জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের ভিডিও, ছাত্রলীগ নেত্রীকে নির্যাতনের নয়
- প্রকাশিত 19 সেপ্টেম্বর 2024, 14:12
- 2 এক্স মিনিটে পড়ুন
- লেখক: এএফপি বাংলাদেশ
কপিরাইট © এএফপি ২০১৭-২০২4। এই কন্টেন্টের যেকোন বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
গত ১৮ জুলাই ২০২৪ ফেসবুকের একটি পোস্টে একটি ভিডিও শেয়ার করে ক্যাপশনে বলা হয়, "জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিয় ছাত্রলীগের নেত্রী!"
ভিডিওটিতে একটি জায়গায় হাত পিছমোড়া করে বাঁধা এবং স্কচটেপ দিয়ে মুখ আটকে রাখা একজন তরুণীকে দেখা যায়।
ফেসবুকে শেয়ার করার পর থেকে ভিডিওটি ৪১৩,০০০ বার দেখা হয়েছে এবং ১৯,০০০ -র বেশি লাইক পেয়েছে।
সরকারি চাকুরিতে কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন আন্দোলন ব্যাপক আকার ধারণ করলে ভিডিওটি ছড়ানো হয়। আন্দোলনের তোপে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন (আর্কাইভ লিংক)।
হাত বাঁধা তরুণীর ভিডিও ক্লিপটি একই দাবিতে অন্যত্র ফেসবুকে এখানে এবং ইউটিউবে এখানে ছড়ানো হয়েছে।
একই ভিডিও সাম্প্রদায়িক উস্কানিতে ভারতে ফেসবুক ও এক্স এ শেয়ার করা হয়েছে।
তবে প্রকৃত ভিডিওটি ২০২৪ সালের মার্চ মাসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিবাদ কর্মসূচির, যা সম্প্রতিক মারাত্মক সংহিসতার অনেক আগের।
প্রতীকী প্রতিবাদের ভিডিও
গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চে ২০২৪ সালের ১৮ মার্চ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ২৪ এর অফিসিয়াল ইউটিউব এ্যাকাউন্টে একটি দীর্ঘ ভিডিও পাওয়া যায়, যার সাথে সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো পোস্টের মিল পাওয়া যায় (আর্কাইভ লিংক)।
'অবন্তিকা মৃত্যুর বিচারের দাবিতে মশাল মিছিল' শিরোনামের ৩.৫৮ মিনিটের ভিডিওটির ৪৫ সেকেন্ড এবং ১ মিনিট ১৯ সেকেন্ডে হাত বাঁধা এবং স্কচটেপ দিয়ে মুখ বন্ধ অবস্থায় একই তরুণীকে দেখা যায়।
নিচে অসত্য পোস্টে শেয়ার করা ভিডিও (বামে) এবং চ্যানেল ২৪ এর ইউটিউব ভিডিওটির (ডানে) তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেয়া হল:
অন্য একটি রিভার্স ইমেজ সার্চে জেএনইউ শর্ট স্টোরিজ নামের একটি ফেসবুকে ফেইজে ২০২৪ সালের ২৬ জুলাই শেয়ার করা একই ভিডিও পাওয়া যায় (আর্কাইভ লিংক)।
দীর্ঘ ক্যাপশনের একটি অংশে ওই তরুণীর পরিচয় সম্পর্কে বলা হয়, " মেয়েটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের একজন সাধারণ ছাত্রী। এই ভিডিওটি কিছুদিন আগে অবন্তিকা আত্মহ*ত্যার প্রতিবাদ স্বরূপ পথ নাটকের দৃশ্যপট!"
"কিন্তু কিছু মানুষ ভিডিওটিকে বর্তমান আন্দোলনের সময়কার উল্লেখসহ মেয়েটিকে ছাত্রলীগের নেত্রী হিসাবে উপস্থাপন করে ছড়িয়ে দেয় ফেসবুকে যা মুহুর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। মেয়েটি এসব দেখে ট্রমার মধ্য দিয়ে জীবন পার করছে। আজ যদি মেয়েটিও অবন্তিকার মতো আত্মহ*ত্যার পথ বেচে নেয় তার দায়ভার কে নিবে?"
ভিডিওটির ২২ সেকেন্ডের দিকে পেছনে একটি বাসের গায়ে 'জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যায়" লেখাও দেখা যায়।
২০২৪ সালের মার্চে গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্যাম্পাসে যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আত্মহত্যা করে মারা যাওয়া সহপাঠী অবন্তিকার মৃত্যুর বিচারের দাবিতে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা (আর্কাইভ লিংক)।
বাংলাদেশ বুলেটিনের জন্য ওই প্রতিবাদ সমাবেশ কাভার করা রিপোর্টার মোহাম্মদ সোহাগ রাসিফ এএফপিকে নিশ্চিত করেছেন যে, ভিডিওটি অবন্তিকার সমর্থনে প্রদর্শিত 'একটি পথনাট্যের অংশ'।
"ওই তরুণী ছাত্রলীগের নেত্রী নন," বলেন রাসিফ।
বাংলাদেশের অস্থিতিশীলতা নিয়ে অন্যান্য অসত্য দাবি খণ্ডন করে এএফপি প্রতিবেদন করেছে এখানে, এখানে ও এখানে।
এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?
আমাদের সাথে যোগাযোগ