বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলার নয়, ভারতীয় মন্দিরে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের ভিডিও
- প্রকাশিত 29 ডিসেম্বর 2024, 13:41
- 3 এক্স মিনিটে পড়ুন
- লেখক: এএফপি বাংলাদেশ
কপিরাইট © এএফপি ২০১৭-২০২৫। এই কন্টেন্টের যেকোন বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
২ ডিসেম্বর ফেসবুক পোস্টে একটি ভিডিও শেয়ার করে বলা হয়, "গতকাল বাংলাদেশে মুসলমানরা কালীবাড়ি অর্থাৎ কালী মন্দিরে হামলা চালিয়ে মা কালীর মূর্তি ও হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি ধ্বংস করে।"
এতে আরো বলা হয়, "আর মন্দিরের ভেতরে উপস্থিত হিন্দু ভক্তদের হত্যা করা হয়। ২০ জনেরও বেশি হিন্দু ধর্মাবলম্বী গুরুতর আহত হয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশে হিন্দু নিধনে সারা বিশ্ব নীরব।"
১২ হাজারবারের বেশি ভিউ হওয়া ভিডিওটিতে একদল লোককে একটি মূর্তিকে ভাঙ্গতে দেখা যায়।
মৃত্যু, ধ্বংস এবং কালের দেবী হিসেবে হিন্দুরা সাধারণত লাল ঠোটের উপর দিয়ে বেরিয়ে আসা দীর্ঘ জিহ্বা সমেত চার-বাহু বিশিষ্ট নীল রংয়ের নারী কালীর পূজা করে থাকে (আর্কাইভ লিংক)।
শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন অভ্যুত্থানে আগস্টে উৎখাত হওয়া স্বৈরাচারী নেতা শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি অনুমিত সমর্থনের কারণে বাংলাদেশে বিভিন্নস্থানে হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনার পর ভিডিওটি ফেসবুকে এখানে এবং ইনস্টাগ্রামে এখানে ছড়ানো হয়।
তবে পোস্টে বর্ণিত বাংলাদেশের মন্দিরে হিন্দু ভক্তদের কথিত গণহত্যা প্রকৃতপক্ষে ঘটেছে বলে কোন অফিসিয়াল প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।
পশ্চিমবঙ্গের ধর্মীয় অনুষ্ঠান
কীওয়ার্ডসহ ভিডিওটির কীফ্রেম দিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চে দেখা যায় যে, ফুটেজটি বাংলাদেশে নয় বরং ভারতে ধারণ করা হয়েছিল।
ভিন্ন একটি কোন থেকে নেয়া একই দৃশ্যের দীর্ঘ একটি ফুটেজ গত ২০২৪ সালের ২৭ নভেম্বর ফেসবুকে শেয়ার করা হয় (আর্কাইভ লিংক)।
দীর্ঘ ফুটেজের ক্যাপশনে বলা হয়, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সুলতানপুর গ্রামে হিন্দু দেবী কালীকে নিয়ে ধর্মীয় অনুষ্ঠান।
নিচে সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো ভিডিও (বামে) এবং ফেসবুকে ছড়ানো দীর্ঘ ফুটেজের (ডানে) তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেয়া হয়:
সুলতানপুর গ্রামের গুগল ম্যাপে কালী মন্দিরের জিওট্যাগ করা একটি ছবির সাথে দীর্ঘ ফুটেজের তুলনা করে এএফপি দৃশ্যটির অবস্থান নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছে (আর্কাইভ লিংক)।
নিচে ফুটেজটির দৃশ্য (বামে) এবং জিওট্যাগ ছবির (ডানে) মধ্যকার মিলগুলো হাইলাইট করে তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেয়া হল:
ভিডিওটি শেয়ার করে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার যে দাবি করা হয়েছে, ধর্মীয় অনুষ্ঠান আয়োজনকারী স্থানীয় সুলতানপুর কিরণময়ী পাঠাগার ক্লাবের সদস্য দেবাশীষ মন্ডল সেটি অস্বীকার করেছেন।
মন্ডল এএফপিকে বলেন, "এটি প্রতি ১২ বছর পর পর অনুষ্ঠিত হওয়া একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ধর্মীয় রীতি এবং এতে অনেক লোক অংশগ্রহন করে। এতে সাম্প্রদায়ীকতার কোন রেশ ছিল না।"
তিনি বলেন, "এই রীতির অংশ হিসেবে কালীর মূর্তি অনেক অংশে ভেঙ্গে পানিতে বিসর্জন করা হয়।"
মূর্তি বিসর্জন নিয়ে ২১ অক্টোবর প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলা সংবাদপত্র দৈনিক স্টেটসম্যান। প্রতিবেদনে ফুটেজে যে ব্যাকগ্রাউন্ড দেখা গেছে একই ধরনের ব্যাকগ্রাউন্ডসহ কালী দেবীর একটি মূর্তির ছবিও ছাপিয়েছে (আর্কাইভ লিংক)।
এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?
আমাদের সাথে যোগাযোগ