষমতার জন্য লড়াইরত বেশ কিছু রাজনৈতিক দলের মূল দাবি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ২০২৬ সালের জুনের আগে কাঙ্খিত নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি জানিয়েছে। 

গত বছরের অভ্যুত্থানের সাথে সম্পর্কিত একটি হত্যা মামলাসহ কয়েকটি অভিযোগে মমতাজ গ্রেপ্তার হওয়ার পর দাবিটি অন্যত্র ফেসবুকে এবং ইউটিউবে ছড়ানো হয়(আর্কাইভ লিংক)। তদন্তের জন্য সাবেক এই আইনপ্রণেতাকে কারা হেফাজতে আটক রাখা হয়েছে।

কিছু সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীর মন্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, তাঁরা দাবিটি বিশ্বাস করেছেন। 

একজন মন্তব্য করেন, “উনি একজন শিল্পী, তাঁর বাড়ি এভাবে ভাঙ্গা ঠিক না, যদিও তিনি সংসদ সদস্য ছিলেন, এটা ঠিক না।”

আরেকজন বলেন, “এটা অন্যায় এর প্রতিকার হওয়া দরকার।”

তবে মমতাজের নিজ এলাকা মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ২২ মে এএফপিকে জানান যে, সাবেক আইনপ্রণেতা ও শিল্পীর ভাঙচুর কিংবা কোন ক্ষতি হয়নি। 

ফুটেজটির কিফ্রেম নিয়ে গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চে ৩০ মার্চ সরকারি জমিতে অবৈধ আবাসন ভবন উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে স্থানীয় টেলিভিশন মাছরাঙা নিউজের একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায় (আর্কাইভ লিংক)। 

প্রতিবেদনেটির শিরোনামে বলা হয়, “বনের জমিতে তৈরি ডুপ্লেক্সসহ দেড়শতাধিক বাড়ি উচ্ছেদ, বনকর্মীদের ওপর হা/ম/লা”। 

প্রতিবেদনটিতে বন বিভাগের উচ্ছেদ অভিযানের বিভিন্ন ক্লিপ রয়েছে। ফেসবুকে ছড়ানো ফুটেজটির সাথে মূল প্রতিবেদনের এক মিনিট চার সেকেন্ডের অংশের মিল রয়েছে, যেখানে একটি বুলডোজার একই ভবনটিকে ভেঙে দেয়।

Image
অসত্য পোস্ট (বামে) এবং মাছরাঙা নিউজের ভিডিওটির তুলনামূলক স্ক্রিনশট 

স্থানীয় আরেকটি সংবাদ মাধ্যম আজকের পত্রিকাও ভেঙে ফেলা একই অবকাঠামোর একটি ছবি প্রকাশ করেছে(আর্কাইভ লিংক)

বাংলাদেশের অস্থিতিশীলতাকে কেন্দ্র করে অসত্যভাবে ছড়ানো অন্যান্য অসত্য ও বিভ্রান্তিকর দাবি খণ্ডণ করেছে এএফপি।

এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?

আমাদের সাথে যোগাযোগ