পাকিস্তানি প্যারাগ্লাইডারের ভিডিও, ভারতীয় নারী পাইলটকে আটকের নয়

কয়েক দিনের তীব্র লড়াইয়ের অবসান আনা যুদ্ধবিরতিতে নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ সম্মত হওয়ার কয়েক ঘন্টা আগে সামাজিক মাধ্যমের পোস্টে একটি ভিডিও শেয়ার করে সেটিকে বিমান থেকে ছিটকে ভারতীয় নারী পাইলটের পাকিস্তানে অবতরণের দৃশ্য বলে অসত্যভাবে দাবি করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ভিডিওটি সংঘাত শুরুর এক মাস আগে ইনস্টাগ্রামে একজন ব্যবহারকারী আপলোড করেছেন। ভিডিওটি পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে তাঁর প্যারাগ্লাইডিংয়ের বলে জানিয়েছেন তিনি। 

১০ মে ২০২৫ তারিখে শেয়ার করা একটি ফেসবুক ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়, "পাকিস্তানে ভারতীয় মহিলা পাইলট আটক।"

প্যারাসুটে নেমে আসা এক ব্যক্তির দিকে কিছু লোকের ছুটে যাওয়ার ভিডিওটি দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যকার চার দিনের সংঘাতের অবসান আনা যুদ্ধবিরতির কয়েক ঘন্টা আগে ছড়ানো হয় (আর্কাইভ লিংক)। 

নয়াদিল্লি পাকিস্তান সীমান্তে কিছু স্থাপনাকে “সন্ত্রাসী অবকাঠামো” দাবি করে বিমান হামলা চালানোর পর উভয় দেশ একে অন্যের ওপর পাল্টা-পাল্টি যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে উভয় পক্ষে ৭০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়।  

ভারত-শাসিত কাশ্মীরে এপ্রিলে একটি হামলায় ২৬জনকে হত্যাকারী মিলিট্যান্টদেরকে প্রতি ইসলামাবাদ মদত দিয়েছে বলে দাবি করেছিল ভারত। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। 

Image
২৫ জুন ২০২৫ তারিখে নেয়া অসত্য ফেসবুক পোস্টের স্ত্রিনশট

একই দাবিতে ভিডিওটি ফেসবুকে এখানেএখানে ছড়ানো হয়েছে। 

কিন্তু ভিডিওটি ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের এক মাসেরও বেশি সময় পূর্বে ধারণ করা হয়েছিল।

পাকিস্তানের প্যারাগ্লাইডার

অসত্যভাবে ছড়ানো ভিডিওটির কিফ্রেম নিয়ে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চে একই ফুটেজটি পাওয়া যায়, যা ২৬ মার্চ ইনস্টাগ্রামে প্রকাশিত হয়েছিল (আর্কাইভ লিংক)। 

প্যারাগ্লাইডিং হ্যাশট্যাগসহ ফুটেজটির ক্যাপশনে বলা হয়, "কেপিকের লোয়ার দির-এ অবতরণ"। 

লোয়ার দির পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের একটি জেলা। 

Image
অসত্যভাবে ছড়ানো ভিডিও (বামে) এবং মার্চ মাসের ইনস্টাগ্রাম ভিডিওর (ডানে) তুলনামূলক স্ক্রিনশট

ভিডিওটি পোস্টকারী শারজিল খট্টক ১০ মে ২০২৫ তারিখে নিজের ইনস্টাগ্রাম পেজে অন্য একটি ভিডিও পোস্ট করে বলেন যে, তিনি পাকিস্তানের একজন প্যারাগ্রাইডিং পাইলট এবং তার ফুটেজটি বিভ্রান্তিকরভাবে অনলাইনে ছড়িয়েছে (আর্কাইভ লিংক)। 

তাঁর পোস্টে বলা হয়, "আমার প্যারাগ্লাইডিং অবতরণের এক মাস পুরনো ভিডিওকে এখন স্থানীয়দের হাতে ভারতীয় পাইলট আটকের অসত্য দাবিতে ভুল ভাবে অনলাইনে ছড়ানো হচ্ছে। ভিডিওটি নিয়মিত প্যারাগ্লাইডিং ফ্লাইট ছিল এবং আমি নিরাপদ। আমি স্থানীয় এবং অবশ্যই সীমান্তের অপর প্রান্তের কোনও পাইলট নই"। 

তিনি আরও বলেন, "অপতথ্য না ছড়াই এবং সঠিক পথে আরও উঁচুতে ফ্লাই করি"।

এএফপি ভারত-পাকিস্তান সংকট ঘিরে ছড়ানো অন্যান্য অসত্য দাবি খণ্ডন করেছে এখানে। 

এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?

আমাদের সাথে যোগাযোগ