যুক্তরাষ্ট্রের দাবানলে বিখ্যাত হলিউড সাইনবোর্ড পুড়ে যাওয়ার ছবিটি অসত্য
- প্রকাশিত 16 জানুয়ারি 2025, 09:31
- 4 এক্স মিনিটে পড়ুন
- লেখক: এএফপি বাংলাদেশ
- অনুবাদ এবং অভিযোজন Eyamin SAJID
কপিরাইট © এএফপি ২০১৭-২০২৫। এই কন্টেন্টের যেকোন বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
গত ৯ জানুয়ারি ২০২৫ একটি ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, "ক্যালিফোর্নিয়ার গ্রেট ফায়ার এখন বিখ্যাত হলিউড সাইনকেও গ্রাস করেছে"।
পোস্টটির দীর্ঘ ক্যাপশনে আরো বলা হয়, "এখন পর্যন্ত আমেরিকার ৯০০ বিলিয়ন ডলারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আগুন এখনো নিয়ন্ত্রনের বাইরে। ট্রাম্প বলেছিলো, ক্ষমতা গ্রহন পর পুরো গাজাকে নরকে পরিণত করবে। আমেরিকা আজ নরক। কারমা হিটস ব্যাক"।
আগুনের লেলিহান শিখায় লস অ্যাঞ্জেলেসের গ্রিফিথ পার্কের মাউন্ট লি-র উপরে অবস্থিত বিখ্যাত স্থাপত্যটি ছেঁয়ে গেছে এমন ছবি একই দাবিতে ফেসবুকে এখানে ও এখানে শেয়ার করা হয়েছে।
লস অ্যাঞ্জেলেসে দ্রুতগতিতে দাবানল ছড়িয়ে পড়ে কয়েকজনের মৃত্যু এবং হাজার হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ঘরবাড়ি ছেড়ে যখন পালাতে বাধ্য হচ্ছে তখন পোস্টটি অনলাইনে ছড়ানো হয়। ১০ জানুয়ারি চতুর্থ দিনের মতো এক বিশাল অগ্নিনির্বাপণ অভিযান চলমান রয়েছে। তবে দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, বড় ধরনের দাবানলের এখনো আশঙ্কা রয়েছে।
এক পর্যায়ে হলিউড হিলসের কিছু অংশে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়, তবে সেখানে আগে থেকেই কয়েকটি সড়কের লোকজনকে সরে যেতে বলা হয়েছিল। এসময় হেলিকপ্টার চড়ে ওপর থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণে পানি নিক্ষেপ করা হয়েছে।
তবে লস অ্যাঞ্জেলেসে এএফপির একজন সাংবাদিক নিশ্চিত করেছে যে, ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত ঐতিহাসিক হলিউডের স্মারক সাইনবোর্ড দগ্ধ হয়নি।
৯ জানুয়ারি এএফপি গাওয়ার স্ট্রিট এবং টেম্পল হিল ড্রাইভে কোন থেকে সাইনবোর্ডটির একটি ছবিও তুলেছে।
গত ৯ জানুয়ারি হলিউড সাইন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান হলিউড সাইন ট্রাস্টের চেয়ারম্যান জেফ জারিনাম ইমেইল যোগে এএফপিকে বলেন, নিরাপত্তার জন্য গ্রিফিথ পার্ক সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হলেও হলিউড সাইনের "কোন ক্ষতি হয়নি এবং এটি নিরাপদ"। একটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে সংস্থাটি জানায় যে আগুনের শিখার মধ্যে স্থাপত্তটির ছবিগুলো অসত্য (আর্কাইভ লিংক)।
হলিউড ওয়াক অফ ফেমের একজন প্রচারকও ছবিগুলো অসত্য বলে নিশ্চিত করেছেন।
আগুনের মধ্যে হলিউড সাইনের এমন বেশ কিছু ছবি গেটরিয়াল ল্যাবস নামে একটি ডিপফেক সনাক্তকরণ প্রতিষ্ঠান বিশ্লেষণ করেছে এবং ৯ জানুয়ারি ইমেইলের মাধ্যমে এএফপিকে জানিয়েছেন, এগুলো বানানো বলে মনে হচ্ছে, কিছু ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারও করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এগুলো যে অনির্ভরযোগ্য তার কিছু চিহ্ন ছবিগুলোতে রয়েছে।
একটি বিবৃতিতে ক্যালিফোর্নিয়া-বার্কলে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ এবং গেটরিয়েল ল্যাবসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা হ্যানি ফরিদ বলেন, "একটি নিভিড় পর্যবেক্ষণে অক্ষরের গঠন এবং আশপাশের অবকাঠামোসহ বিখ্যাত হলিউডের প্রতীকে স্পষ্ট কাঠামোগত অসঙ্গতি পাওয়া যায়" (আর্কাইভ লিংক)।
বাফেলো বিশ্ববিদ্যালয়ের মিডিয়া ফরেনসিক ল্যাবের পরিচালক সিওয়েই লিউ এএফপিকে জানান যে একটি ছবিতে প্রতীকটির অক্ষরের পিছনের কাঠামোগত বন্ধনীগুলি ত্রুটিপূর্ণভাবে সারিবদ্ধ এবং ল্যান্ডমার্কের নির্ভরযোর্গ ছবির তুলনায় ত্রুটিপূর্ণভাবে গঠিত (আর্কাইভ লিংক)।
উদাহরণ স্বরুপ দ্বিতীয় অসত্য ছবিটিতে সামাজিক মাধ্যম এক্স-র সাথে সংশ্লিষ্ট কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গ্রোকের একটি জলছাপ রয়েছে। ছবিটি প্রথম যিনি প্রকাশ করেছিলেন তিনি তার পরবর্তী পোস্টে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে বানানো হয়েছে বলে পরিষ্কার জানিয়েছেন।
অসত্য ছবির পাশাপাশি, দাবানল নিয়ে অসত্য বক্তব্যের বিষয়েও এএফপি প্রতিবেদন করেছে।
এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?
আমাদের সাথে যোগাযোগ