হিন্দু মন্দিরে নয়, এটি ছাত্র বিক্ষোভ চলাকালে রেস্তোরাঁয় আগুন দেয়ার ভিডিও
- প্রকাশিত 21 আগস্ট 2024, 13:41
- 2 এক্স মিনিটে পড়ুন
- লেখক: এএফপি বাংলাদেশ
কপিরাইট © এএফপি ২০১৭-২০২4। এই কন্টেন্টের যেকোন বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
গত ৭ আগস্ট ২০২৪ ইউটিউবে আপলোড করা একটি ভিডিও পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়, "বাংলাদেশে মন্দির পুরিয়ে দিলো দুরবিত্তরা। খারাপ অবস্থা বাংলাদেশে।"
সরকারি চাকুরিতে কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে সামাবেশের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা গত জুলাই মাসে বাংলাদেশে বিক্ষোভ শুরু করে। কিন্তু দ্রুত এই আন্দোলন প্রাণঘাতি অস্তিতিশীলতায় রূপ নেয় যেখানে তৎতকালীন প্রধানমন্ত্রীল পদত্যাগ দাবি করা হয়।
৫ আগস্ট গণবিক্ষোভে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতাচ্যুতির একদিন পর হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনায় বাংলাদেশে মানবাধিকার সংগঠন এবং কূটনীতিকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এএফপির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের মতে 'দুর্বৃত্তরা' অন্তত ১০টি হিন্দু মন্দির হামলা করেছে।
হাসিনার পতনের পর হিন্দুদের কিছু ঘরবাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও হামলা করা হয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে সরকার পতনের পর নিরাপত্তা পরিস্থিতি ক্রমাগত উন্নতি হলেও, শেখ হাসিনার সমর্থক এবং তার আওয়ামী লীগ দলের কর্মকর্তাদের উপর প্রতিশোধমূলক হামলার খবর পাওয়া গেছে।
একই দাবিতে ভিডিওটি প্রতিবেশী দেশ ভারতে ফেসবুক ও এক্স-এ ছড়ানো হয়েছে।
ভিডিওতে দৃশ্যমান ভবনটি কোন মন্দিরের নয় বলে স্থানীয় একজন পুলিশ কর্মকর্তা এএফপিকে নিশ্চিত করেছেন।
গত ১৪ আগস্ট কলারোয়া পুলিশ স্টেশনের অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শাহীন এএফপিকে বলেন, "এটি উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান কাজি আসাদুজ্জামান শাহজাদার মালিকানাধীন একটি রেস্তোরাঁ।"
বিক্ষোভের ফুটেজ
গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চে গত ৭ আগস্ট ২০২৪ এ স্থানীয় সংবাদমাধ্যম আজকের পত্রিকার একটি প্রতিবেদনে ভিডিওটির একটি স্ক্রিনশট পাওয়া যায় (আর্কাইভ লিংক)।
প্রতিবেদনটির বাংলা শিরোনামে বলা হয়, "বিভিন্নস্থানে সংখ্যালঘুদের বাড়ি-দোকান-মন্দিরে হামলা, ছড়িয়েছে গুজবও'।
প্রতিবেদনে বলা হয়, "বিক্ষোভ চলাকালে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর সাতক্ষীরায় রাজ প্রাসাদ রেস্টুরেন্ট ও রিসোর্টে আগুন দেয়া হয়। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা কাজি আসাদুজ্জামান শাহজাদা রেস্তোরাঁটির মালিক বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।"
প্রতিবেদনটিতে ৬ আগস্ট ২০২৪ একটি ফেসবুক পেইজের লাইভ-স্ট্রিমিং ভিডিওর একটি স্ক্রিনশটও ব্যবহার করা হয় (আর্কাইভ লিংক)।
নিচে অসত্য পোস্টে শেয়ার করা ক্লিপের (বামে) এবং ফেসবুকে লাইভ-স্ট্রিম ভিডিওর (ডানে) তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেয়া হল:
ভিডিওটি যখন অসত্য দাবিতে ছড়াতে শুরু করে, তখন ওই ভবনটি কোন হিন্দু মন্দির নয় বরং একটি রেস্তোরাঁ ছিল বলে ফেসবুক পেইজটিতে স্পষ্ট করা হয় (আর্কাইভ লিংক)।
মালিকের ধর্মীয় পরিচয়ের কারণে ভবনটিতে হামলা করা হয়নি বলে এএফপিকি নিশ্চিত করে স্থানীয় বাসিন্দা নাদিম হোসাইন বলেন, এটি একটি রেস্তোরাঁ ছিল।
তিনি এএফপিকে বলেন, "যে রেস্তোরাঁটি মন্দির হিসেব অসত্য দাবিতে ছড়ানো হয়েছে আমার বাড়িট ঠিক তার সামনেই। শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা এবং একজন মুসলীম এই রেস্তোরাঁর মালিক। যে কারণে আন্দোলনরত জনতা ভবনটিতে আগুন দেয়, এখানে কোন সাম্প্রদায়িক সংশ্লিষ্টতা ছিল না'।
এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?
আমাদের সাথে যোগাযোগ