বিকৃত ফুটেজটি 'বাংলাদেশের পুলিশের নির্মমতা দেখে সংবাদ উপস্থাপিকার কান্নার' নয়
- প্রকাশিত 22 আগস্ট 2024, 13:03
- 3 এক্স মিনিটে পড়ুন
- লেখক: এএফপি বাংলাদেশ
কপিরাইট © এএফপি ২০১৭-২০২4। এই কন্টেন্টের যেকোন বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
গত ১৮ জুলাই ২০২৪ ভিডিওটিসহ একটি ফেসবুক পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়, "বিদেশি সাংবাদিকরা বাংলাদেশের নিউজ দেখে কান্না করে, আর বাংলাদেশের হলুদ সাংবাদিকরা গর্তে ঢুকে আছে"।
ভিডিওটি ২৬৩,০০০ বারের বেশি দেখা হয়েছে।
সরকারি চাকুরিতে কিছু নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর জন্য কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময়ে শুরু হওয়া বিক্ষোভ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলের সবচেয়ে ভায়াবহ অস্থিরতায় পরিণত হয়।
৫ আগস্ট ঢাকার রাজপথে বিক্ষোভকারী জনতার স্রোত নেমে এলে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে কারাগারে প্রেরণসহ ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযুক্ত শেখ হাসিনা প্রতিবেশী দেশ ভারতে পালিয়ে যান।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার তিন দিন পর শান্তিতে নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতা হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।
বিক্ষোভ সম্পর্কে ভিডিওটি অসত্য ফেসবুক পোস্টে এখানে ও ইউটিউবে এখানে ছড়ানো হয়।
এএফপি ফ্যাক্ট চেক একই ধরনের একটি ভিডিও আরবিতে যাচাই করে প্রতিবেদন করেছে।
মূল ফুটেজে ২০১৯ সালে সিরিয়ার সংকট নিয়ে একজন উপস্থাপিকাকে কাঁদতে দেখা যায়।
সিরিয়ার প্রতিবেদন
গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চে সিরিয়ান ওরিয়েন্ট টিভির ইউটিউব একাউন্টে ২০১৯সালের ২৫ জুলাই প্রকাশিত একই ধরনের একটি ভিডিও পাওয়া যায় (আর্কাইভ লিংক)।
এতে একই সংবাদ উপস্থাপিকাকে দেখা গেলেও ফ্রেমের ভেতরে ভিন্ন ফুটেজ দেখা যাচ্ছে।
আরবি ভাষার পোস্টের অনুবাদে বলা হয়, "যেই ছবি ওরিয়েন্ট টিভির উপস্থাপিকাকে কাঁদিয়েছে: সে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে এবং অনুষ্ঠানটির সরাসরি সম্প্রচার বন্ধ করা হয়"।
মূল ভিডিওতে উপস্থাপিকা ডালিন মেহরাতকে সিরিয়ার উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে সরকারি বাহিনীর বোমা হামলার খবর পড়ার সময় কাঁদতে দেখা যায়।
ওই সময় জিহাদীদের শক্ত ঘাঁটিগুলো পুনরুদ্ধারের লক্ষে একটি হিংস্র অভিযান শুরু করে দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব শহরে হামলা চালায় সিরিয়া ও তার মিত্র রাশিয়া।
নিচে অসত্য পোস্টের ভিডিও (বামে) এবং ওরিয়েন্ট টিভির মূল ফুটেজের (ডানে) তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেয়া হল:
বাংলাদেশের ফুটেজ
গুগলে অন্য একটি রিভার্স ইমেজ সার্চে দেখা যায় যে, মেহরাতের পেছনের স্ক্রিনে ডিজিটালি যোগ করা ফুটেজটি বাংলাদেশে ধারণ করা।
ফুটেজটি বাংলাদেশি চ্যানেল যমুনা টেলিভিশনের ২০২৪ সালের ১৬ জুলাইয়ের একটি ভিডিওর এই অংশে দেখা যায় (আর্কাইভ লিংক)।
ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, "রংপুরে পুলিশের অ্যাকশন; কোটা আন্দোলনে যা হচ্ছে"।
নিচে অসত্য পোস্টে শেয়ার করা ফুটেজের (বামে) এবং যমুনা টিভির ইউটিউব পেজে শেয়ার করা ভিডিওটির (ডানে) তুলনামুলক স্ক্রিনশট দেয়া হল:
যমুনা টিভির ফুটেজটি (বামে) রংপুরে ধারণ করা হয়েছে বলে গুগল ম্যাপের স্ট্রিট ভিউতে ক্রস-রেফারেন্সিং এর মাধ্যমে (ডানে) নিশ্চিত হয়েছে এএফপি (আর্কাইভ লিংক)।
এএফপির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৬ জুলাই বিক্ষোভকারী ক্ষার এবং সরকারপন্থী ছাত্র সংগঠনের মধ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়লে সমাবেশকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করলে উত্তরাঞ্চলীয় শহর রংপুরে একজনসহ অন্তত ৬ জন নিহত হয়।
এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?
আমাদের সাথে যোগাযোগ