পুলিশের হাতে আটক এক ছাত্রের ভিডিওকে নিহত দিপু চন্দ্র দাসের ‘শেষ মুহূর্ত’ হিসেবে অসত্যভাবে প্রচার
- প্রকাশিত 30 ডিসেম্বর 2025, 12:30
- 2 এক্স মিনিটে পড়ুন
- লেখক: Akshita KUMARI, Eyamin SAJID, এএফপি ইন্ডিয়া, এএফপি বাংলাদেশ
- অনুবাদ এবং অভিযোজন Rasheek MUJIB
সম্প্রতি ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দিপু চন্দ্র দাস নামে সংখ্যালঘু এক হিন্দু পোশাকশ্রমিকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। হামলার ভিডিওটি অনলাইনে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং প্রতিবেশী দেশ ভারতে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। কিন্তু এক ব্যক্তিকে কয়েকজন পুলিশ সদস্য টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাওয়ার ফুটেজটি দিপু চন্দ্র দাসের শেষ মুহূর্তের নয়। প্রকৃতপক্ষে ক্লিপটি দীপু চন্দ্র দাসের হত্যাকাণ্ডের এক মাস আগেই প্রকাশিত হয়েছিল। এছাড়া পুলিশ এএফপিকে জানিয়েছে, ভিডিওর লোকটি আসলে একটি কলেজ ছাত্র, যাকে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল।
২৫ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে ছড়ানো একটি ফেসবুক রিলের ক্যাপশনে বলা হয়, “দিপু চন্দ্র দাস বাংলাদেশী পুলিশের কাছে বারবার আবেদন করেছিল তারপরেও তার শেষ রক্ষা হলো না।”
পোস্টের সাথে ছড়ানো ভিডিওতে একদল পুলিশ সদস্যকে একটি ভিড়ের মধ্যে দিয়ে এক ব্যক্তিকে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
ভিডিওটির উপরের ডান কোণে ১৮ ডিসেম্বর ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ময়মনসিংহ জেলায় গণপিটুনিতে নিহত হিন্দু পোশাকশ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসের একটি ছবিও জুড়ে দেয়া হয় (আর্কাইভ লিংক)।
তবে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন জানিয়েছে, ঘটনার সাথে ধর্ম অবমাননার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং দাসকে হত্যার ঘটনায় তাঁরা ইতোমধ্যে দশজনকে গ্রেপ্তার করেছে (আর্কাইভ লিংক)।
ঘটনাটি বাংলাদেশ ও প্রতিবেশী দেশ ভারতে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছে। ভারতীয় কর্মকর্তারা বাংলাদেশে সকল সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর সুরক্ষার দাবি জানিয়েছেন (আর্কাইভ লিংক)।
দিপু চন্দ্র দাসের কথিত শেষ মুহুর্তের ভিডিও হিসেবে অন্যত্র ফেসবুক ও এক্স-এ ছড়ানো হয়।
কিন্তু ভিডিওর ব্যক্তিটি দিপু চন্দ্র দাস নন বলে ২৮ ডিসেম্বর এএফপিকে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার মাসুদ আলম।
আলম বলেন, “আমার সহকর্মী পুলিশ সদস্যরা তাকে একজন বিক্ষোভকারী ভেবে ধরেছিল। কিন্তু ঢাকা কলেজের একজন ছাত্র জানতে পেরে আমরা তাকে ছেড়ে দেই।”
অসত্যভাবে ছড়ানো ভিডিওটির কিফ্রেম ব্যবহার করে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চে দেখা যায় একই ভিডিও দাস হত্যার এক মাস আগেই সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছিল।
দৈনিক ভোরের কাগজ একই ভিডিও তাদের ফেসবুক ও ইউটিউব পেজে ১৮ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে “কি হয়েছিলো ঢাকা কলেজের এই শিক্ষার্থীর সাথে?” ক্যাপশনে প্রকাশ করেছিল (আর্কাইভ লিংক)।
এনপিবি নিউজ নামে অন্য একটি অনলাইন মিডিয়ার ফেসবুক পেজ ভিডিওটির একটি দীর্ঘ সংস্করণ শেয়ার করেছে। ভিডিওতে লোকটি বারবার নিজেকে ঢাকা কলেজের ছাত্র এবং বিক্ষোভের সাথে জড়িত নয় বলে দাবি করতে দেখা যায় (আর্কাইভ লিংক)।
ভিডিওর এক পর্যায়ে তিনি নিজেকে আব্দুল মোমিন হিসেবে পরিচয় দেন। এছাড়া তার জার্সির সামনে ঢাকা কলেজের লোগো ও পেছনে ‘মোমিন’ শব্দ লেখা ছিল।
কিওয়ার্ড অনুসন্ধানে প্রথম আলোর ১৭ নভেম্বর তারিখের একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবনের অবশিষ্ট অংশ ভেঙে ফেলতে যাওয়া বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে (আর্কাইভ লিংক)।
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পরে ধানমন্ডিতে বিক্ষোভকারীদের সাথে দায়িত্বরত পুলিশের এই সংঘর্ষ ঘটে।
এএফপি বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা সম্পর্কিত অন্যান্য অসত্য দাবি খণ্ডন করেছে এখানে।
কপিরাইট © এএফপি ২০১৭-২০২৫। এই কন্টেন্টের যেকোন বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?
আমাদের সাথে যোগাযোগ