'লস এ্যাঞ্জেলেসে দাবানলের সময় মুসলিমদের আজান দেয়ার' অসত্য দাবিতে পুরনো ভিডিও প্রচার
- প্রকাশিত 31 জানুয়ারি 2025, 15:26
- 3 এক্স মিনিটে পড়ুন
- লেখক: এএফপি বাংলাদেশ
কপিরাইট © এএফপি ২০১৭-২০২৫। এই কন্টেন্টের যেকোন বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
১৩ জানুয়ারি ২০২৫ ফেসবুকে ছড়ানো একটি ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়, "আমেরিকার লজ এঞ্জেলস শহরে আগুন নিভাতে যখন সকল প্রযুক্তি ব্যর্থ, তখনই দাওয়াতে ইসলামি সেখানে আজান শুরু করেছে"।
দুই লাখ ৮৮ হাজার বারের বেশি ভিউ হওয়া ৩৬ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে মুসলিম পোশাক এবং হাই-ভিজিবিলিট জ্যাকেট পরিহিত একদল পুরুষকে এক সাথে আজান দিতে দেখা যায়। তাদের পেছনের দিকে ঘন ধোঁয়ার কুণ্ডলী এবং একটি অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রও দেখা যায়।
৭ জানুয়ারি দাবানল শুরুর পর থেকে লস অ্যাঞ্জেলেস অঞ্চলে অন্তত ২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৪০,০০০ একর এলাকা পুড়ে গেছে (আর্কাইভ লিংক)।
ডিরেক্টেড এনার্জি ওয়েপনস অথবা তথাকথিত "স্মার্ট সিটিজ" নির্মানের জন্য কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগিয়েছে এমন দাবিসহ এই দাবানল ঘিরে অনলাইনে ছড়ানো ভিত্তিহীন ষড়যন্ত্র খণ্ডন করে প্রতিবেদন করেছে এএফপি।
একই দাবিতে ফুটেজটি ফেসবুকে বাংলায় এখানে ও এক্সে এখানে এবং হিন্দিতে এখানে ছড়ানো হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীদের মন্তব্য থেকে বোঝা যায় যে তারা দাবিটি সত্য বলে বিশ্বাস করেন।
একজন ব্যবহারকারী লিখেন, "গাজাবাসীর ওপর হামলা বন্ধ করলে আল্লাহ্ মাফ করবেন ইনশাআললাহ"।
অন্য একজন লিখেন, "আল্লাহ চাইলে মাফ করবেন। ওই এলাকায় মসজিদ এবং মাদ্রাসার দরকার তাহলে এই বিপদ আর হবে না আল্লাহু আকবার আমিন"।
কিন্তু ক্লিপটি কয়েক বছর আগে পাকিস্তানে ধারন করা হয়েছিল।
২০২২ সালে পাকিস্তানের ভিডিও
ভিডিওটির কীফ্রেম ব্যবহার করে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চে দেখা যায় যে, একই ক্লিপটি ৩ জুন, ২০২২ তারিখে এক্স-এ প্রচার করা হয়েছিল (আর্কাইভ লিংক)।
ক্লিপের ক্যাপশনে বলা হয়েছে যে, পাকিস্তানের বৃহত্তম শহর করাচির একটি সুপারমার্কেটে আগুন লেগেছে।
ইসলামে নামাজের আজানের কথা উল্লেখ করে এতে ব্যঙ্গাত্মকভাবে বলা হয়েছে,"দলগত আজানের মাধ্যমে আগুন নেভানোর জন্য একটি পরীক্ষা চালানো হয়েছিল, তবে এটি কাজ করেনি।"
আরও কীওয়ার্ড অনুসন্ধানে ২০২২ সালের ১ জুন পাকিস্তানি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান সামা টিভির ভেরিফাইড ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায় (আর্কাইভ লিংক)।
ভিডিওটির শিরোনামে বলা হয়, "ব্রেকিং: করাচির ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে অগ্নিকাণ্ডের আপডেট - সামা টিভি - ০১ জুন ২০২২"।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, করাচির জেল চৌরঙ্গী ফ্লাইওভারের কাছে একটি বহুতল ভবনের বেসমেন্টের আগুন লেগেছে, ওই বেসমেন্টে একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ছিল।
সামা টিভির ভিডিওতে দেখা ভবনটির সাথে অসত্য ভিডিওটিতে দৃশ্যমান ভবনের মিলে পাওয়া যায়।
অসত্য ভিডিওতে দেখানো অবকাঠামো (বামে) এবং ১ জুন, ২০২২ তারিখে সামা টিভিতে আপলোড করা ক্লিপের (ডানে) মধ্যে যেসব মিল রয়েছে এএফপি কর্তৃক যেগুলো হাইলাইট করে একটি তুলনামূলক স্ক্রিনশট:
অগ্নিকাণ্ডের নিজে নিজেদের প্রতিবেদনে টাইমস অফ ইন্ডিয়াও ভিডিওটি ব্যবহার করেছে (আর্কাইভ লিংক)।
পাকিস্তানি গণমাধ্যমের অনুসারে, অগ্নিকাণ্ডে একজন নিহত এবং তিনজন আহত হয়েছেন (আর্কাইভ লিংক)।
এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?
আমাদের সাথে যোগাযোগ