সিমুলেশন ভিডিও ক্লিপকে অসত্যভাবে গাজা পরিস্থিতির সাথে সংশ্লিষ্ট করে প্রচার
- প্রকাশিত 16 নভেম্বর 2023, 14:09
- 3 এক্স মিনিটে পড়ুন
- লেখক: এএফপি বাংলাদেশ
কপিরাইট © এএফপি ২০১৭-২০২4। এই কন্টেন্টের যেকোন বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
গত ৮ নভেম্বর ফেসবুকে এখানে আপলোড করা একটি ভিডিও পোস্ট করে ক্যাপশন দেয়া হয়েছে, "হামাস আগেই জানিয়েছিলো গাজা উপত্যকায় ইসরায়েল স্থল অভিযান চালালে তাদের জন্য এই ভুখন্ড কবরস্থানে পরিনত হবে। আলহামদুলিল্লাহ একের পর এক ট্যাংক ধংস করে দিচ্ছে হামাস বাহীনীরা। ইনশাআল্লাহ ফিলিস্তিনের বিজয় সুনিশ্চিত।"
৯৪৮ বারের বেশি ভিউ হওয়া ২ মিনিট ২০ সেকেন্ডের ভিডিও ফুটেজটিতে আর্টিলারি ফায়ার আঘাত করার পর একটি সামরিক ট্যাঙ্ককে আগুনে জ্বলতে দেখা যায়।
কয়েক সপ্তাহের বিমান হামলার পর ইসরায়েলের স্থল বাহিনী গাজা উপত্যকায় অভিযান শুরুর পর থেকে ভিডিও ফুটেজটি ছড়াতে শুরু করে।
গত ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলের দক্ষিণ সীমান্তে ভয়াবহ এক হামলা চালালে চলমান এ সংঘাতের সূচনা হয় (আর্কাইভ লিংক)। ইসরায়েলের কর্মকর্তাদের মতে, ওই হামলায় ১,৪০০ এর বেশি মানুষ নিহত হয়েছে এবং ২৪০ জনের বেশি লোককে বন্দী করে নিয়ে গেছে হামাস।
ওই আক্রমণের পর ইসরায়েল বিরতিহীনভাবে গাজায় বোমা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে এবং সৈন্য ও ট্যাঙ্কসহ স্থল বাহিনী পাঠিয়ে গাজা উপত্যকাকে ঘেরাও করে কার্যত অঞ্চলটিকে দ্বিখণ্ডিত করে ফেলেছে।
হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলায় এখন পর্যন্ত ১০ হাজার লোক প্রাণ হারিয়েছেন (আর্কাইভ লিংক)।
তবে ভিডিওটি হামাস মিলিটেন্ট কর্তৃক ইসরায়েলের সামরিক ট্যাঙ্ক বিধ্বস্ত করার নয়।
ডিজিটালি তৈরি ক্লিপ
ভিডিও ভেরিফিকেশন টুল ইনভিড-উইভেরিফাই ব্যবহার করে ক্লিপটি থেকে কী-ফ্রেইম নিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে এএফপি ফ্যাক্ট চেক দেখেছে একই ফুটেজ ইউটিউব গত ১৯ অক্টোবর আপলোড করা হয়েছে (আর্কাইভ লিংক)।
'পিআরও এলএলআর' নামে পরিচিত ইউটিইউব চ্যানেলটি নিয়মিতভাবে যুদ্ধের সিমুলেটেড বিভিন্ন ভিডিও আপলোড করে থাকে।
১৯ অক্টোবর আপলোড করা ভিডিও ক্লিপটির ক্যাপশনে বলা হয়, "১০ মিনিট আগে! হিজবুল্লাহর নিক্ষেপ করা মিসাইল সীমান্তে ইসরায়েলের ট্যাঙ্ক বহরে আঘাত করলো।"
নীচে বিভ্রান্তিকর ফেসবুক পোস্টের ভিডিও (বামে) এবং ইন্দোনেশিয়া ভিত্তিক ইউটিউব ভিডিওর (ডানে) তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেয়া হল:
তবে ইন্দোনেশিয়া ভিত্তিক ওই ইউটিউব চ্যানেল লিখেছে যে, ক্লিপটি 'ভার্চুয়াল গেম সিমুলেশন' এবং 'বোহেমিয়া ইন্টারঅ্যাকটিভ এ.এস কন্টেন্ট' দিয়ে তৈরি। চ্যানেলটি একই ধরনের ক্লিপ এখানে এবং এখানে প্রকাশ করেছে।
বোহেমিয়া ইন্টারঅ্যাকটিভ হচ্ছে যুদ্ধ ভিত্তিক ভিডিও গেম এআরএমএ ৩'র নির্মাতা। ভিডিওটির ক্যাপশনে 'এআরএমএ গেম প্লে ভিডিও' দেখা যায়।
ভিডিওর দৃশ্যগুলো সাধারণত বৈশ্বয়িক বিভিন্ন সংঘাতের সাথে সম্পৃক্ত করে বিভ্রান্তিকর দাবিতে বিভিন্ন সময়ে ছড়ানো হয়েছে। তেমন কিছু দাবি এএফপি ফ্যাক্ট চেক ইতোমধ্যে এখানে, এখানে এবং এখানে যাচাই করেছে। এছাড়া সম্প্রতি গাজা যুদ্ধের সাথে সম্পৃক্ত করেও ছড়ানো হচ্ছে (এখানে, এখানে এবং এখানে)।
গত অক্টোবরে চেক প্রজাতন্ত্র ভিত্তিক বোহেমিয়া ইন্টারঅ্যাক্টিভ একটি ব্লগে লিখেন যে, "আরমা ৩ আধুনিক যুদ্ধের সংঘাতগুলিকে যেভাবে বাস্তবসম্মত উপায়ে সিমুলেট করে তা প্রশংসনীয় হলেও, এটিকে বাস্তব জীবনের যুদ্ধের ফুটেজ হিসাবে ভুল বুঝা কিংবা যুদ্ধের প্রোপাগান্ডা হিসেবে ব্যবহারের বিষয়ে আমরা অবশ্যই সন্তুষ্ট নই (আর্কাইভ লিংক)।"
ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে নতুন করে শুরু হওয়া এই যুদ্ধ অনলাইনে বিভ্রান্তিকর তথ্যের একটি জোয়ার তৈরি করেছে। এ বিষয়ে আমাদের কভারেজ দেখতে পারেন এখানে।
এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?
আমাদের সাথে যোগাযোগ