সহিংসতার সময় আওয়ামী লীগ সমর্থকদের পালানোর ভিডিও, হিন্দুদের টার্গেট করে হামলার নয়
- প্রকাশিত 30 আগস্ট 2024, 09:23
- 2 এক্স মিনিটে পড়ুন
- লেখক: এএফপি বাংলাদেশ
কপিরাইট © এএফপি ২০১৭-২০২4। এই কন্টেন্টের যেকোন বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ইসলামিক দলের সাথে সম্পৃক্ত করে ২২শে জুলাই ২০২৪ ফেসবুকে একটি নৃশংস ভিডিও শেয়ার করে এর ক্যাপশনে বলা হয়, "হিন্দু হোস্টেল ঢাকা তে, জামাতের আক্রমণ এ কিভাবে হিন্দু ছাত্রগুলো কার্নিশ ধরে ঝুলছে দেখুন। কতজন উপর থেক পড়ে গেল দেখুন।"
৩,৩০০ বারের বেশি শেয়ার হওয়া ভিডিওটিতে এক দল লোককে ছয়-তলা ভবনের পাইপ বেয়ে নিচে নামতে, কাউকে ভবনের জানালার কার্নিশ ধরে ঝুলতে এবং দুইজনকে ভূমিতে পড়তে দেখা যায়।
সরকারি চাকুরিতে কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন আন্দোলনের সময় ভিডিওটি ছড়ানো হয়। আন্দোলনের তোপে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন (আর্কাইভ লিংক)।
শেখ হাসিনার পতনের পরের সপ্তাহে হিন্দু, খ্রিষ্টান ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর ২০০ বেশি হামার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ধর্মীয় অধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো (আর্কাইভ লিংক)।
বিক্ষোভ সম্পর্কে একই ধরনের ফেসবুক পোস্টে ভিডিওটি এখানে ও এখানে শেয়ার করা হয়েছে।
তবে ভিডিওটি ঢাকা শহরের নয় এবং হামলার ঘটনার সাথে ধর্মীয় কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
হাসিনাপন্থী নেতাকর্মীদের ওপর হামলা
নগরির পাঁচলাইশ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার তথ্য মতে ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামে, যা ঢাকা থেকে ২১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে অবস্থিত।
সন্তোষ কুমার চাকমা জানিয়েছেন যে, নগরির বেলাল মসজিদ এলাকার ওই ঘটনায় তার থানায় একটি মামলা হয়েছে।
তিনি গত ১৯ আগস্ট এএফপিকে বলেন, "ভবন থেকে যেসব লোককে লাফ দিতে এবং ঝুলে থাকতে দেখা গেছে, তারা আওয়ামী লীগে বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী।"
অসত্যভাবে ছড়ানো ক্লিপটি থেকে নেয়া কীফ্রেম ব্যবহার করে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চে গত ১৬ জুলাই একটি ফেসবুক পোস্টে প্রকাশিত একই ভিডিও পাওয়া যায় (আর্কাইভ লিংক)।
শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠনের প্রতি ইঙ্গিত করে পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়, "চট্টগ্রামে ছাদ থেকে যাদের ফেলে দেওয়া হইছে, সবাই ছাত্রলীগের কর্মী ছিল!"
চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আজিম রনি এএফপিকে জানিয়েছেন, তিনি ১৬ জুলাই সরকারপন্থী ওই গ্রুপটিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
তিনি বলেন, "ওই ঘটনায় যারা আহত হয়েছেন, তারা সবাই ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মী। এরমধ্যে অন্তত চারজন পদধারী নেতা। এটি কোন ধর্মীয় সংঘাত ছিল না।”
ফাইনান্সিয়াল এক্সপ্রেস পত্রিকার ১৭ তারিখের প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই হামলার সময একাধিক ব্যক্তিকে ভবন থেকে ফেলে দেয়া হয় কিংবা পড়ে গিয়েছে (আর্কাইভ লিংক)।
নিচে অসত্যভাবে শেয়ার করা ভিডিও (বামে) এবং ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসে প্রকাশিত একই ভবনের ছবির (ডানে) তুলনামূলক স্ত্রিনশট দেয়া হল:
ডেইলি অবজারভার পত্রিকাও ঘটনাটি নিয়ে প্রতিবেদন করেছে (আর্কাইভ লিংক)।
বাংলাদেশের অস্থিতিশীলতা নিয়ে ছড়ানো একাধিক অসত্য দাবি খণ্ডন করে প্রতিবেদন করেছে এএফপি।
এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?
আমাদের সাথে যোগাযোগ