সেতুর দাবিতে আন্দোলনকারীদের নদী পার হওয়ার ভিডিওটি এআই দিয়ে তৈরি

বাংলাদেশের পতাকা এবং বিভিন্ন ব্যানার নিয়ে সাঁতার কেটে কিছু লোকের নদী পার হওয়ার ভিডিওটি কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তা তথা এআই দিয়ে তৈরি। যদিও সামাজিক মাধ্যমের পোস্টে ভিডিওটিকে ভোলা-বরিশাল সেতুর দাবিতে নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি আন্দোলনকারীদের তেঁতুলিয়া নদী পার হওয়ার দৃশ্য বলে দাবি করা হয়েছে। তবে ভিডিওটিতে একাধিক দৃশ্যগত অসঙ্গতি রয়েছে, যা এআই দিয়ে তৈরির ইঙ্গিত দেয়। এছাড়া ভিডিওটি বিক্ষোভের প্রকৃত ফুটেজ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। 

১৫ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে একটি ফেসবুক পোস্টে ছড়ানো ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়, “ভোলা–বরিশাল সেতুসহ পাঁচ দফা দাবিতে সাহসী ছাত্র যুবক তেঁতুলিয়া নদী পেরিয়ে ঢাকার পথে লংমার্চ......।”

ভিডিওটিতে একদল লোককে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা এবং ব্যানার নিয়ে একটি নদী পার হতে দেখা যায়।

মূল ভূখণ্ডের সাথে সড়ক যোগাযোগের জন্য সেতু নির্মাণের দাবিতে ১৪ নভেম্বর দ্বীপ জেলা ভোলা থেকে কিছু লোক “মার্চ  টু ঢাকা” কর্মসূচির অংশ হিসেবে তেঁতুলিয়া নদী সাঁতরে পার হওয়ার পর ভিডিওটি অনলাইনে ছড়ানো হয়(আর্কাইভ লিংক)।

একই দাবিতে আন্দোলনকারীরা রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ শাহবাগ মোড়ে অবরোধ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে(আর্কাইভ লিংক).

Image
৮ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে এএফপির যোগ করা ক্রস চিহ্নসহ অসত্য পোস্টের স্ক্রিনশট

ভিডিওটি একই ধরনের পোস্টে অন্যত্রফেসবুকে ছড়ানো হয়। 

পোস্টের একটি মন্তব্যে বলা হয়, “আবেগ ভালো বেশি হলে ক্ষতি। একজনের কিছু হলে এর দায় কেউ নিবে না।”

অপর একজন বলেন, “ভোলা বরিশাল সেতু আমাদের প্রানের দাবি।”

কিন্তু ফুটেজটির একটি নিবিড় বিশ্লেষণে বেশ কিছু দৃশ্যগত অসঙ্গতি পাওয়া যায়, যা ভিডিওটিকে এআই দিয়ে তৈরির ইঙ্গিত দেয়। 

ভিডিওটির এক পর্যায়ে একজন ব্যক্তির আচমকা তিনটি হাত দেখা যায়। অন্য এক দৃশ্যে কেউ না ধরলেও একটি পতাকাকে ভেসে থাকতে দেখা যায়। এছাড়া সাদা পতাকায় কিছু দুর্বোধ্য লেখা দেখা যায়। 

Image
এএফপির চিহ্নিত করা দৃশ্যগত অসঙ্গতিসহ অসত্য পোস্টের স্ক্রিনশট

এআই ভিডিও সনাক্তকারী টুল হাইভ মডারেশন ভিডিওটি “এআই দিয়ে তৈরি কিংবা ডিপফেক” হওয়ার ৯৯ দশমিক ৫ শতাংশ সম্ভাবনা নির্ধারণ করেছে (আর্কাইভ লিংক)।

Image
হাইভ মডারেশন টুলের ফলাফলের স্ক্রিনশট

পরবর্তীতে কিওয়ার্ড  সার্চে ১৪ নভেম্বর একাত্তর টেলিভিশনের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত বিক্ষোভকারীদের প্রকৃত ফুটেজটি পাওয়া যায়। ফুটেজটিতে স্বল্প সংখ্যক বিক্ষোভকারীকে কয়েকটি পতাকাসহ দেখা যায়(আর্কাইভ লিংক)। অংশগ্রহণকারীদেরকে অসত্য পোস্টের মতো সারিবদ্ধ দেখা যায় না। 

Image
অসত্যভাবে ছড়ানো পোস্টের (বামে) এবং একাত্তর টেলিভিশনের প্রকাশিত ভিডিওর(ডানে) তুলনামূলক স্ক্রিনশট

এর আগেও এআই দিয়ে তৈরি কনটেন্টকে বাস্তব ঘটনা হিসেবে বিভ্রান্তিকরভাবে ছড়ানো অন্যান্য দাবি খণ্ডন করেছে এএফপি। 

এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?

আমাদের সাথে যোগাযোগ