দাবানলে বাড়ি অক্ষত থাকার ঘটনাটি হাওয়াইয়ের, লস এঞ্জেলসের নয়
- প্রকাশিত 19 জানুয়ারি 2025, 20:11
- 3 এক্স মিনিটে পড়ুন
- লেখক: এএফপি বাংলাদেশ
কপিরাইট © এএফপি ২০১৭-২০২৫। এই কন্টেন্টের যেকোন বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
গত ১২ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে বাংলা ভাষার এক ফেসবুক পোস্টে ছবিটি শেয়ার করে ক্যাপশন দেয়া হয়, "আমেরিকায় দাবানলে সব পুড়ে শেষ। কিন্তু এই বাড়িটি আগুনে পুড়ে নাই, কারণ কি জানেন? কারণ এই বাড়িটি একজন মুসলিমের, এই ঘরে পবিত্র কোরআন ছিল। সুবহানাল্লাহ।"
১২০০ এর অধিক শেয়ার হওয়া ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে, আগুনে ধ্বংস্তুপে পরিণত হওয়া একটি এলাকায় লাল রঙা ছাদের একটি বাড়ি অক্ষত অবস্থায় রয়েছে।
একই ছবি বাংলা ভাষায় ফেসবুকে এখানে ও এখানে শেয়ার করা হয়েছে। এছাড়াও ইংরেজি, হিন্দি এবং থাই ভাষাও ছবিটি পোস্ট করা হয়েছে। তবে ফিলিপিনো ভাষায় পোস্ট করা কিছু ক্যাপশনে বাড়ির মালিককে খ্রিষ্টান বলে দাবি করা হয়েছে।
লস এঞ্জেলসে ভয়াবহ দাবানলে অন্তত ২৪ জনের নিহত এবং ৯০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হওয়ার ঘটনার মধ্যেই ছবিটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়েছে (আর্কাইভ লিংক)।
স্থানীয় বাসিন্দা যখন এর পেছনের কারণ জানতে উদগ্রীব এবং সামাজিক মাধ্যমের অযাইকৃত ভিডিওতে যখন নানান ধরনের দাবি করা হচ্ছে তখন এই দাবানলের কারণ খুঁজে বের করতে অগ্নি বিশেষজ্ঞরা ধ্বংস্তুপের মধ্যে চিরুনী অভিযান চালাচ্ছেন।
অনেক সময় দাবানল ইচ্ছাকৃতভাবে লাগানো হলেও এটি পরিবেশের জীবনচক্রেরই একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
তবে অনলাইনে ছড়ানো আলোচ্য ছবিটি আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরে লাগা আগুনের ঘটনার নয়।
মাউয়ি দাবানল
গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে একই রকম একটি ছবি নিউইয়র্ক পোস্ট এবং বিবিসির প্রতিবেদনে পাওয়া গেছে (আর্কাইভ লিংক এখানে ও এখানে)।
ছবিটি মূলত এএফপির বিতরণ করা।
এএফপির আর্কাইভে ছবিটির ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, "২০২৩ সালে ১০ আগস্ট হাওয়াইয়ের লাহাইনা শহরের পশ্চিম মাউয়ি এলাকায় দাবানলে পুড়ে ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভবনগুলোর মাঝখানে অক্ষত থেকে যাওয়া লাল রঙা একটি ভবনের আকাশ থেকে তোলা ছবি।"
২০২৩ সালে আগস্টে হাওয়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গত একশো বছরে ইতিহাসে ভয়াবহতম দাবানলে অন্তত ১১৫ জন নিহত হন (আর্কাইভ এখানে)।
লাহিয়ানার ১২ হাজার বাসিন্দা সমৃদ্ধ পর্যটন শহরটি পুড়ে মানচিত্র থেকে নাই হয়ে যায় ওই ঘটনায়।
নিচে ফেসবুকে ছড়ানো ছবি (বামে) এবং এএফপির তোলা ছবির ( বামে) তুলনামূলক চিত্র দেয়া হলো:
দ্য লস এঞ্জেলস টাইমস পত্রিকা ডোরা এটওয়াটার মিল্লিকিনকে-- যিনি তার স্বামীর সাথে ঘরটির মালিক-- উদ্ধৃত করেছে যেখানে তিনি জানিয়েছে যে, তিনি আগুন লাগার কিছুকাল আগে তার ঘর সংস্কারের কাজ করেছিলেন। তবে ওইসময় আগুন থেকে রক্ষার বিষয়টি ওভাবে তার মাথায় ছিল না (আর্কাইভ লিংক)।
তারা ঘর সংস্কারের সময় আগের অ্যাসফল্ট ছাদ বদলে শক্ত ধাতুর তৈরি ছাদ ব্যবহার করেছেন এবং তাদের ঘরের পাশের জমা করা ডালপালাগুলো সরিয়ে দিয়েছিলেন। লস এঞ্জেলস টাইমস পত্রিকার প্রতিবেদনে এই সংস্কার কাজকে ঘরটির বেঁচে যাওয়ার পেছনের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এএফপি লস এঞ্জেলস দাবানল নিয়ে আরও অসত্য দাবি খণ্ডন করেছে এখানে ও এখানে।
এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?
আমাদের সাথে যোগাযোগ