বিমান দুর্ঘটনার পুরনো ভিডিওকে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের সাথে সম্পৃক্ত করে অসত্যভাবে প্রচার
- প্রকাশিত 1 জুলাই 2025, 09:53
- আপডেট করা হয়েছে 1 জুলাই 2025, 09:57
- 2 এক্স মিনিটে পড়ুন
- লেখক: Harshana SILVA, এএফপি বাংলাদেশ
- অনুবাদ এবং অভিযোজন Rasheek MUJIB
কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সামরিক সহিংসতায় ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ করার পর, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়িয়ে সেটিকে পাকিস্তানিরা একটি ভূপাতিত ভারতীয় যুদ্ধবিমান থেকে এক পাইলটকে উদ্ধার করেছে বলে অসত্যভাবে দাবি করা হয়। তবে ভিডিওটি ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রশিক্ষণ কর্মসূচির সময় একটি বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার খবরে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।
৭ মে ২০২৫ তারিখে ফেসবুকে ছড়ানো একটি ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়, “ভারতীয় পাইলট আটক।”
ভিডিওটিতে আগুনে পুড়ে যাওয়া একটি বিমান এবং লোকজনকে সামরিক পোশাক পরিহিত একজনকে সেবা দিতে দেখা যায়। ভিডিওর লোকজন গ্রামীণ উচ্চারণে হিন্দিতে কথা বলছে বলে নিশ্চিত করেছে এএফপির একজন রিপোর্টার।
মে মাসের ৭ তারিখে “সন্ত্রাসী আস্তানা” আখ্যা দিয়ে পাকিস্তানের বেশ কিছু স্থানে বিমান হামলা করে ভারত। যা ইসলামাবাদকে তাৎক্ষণিক পাল্টা হামলার দিকে উস্কে দেয় (আর্কাইভ লিংক)।
ভারত-শাসিত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর একটি হামলায় ২৬ জন নিহত হলে---যাদের বেশির ভাগ পুরুষ, যুদ্ধের সূত্রপাত হয়। ওই হামলায় ইসলামাবাদ মদত দিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে নয়াদিল্লি। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে পাকিস্তান।
এ সময় ফ্রান্সের তৈরী তিনটি রাফাল যুদ্ধ বিমানসহ পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করে পাকিস্তান। যদিও ভারত ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কিত কোন তথ্য নিশ্চিত করেনি (আর্কাইভ লিংক)।
১০ মে ঘোষিত এক যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে দুই প্রতিবেশীর মাঝে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী এই সংঘাতের অবসান হয়।
অসত্য পোস্টটি ফেসবুকে অন্যত্র এখানে ও এখানে ছড়ানো হয়েছে। যদিও ফুটেজটি ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আরও আগেই প্রথম প্রকাশিত হয়।
ভিডিওটির কিফ্রেম ব্যবহার করে গুগলে রিভার্স ইমেজ ও কিওয়ার্ড সার্চে দেখা যায় যে, ভিডিওটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আজ তাক-এর ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ৭ ফেব্রুয়ারির একটি ফেসবুক রিল-এ প্রকাশিত হয়েছিল(আর্কাইভ লিংক)।
ভিডিওটির হিন্দি ভাষার ক্যাপশনে বলা আছে, "মধ্যপ্রদেশের শিবপুরী জেলার বাহরেতা সানি গ্রামের কাছে ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান (মিরাজ-২০০০) বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা সম্পর্কিত আরেকটি ভিডিও পাওয়া গেছে।”
ফুটেজে আজ তকের লাল লোগো রয়েছে, যা ফেসবুকে ছড়ানো ক্লিপের উপরের ডানদিকের অংশে দৃশ্যমান।
বিজনেস টুডে ৭ ফেব্রুয়ারি একই ভিডিও প্রকাশ করে (আর্কাইভ লিংক)।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া এবং এনডিটিভি সহ অন্যান্য ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে, ৬ ফেব্রুয়ারি মধ্যপ্রদেশ রাজ্যে দেশটির বিমান বাহিনীর একটি দ্বি-আসনবিশিষ্ট মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়েছে (আর্কাইভ লিংক এখানে এবং এখানে)।
সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ ভারতীয় বিমান বাহিনী জানিয়েছে যে, সিস্টেমের ত্রুটির কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগেই পাইলটরা বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছিল (আর্কাইভ লিংক)।
মধ্যপ্রদেশের শিবপুরী জেলার একটি পৌরসভা কারেরার একজন পুলিশ কর্মকর্তা ভাস্কর ইংলিশকে বিমান দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বিধ্বস্ত হওয়ার সময় বিমানে দুজন পাইলট ছিলেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমটি একজন পাইলটের বক্তব্যও প্রকাশ করেছিল (আর্কাইভ লিংক)।
কাশ্মীর হামলার পর ছড়ানো অন্যান্য অপতথ্য খণ্ডন করে এএফপি প্রতিবেদন করেছে এখানে ও এখানে।
কপিরাইট © এএফপি ২০১৭-২০২৫। এই কন্টেন্টের যেকোন বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?
আমাদের সাথে যোগাযোগ