'বাংলাদেশে হিন্দু মন্দিরের নয়', মুসলিম মাজারে হামলার ভিডিও
- প্রকাশিত 30 ডিসেম্বর 2024, 13:12
- 3 এক্স মিনিটে পড়ুন
- লেখক: এএফপি বাংলাদেশ
কপিরাইট © এএফপি ২০১৭-২০২৫। এই কন্টেন্টের যেকোন বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
৩ ডিসেম্বর ফেসবুক পোস্টে ভিডিওটি শেয়ার করে ক্যাপশনে বলা হয়, "সকাল হতেই বাংলাদেশে হিন্দু মন্দির আক্রমণ, সরকারী মদতে"।
পোস্টের ভিডিওটিতে একদল লোককে লাঠি এবং ইট পাটকেল নিয়ে একটি অবকাঠামোকে ভাঙ্গতে দেখা যায়।
সুন্নি মুসলিমরা ইসলাম ধর্মে সবচেয়ে বড় সম্প্রদায় এবং বাংলাদেশের জনসংখ্যার বড় অংশ এই সম্প্রদায়ভুক্ত (আর্কাইভ লিংক)।
ছাত্র-নেতৃত্বাধীন আগস্ট বিপ্লবের পর থেকে বাংলাদেশে ধর্মীয় সম্পর্কে এক ধরনের অশান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আগস্ট বিপ্লব দীর্ঘ সময়ের স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রতিবেশি দেশ ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে।
২৫ নভেম্বর সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার দাবিতে বিক্ষোভ পরিচালনাকারী নব্য গঠিত হিন্দু সংগঠনের মুখপাত্র হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় (আর্কাইভ লিংক)।
চট্টগ্রামের একটি আলাদত তার জামিন আবেদন নাকচ করলে আদালতের বাহিরে পুলিশ ও তার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ দেখা দেয়।
সংঘর্ষকালীন সময় একজন আইনজীবীকে হত্যা করা হয়, যিনি মুসলিম ছিলেন। এরপর ২৯ নভেম্বর চট্টগ্রাম শহরে ৩টি মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে (আর্কাইভ লিংক)।
একই দাবিতে ভিডিওটি হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতে ফেসবুক ও এক্স ব্যবহারকারীরা-এ এখানে ও এখানে ছড়িয়েছেন, যেখানে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীদের ভিডিওটিকে মন্দির ধ্বংসের বলে বিশ্বাস করেছেন।
তবে ভিডিওটিতে দৃশ্যমান অবকাঠামোটি বাংলাদেশে একটি মুসলিম মাজারের।
মুসলিম মাজার
লাঠি দিয়ে অনুরূপ একটি অবকাঠামোর ওপর হামলার একই ধরনের একটি ভিডিও খুঁজে পেয়েছে এএফপি, যা ৩০ আগস্ট ২০২৪ ফেসবুকে শেয়ার করা হয়েছিল (আর্কাইভ লিংক)।
ভিডিওটির ক্যাপশনের বলা হয়, "হযরত বাবা আলি পাগলার পবিত্র মাজার শরীফ ভেঙ্গে ফেলা হচ্ছে"।
নিচে অসত্য পোস্টের ভিডিও (বামে) এবং ফেসবুকে শেয়ার করা ভিডিওটির (ডানে) তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেয়া হল:
ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম বিডিনিউজ২৪ একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। স্থানীয় ধর্মীয়ে নেতা আলী পাগলার মৃত্যুর পর তাঁর সম্মানে মাজারটি নির্মাণ করা হয়েছিল (আর্কাইভ লিংক)।
প্রতিবেদনটিতে অসত্য ভিডিওটিতে যে ধরণের দৃশ্য দেখা গেছে অনুরূপ দৃশ্যের একটি ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম হামলার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। পরে গ্রামবাসী এ ঘটনায় তাকে চাকরিচ্যুত করেছে।
নিচে অসত্য পোস্টের ভিডিও (বামে) এবং সংবাদ প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির (ডানে) মধ্যে যেসব মিল রয়েছে সেগুলো হাইলাইট করে একটি তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেয়া হল:
মাজার পরিচালনাকারী আলী পাগলার ছেলে ঈমান আলী গত ৯ ডিসেম্বর এএফপিকে জানায় যে, ভিডিওটিতে দৃশ্যমান স্থাপনাটি একটি মুসলিম মাজারের, এবং এটি কোন হিন্দু মন্দিরের নয়।
তিনি বলেন, ২৯ আগস্ট কাছের একটি মসজিদ থেকে একদল লোক "হঠাৎ মাজারের সম্পত্তি ভাংচুর করে"।
ঈমান আলী বলেন, মাজারে "ইসলামের নীতি বিরোধী" কার্যকলাপ হয় এমন অভিযোগ করেছে হামলাকারীরা।
এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?
আমাদের সাথে যোগাযোগ