
গাজা উপত্যকার পুরনো ফুটেজকে ইসরায়েলের ওপর ইরানের হামলার অসত্য দাবিতে প্রচার
- প্রকাশিত 17 অক্টোবর 2024, 15:42
- 3 এক্স মিনিটে পড়ুন
- লেখক: এএফপি বাংলাদেশ
কপিরাইট © এএফপি ২০১৭-২০২৫। এই কন্টেন্টের যেকোন বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
গত ২ অক্টোবর ২০২৪ একটি ফেসবুক পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়, "ইরান সফলভাবে ৩০টি ইসরাইলি পঞ্চম প্রজন্মের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান ধ্বংস করেছে। এই ফাইটার জেট দিয়ে 40,000 শিশুকে গণহত্যার কাজে ব্যবহার করেছিল। ভিডিওঃধ্রুব রাঠির টুইটার থেকে।"
১২০০ বারের বেশি ভিউ হওয়া পোস্টটিতে ছেঁড়া তাঁবু এবং ধ্বংসাবশেষে আচ্ছন্ন একটি এলাকার জমিতে বিশাল গর্তের ভিডিও দেখা যায়।
হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নসরুল্লাহ এবং হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়া হত্যার প্রতিশোধ স্বরুপ ইসরায়েলের ওপর ইরানের প্রায় ২০০ ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপের পর একই ধরনের পোস্টে ভিডিওটি ফেসবুকে এখানে ও এখানে শেয়ার করা হয়েছে। যদিও বেশিরভাগ ক্ষেপনাস্ত্রই ইসরায়েল এবং তার মিত্ররা প্রতিহত করেছে।

ইসরায়েলের চির শত্রু ইরান গাজায় হামসকে সমর্থন করে এবং ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর ফিলিস্তিনি মিলিট্যান্ট গ্রুপের আক্রমণকে সাধুবাদ জানিয়েছিল।
ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে এএফপির তৈরি করা তালিকা অনুযায়ী, হামাসের নজিরবিহীন হামলায় ১২০৬ জনের মৃত্যু হয়,যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক।
মিলিট্যান্টদের অপহরণ করা ২৫১ জনের এখনো ৯৭জন গাজায় বন্দী এবং ৩৩ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।
হামাস পরিচালিত ওই ভূ-খণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক সামরিক আক্রমণে অন্তত ৪২,০০০ মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগ বেসামরিক নাগরিক। নিহতদের এই সংখ্যাকে বিশ্বাসযোগ্য বলে বর্ণনা করেছে জাতিসংঘ।
উভয় পক্ষকে সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্ত থেকে সরে আসার জন্য আন্তর্জাতিক আহ্বান সত্ত্বেও ইসরায়েল এবং হিজবুল্লাহর মধ্যে সংঘাত বাড়ার পর ভিডিওটি অনলাইনে ছড়াতে থাকে (আর্কাইভ লিংক)।
তবে ক্লিপটি ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে দক্ষিণ গাজার রাফায় ইসরায়েলের বিমাল হামলার কিছুক্ষণ পর ধারণ করা হয়েছিল।
রাফায় বোমা হামলা
অসত্য পোস্টে ছড়ানো ভিডিওটিতে 'হানি.আলসায়ের' নামে একটি জলছাপ দেখা যায়।

গুগলে কীওয়ার্ড সার্চে দেখা যায় যে, ভিডিওটি ২০২৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি গাজা ভিত্তিক সাংবাদিক হানি আল শায়ের তার ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছিল (আর্কাইভ লিংক)।
পোস্টটির আরবি ক্যাপশনের অনুবাদ হচ্ছে, "দেখুন। রাফার আল-শাবউরা ক্যাম্প থেকে যেখানে আজ রাতে তার সৈন্যরা অনুপ্রবেশ করেছে বলে দাবি "ইসরায়েলের"।
নিচে অসত্য পোস্টের ভিডিও (বামে) এবং আল শায়েরে ইনস্টাগ্রামে ছড়ানো ভিডিওটির (ডানে) তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেয়া হল:

এএফপির ফটোগ্রাফার সাইদ খতিব একই দৃশ্যের একটি ছবি তুলেছেন।
"মিলিট্যান্ট গ্রুপ হামাস ও ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধের মধ্যে গাজা উপত্যকার দক্ষিণে রাফায় ২০২৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ইসরায়েলের বোমা হামলায় সৃষ্ট গর্ত ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে লোকজন," এএফপির আর্কাইভে ছবিটি এই শিরোনামে রয়েছে।
নিচে অসত্য পোস্টের ক্লিপ (বামে) এবং এএফপির ছবির (ডানে) সদৃশ্য বস্তুর তুলনা দেয়া হল:

প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু তার সৈন্যদের আনুমানিক ১৩ লাখ মানুষ পালিয়ে থাকা দক্ষিণ সীমান্ত শহরে "অপারেশনের প্রস্তুতির" নির্দেশ দেয়ার পর ১০ ফেব্রুয়ারি ঘনবসতিপূর্ণ রাফায় বিমান হামলা করে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়।
এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?
আমাদের সাথে যোগাযোগ