
ভিডিওটি চীনে অগ্নিনির্বাপণ মহড়ার, ইসরায়েলের বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওপর ইরানের হামলার নয়
- প্রকাশিত 7 জুলাই 2025, 14:40
- 3 এক্স মিনিটে পড়ুন
- লেখক: এএফপি বাংলাদেশ
- অনুবাদ এবং অভিযোজন Rasheek MUJIB
কপিরাইট © এএফপি ২০১৭-২০২৫। এই কন্টেন্টের যেকোন বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
১৭ জুন ২০২৫ তারিখে ছড়ানো একটি ফেসবুক ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়, "ইজরায়েল পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সফল হামলা চালিয়েছে ইরান”।
ভিডিওটিতে একটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডের ফলে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ হতে দেখা যায়।

দুই চিরশত্রুর মধ্যে সর্বশেষ রাতারাতি হামলায় ইরান ইসরায়েলে হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার কথা জানানোর পর ভিডিওটি ছড়াতে দেখা যায়। হাইপারসনিক মিসাইল শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি গতিতে চলে এবং মাঝ আকাশে গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে, যার ফলে এসব মিসাইলের গতিপথ নির্ধারণ এবং প্রতিরোধ কঠিন (আর্কাইভ লিংক)।
এর আগে ১৫ জুন হাইফার একটি তেল শোধনাগারে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করে ইরান (আর্কাইভ লিংক)।
১৩ জুন ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে ইসরায়েল নজিরবিহীনভাবে বোমা হামলা চালালে এই যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। এই সংঘাত পুরো একটি অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ সত্ত্বেও কোন পক্ষই দূরপাল্লার যুদ্ধ থেকে পিছু হটেনি।
২২ জুন তেহরানের সাথে ইসরায়েলের যুদ্ধে যোগ দেয় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন বিমান হামলায় ইরানের প্রধান পারমাণবিক স্থাপনা "সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস" হয়ে গেছে বলে ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সাথে ইরান দ্রুত শান্তিচুক্তি না করলে ওয়াশিংটন আরও লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর হুশিয়ারি দেন ট্রাম্প (আর্কাইভ লিংক)।
একই ধরনের পোস্টে ফুটেজটি অন্যত্র ফেসবুকে ছড়ানো হয়েছে।
কিন্তু ভিডিওটি হাইফা বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইরানের হামলার নয়।
এএফপি এর আগে কিছু পোস্ট খণ্ডন করেছে, যেখানে একই ক্লিপটিকে ২০১৯ সালের মে মাসে সিঙ্গাপুরে অগ্নিকাণ্ডের বিভ্রান্তিকর দাবিতে ছড়ানো হয়েছিল।
’অগ্নিনির্বাপণ মহড়া’
অসত্যভাবে ছড়ানো ভিডিওর কিফ্রেম ব্যবহার করে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চে ১৭ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে ইউটিউবে প্রকাশিত একটি দীর্ঘ সংস্করণ পাওয়া যায়(আর্কাইভ লিংক)।
ভিডিওটির শিরোনামে বলা হয়, "চীনের রাসায়নিক কারখানায় ব্যাপক বিস্ফোরণ"।
চীনা সার্চ ইঞ্জিন বাইডুতে অন্য একটি রিভার্স ইমেজ সার্চে ২০১৬ সালে পিপল'স ডেইলি অনলাইন-এ প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রকৃতপক্ষে ফুটেজটি ২০১৫ সালের নভেম্বরে চেংডু পাবলিক সিকিউরিটি ফায়ার ব্রিগেড ট্রেনিং ঘাঁটিতে অনুষ্ঠিত একটি অগ্নিনির্বাপণ মহড়ার(আর্কাইভ লিংক এখানে এবং এখানে)। এতে আরও বলা হয় যে, সিচুয়ান ফায়ার সার্ভিসের অফিসিয়াল ওয়েইবো অ্যাকাউন্টে মহড়াটির বিস্তারিত তথ্য প্রকাশিত হয়েছিল(আর্কাইভ লিংক)।
চীনা ওয়েইবো পোস্টে বলা হয়, "সাংহাই কোঅপারেশন সংস্থার জরুরি উদ্ধার বিভাগের অষ্টম বৈঠকের জন্য ১২ নভেম্বর বিকেলে চেংডু পাবলিক সিকিউরিটি ফায়ার ব্রিগেড ট্রেনিং ঘাঁটিতে একটি উদ্ধার মহড়া প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছিল”।
ওয়েইবো পোস্টের একটি ছবিতে দৃশ্যমান স্থাপনাগুলোর সাথে পোস্টের ভিডিওর স্থাপনাগুলোর একটি মিল পাওয়া যায়।

গুগল আর্থে চেংডু ট্রেনিং ঘাঁটির জানুয়ারি ২০১৬ সালের স্যাটেলাইট ছবির সাথে অসত্য পোস্টের কিছু মিল পাওয়া যায় (আর্কাইভ লিংক)।

সিচুয়ান ফায়ার ব্রিগেড একই দিন পৃথক একটি লেখায় মহড়ার আরও কিছু ছবি প্রকাশ করে (আর্কাইভ লিংক)।
ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে ছড়ানো অন্যান্য অপতথ্য খণ্ডন করে এএফপি প্রতিবেদন করেছে এখানে।
এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?
আমাদের সাথে যোগাযোগ