বিমানের ধ্বংসাবশেষের ফুটেজকে ভারত-পাকিস্তান সংকটের সাথে অসত্যভাবে জড়িয়ে প্রচার

মে ২০২৫ এ নিজেদের বিরোধপূর্ণ সীমান্তে পাল্টা-পাল্টি যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন এবং গোলা বিনিময় করেছে নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ। এ সময় বিভিন্ন পোস্টে একটি ভিডিও ছড়ানো হয়েছে, যেখানে ভিডিওটিকে পাকিস্তানে ভূপাতিত ভারতীয় যুদ্ধবিমানের ধ্বংসাবশেষ বলে অসত্যভাবে দাবি করা হয়েছে। তবে ভিডিওটি ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে প্রশিক্ষণ কর্মসূচির সময় পাকিস্তান বিমান বাহিনীর একটি বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার খবরে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। 

৭ মে ২০২৫ তারিখে ফেসবুকে ছড়ানো একটি ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়, "ভারতীয় যুদ্ধবিমান জানাজা হচ্ছে পাকিস্তানে।পাকিস্তানিরা আগুন নিভচ্ছে বালু দিয়ে"। 

ভিডিওটিতে একটি যুদ্ধবিমানের ধ্বংসাবশেষ ও পাঞ্জাবী ভাষায় কথা বলা কিছু লোককে বালি ও মাটি ছুঁড়ে জ্বলতে থাকা আগুন নেভানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়। 

পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুই প্রতিবেশীর মাঝে কয়েক দশকের মধ্যে  সবচেয়ে ভায়াবহ সহিংসতার ঘটনায় ভারত ও পাকিস্তান চার দিন ধরে তীব্র যুদ্ধে লিপ্ত হলে ভিডিওটি অনলাইনে ছড়ানো হয়। এ সময় যুদ্ধবিমান, ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোন এবং ভারী গোলা বর্ষণে উভয় পক্ষে ৭০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়। তবে ১০ মে যুদ্ধ বিরতি ঘোষণার মাধ্যমে সংঘাতের অবসান হয়(আর্কাইভ লিংক)। 

ভারত-শাসিত কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর বন্ধুকধারীরা ২২ এপ্রিল একটি হামলার চালালে সংঘাতটি ছড়িয়ে পড়ে। ওই হামলায় ইসলামাবাদ মদত দিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে নয়াদিল্লি। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। 

Image
৭ মে ২০২৫ তারিখে নেয়া অসত্য পোস্টের স্ক্রিনশট

একই ধরনের পোস্টে ভিডিওটি ফেসবুকে এবং ইনস্টাগ্রামে ছড়ানো হয়েছে। 

তবে ফুটেজটি সর্বশেষ সংঘাতের সময় বিধ্বস্ত ভারতীয় বিমানের নয়। 

প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত

অসত্যভাবে ছড়ানো ভিডিওটির কিফ্রেম নিয়ে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চে ১৬ এপ্রিল তারিখে অনলাইন সংবাদ মাধ্যম ই-টাইমস পাকিস্তান-এর একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে একই ফুটেজ পাওয়া যায় (আর্কাইভ লিংক)। 

ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, "ভেহারি শহরের কাছে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত," শহরটি পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের অংশ। 

Image
অসত্য পোস্ট (বামে) এবং ই-পাকিস্তানের প্রকাশিত ক্লিপের তুলনামূলক স্ক্রিনশট

১৬ এপ্রিল তারিখের দুর্ঘটনা নিয়ে নিজেদের একটি প্রতিবেদনেও ভিডিওটির একটি স্থিরচিত্র ব্যবহার করেছে পাকিস্তানি সংবাদ মাধ্যম  ডন (আর্কাইভ লিংক)। 

ডনের রিপোর্ট অনুসারে,  বিমানটি "প্রশিক্ষণরত ছিল, কিন্তু কারিগরি ত্রুটির কারণে বিধ্বস্ত হয়"।

এর আগেও এএফপি অনুরূপ পোস্ট খণ্ডন করেছে, যেখানে একই দুর্ঘটনার ভিডিও বিভ্রান্তিকরভাবে ছড়ানো হয়েছিল। এছাড়া, ভারত-পাকিস্তান সংকট সম্পর্কিত অন্যান্য অসত্য দাবি খণ্ডন করেছে এখানে। 

এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?

আমাদের সাথে যোগাযোগ

সম্পর্কিত নিবন্ধ