না, হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলায় ইসরায়েলি সেনাপ্রধান মারা যান নি

মধ্যপ্রাচ্যে বেড়ে চলা সংঘাত পরিস্থিতির মধ্যে পাল্টাপাল্টি গুলি বিনিময় করেছে ইসরায়েল এবং লেবানন ভিত্তিক মিলিট্যান্ট গ্রুপ হিজবুল্লাহ। তবে, ১৩ অক্টোবর ২০২৪ সামরিক ঘাঁটিতে হামলার পর ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর (আইডিএফ) প্রধান নিহত হওয়ার বিষয়ে সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো দাবিটি অসত্য। বরং ড্রোন হামলার পর হারজি হালেভি সামরিক ঘাঁটিটি পরিদর্শন করেছেন।

গত ১৪ অক্টোবর ২০২৪ একটি এক্স পোস্টে বলা হয়, "ব্রেকিং: অসমর্থিত রিপোর্ট যে হিজবুল্লাহ উন্নত ফাইবার-অপটিক ড্রোন ব্যবহার করে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর প্রধান স্টাফ হারজি হালেভিকে হত্যা করেছে।"

Image
২৩ অক্টোবর ২০২৪ এ নেয়া এক্স পোস্টের স্ক্রিনশট

ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলীয় শহর হাইফাতে একটি সামরিক প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলায় চারজন সেনা নিহত হওয়ার পর পোস্টটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়াতে শুরু করে।

একই দাবি এক্স-এ অন্যত্র এখানে ছড়ানো হয়েছে। বাংলা ভাষার পাশাপাশি দাবিটি ইংরেজি, স্প্যানিশ, ফরাসি, আরবি, তুর্কি, ইতালি, ইন্দোনেশিয়ান এবং কোরিয়ান ভাষায় ছড়ানো হয়েছে।

২০২৪ এর সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে ইরান সমর্থিত গ্রুপটির বিরুদ্ধে ইসরায়েলের অভিযান শুরুর পর বিনয়ামিনা শহরের কাছে ইসরায়েলি ঘাঁটিতে হিজবুল্লাহর হামলার ঘটনাটি সবচেয়ে মারাত্মক হামলার একটি।

ইসরায়েল বলেছে, নিজেদের উত্তর সীমান্ত নিরাপদ করতে এবং গত বছর থেকে রকেট হামলায় বাস্তুচ্যুত হওয়া লাখো মানুষকে নিরাপদে বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করতে তারা হিজবুল্লাহকে পিছু হটাতে চায়।

হিজবুল্লাহ জানিয়েছে যে ফিলিস্তিনি মিত্র হামাসের সাথে সংহতি প্রকাশ করে তারা ইসরায়েলের উপর হামলা চালিয়েছে। এর আগে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর হামাসের হামলার মাধ্যমে গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ শুরু হয়। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা যাচাই করে দেখেছে যে, লেবাননে ৬৯০,০০০ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে এএফপির তৈরি করা তালিকা অনুযায়ী, বন্দিদশায় হত্যাসহ ওই হামলায় ১,২০৬ জনের মৃত্যু হয়, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক।

হামাস পরিচালিত ওই ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক সামরিক আক্রমণে অন্তত ৪২,৪৩৮ মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগ  বেসামরিক নাগরিক। জাতিসংঘ এই তথ্যকে নির্ভরযোগ্য বলে আখ্যা দিয়েছে।

সামাজিক মাধ্যমের পোস্টে তাকে মৃত বলে দাবি করা হলেও হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলার কয়েক ঘন্টা পর ১৪ অক্টোবর ইসরায়েলের গোলানি ব্রিগেড সদস্যদের বিনয়ামিনা প্রশিক্ষণ ঘাঁটি পরিদর্শন করেছেন হালেভি।

পরিদর্শনকালে তিনি সৈন্যদেরকে বলেন, "আমরা একটি যুদ্ধের মধ্যে আছি, এবং নিজ ভূমিতে একটি প্রশিক্ষণ ঘাঁটিতে হামলা খুবই কঠিন এবং এর ফলাফল বেদনাদায়ক।"

আইডিএফ এর নেয়া ফুটেজ এবং ছবিতে হালেভিকে দেশটির অন্যান্য সামরিক সদস্যদেরকে নিয়ে ঘাঁটি এলাকার চারদিকে হাটতে দেখা যায় (আর্কাইভ এখানে এখানে)।

হামলায় নিহত সৈন্যদের সংখ্যা নিশ্চিত করে এক্স-এ একটি বিবৃতিও দিয়েছে আইডিএফ। যেখানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদেরকে নিহত সৈনদের নামের বিষয়ে জল্পনা বন্ধ করতে বলা হয়েছে (আর্কাইভ এখানে)।

এএফপি ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিয়ে অন্য আরো দাবি খণ্ডন করে প্রতিবেদন করেছে এখানে

এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?

আমাদের সাথে যোগাযোগ