ডাকসু ভিপির ছবি বিকৃত করে সন্দেহ তৈরী

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগঠন নির্বাচন দেশব্যাপী আলোড়ন তৈরি করেছে। এর মধ্যে সম্প্রতি পাকিস্তানের পতাকা ধরে আছেন এমন একটি সম্পাদিত ছবি দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয়েছে। তবে মূল ছবিতে নিজ এলাকায় সফরকালে ডাকসু ভিপি আবু সাদিক কায়েমের হাতে বাংলাদেশের পতাকা দেখা যায়। জীবনে “কখনো পাকিস্তানের পতাকা ধরেননি,” বলেন এএফপিকে জানান সাদিক কায়েম। 

১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে ছড়ানো একটি ফেসবুক পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভিপি সাদিক কায়েম। তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় বাংলার পতাকা বাদ দিয়ে তাঁদের উত্তরসূরি পাকিস্তানি পতাকা হাতে নিয়ে। কি বোঝাতে চাচ্ছেন বাংলার মানুষ জানতে চায়।” 

ছবিতে সাদিক কায়েমকে একটি গাড়ির সানরুফে দাঁড়িয়ে এক হাতে পাকিস্তানের পতাকা উড়াতে দেখা যায়।  

Image
এএফপির যোগ করা ক্রস চিহ্নসহ ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে নেয়া অসত্য ফেসবুক পোস্টের স্ক্রিনশট

ছবিটি একই সময়ে ফেসবুকে এবং ইনস্টাগ্রামে ছড়ানো হয়। এরপর ১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে ১৮ জন ব্যাক্তি এবং কয়েকটি ফেসবুক পেজের বিরুদ্ধে সাইবার হয়রানির মামলা দায়ের করেন সাদিক। এসব ব্যক্তি ও পেজ তাঁকে টার্গেট করে অপতথ্য ছড়িয়েছে বলে মামলায় অভিযোগ করেন তিনি (আর্কাইভ লিংক)। 

গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চে দেখা যায়, সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো ছবিটি ২৮ নভেম্বর প্রথম স্বঘোষিত বিনোদন ফেসবুক পেজ আনোয়ার টিভির একটি পোস্ট প্রকাশিত হয়েছিল (আর্কাইভ লিংক)।

অন্য একটি রিভার্স ইমেজ সার্চ দেখা যায়, বিকৃত ছবিটি কায়েমের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে নভেম্বর ২৬ তারিখে পোস্ট করা একটি ছবির সাথে মিলে যায়, যেখানে তাকে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা হাতে দেখা যাচ্ছে (আর্কাইভ লিংক)। 

Image
অসত্যভাবে ছড়ানো ছবি (বামে) এবং সাদিক কায়েমের পোস্টের (ডানে) তুলনামূলক স্ক্রিনশট

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে গাড়ির সানরুফে সাদিক কায়েমের দাঁড়িয়ে থাকার অনুরূপ ভিডিও প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ছাত্র সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের পর নিজ জেলা খাগড়াছড়ি সফর করেছেন কায়েম(আর্কাইভ লিংক এখানে এবং এখানে)। 

কায়েম এএফপি-কে জানান যে ছবিটি বানোয়াট। 

৩ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে ফোনে এএফপিকে তিনি বলেন, “আমি আমার জীবনে কখনো পাকিস্তানের পতাকা হাতে ধরিনি।” 

“অনেকেই না জেনে এ ধরনের কন্টেন্ট শেয়ার করে থাকে এবং এর ফলে প্রায়শই ভুক্তভোগীর চরিত্র হনন হয়।”

এএফপি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা সম্পর্কিত অন্যান্য অসত্য দাবি খণ্ডন করেছে এখানে। 

এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?

আমাদের সাথে যোগাযোগ