
গাজা যুদ্ধের ফুটেজকে কাশ্মীর হামলার সাথে অসত্যভাবে যুক্ত করে প্রচার
- প্রকাশিত 15 মে 2025, 08:50
- 3 এক্স মিনিটে পড়ুন
- লেখক: এএফপি বাংলাদেশ
- অনুবাদ এবং অভিযোজন Eyamin SAJID
কপিরাইট © এএফপি ২০১৭-২০২৫। এই কন্টেন্টের যেকোন বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
বোমা হামলা কবলিত এলাকা থেকে লোকজনের পালানোর একটি ভিডিও ৭ মে ২০২৫ তারিখে একটি ফেসবুক পোস্টে শেয়ার করে বলা হয়, "পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা! সম্ভবত শুরু হলো আরও একটি যুদ্ধ।"
ভারত তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের ওপর ৭ মে ২০২৫ তারিখে এক মারাত্মক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে পাকিস্তানের ৩১জন বেসামরিক লোক নিহত হন (আর্কাইভ লিংক)।
এর আগে ২২ এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে ২৬জনকে হত্যা করে বন্ধুকধারীরা। ওই হামলাকে "সন্ত্রাসী হামলা" এবং বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হামলা বল মন্তব্য করেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ (আর্কাইভ লিংক)।
কাশ্মীরে হামলার জন্য ভারত পাকিস্তানকে মদত দেয়ার অভিযোগ তোলার পর থেকে পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুই প্রতিবেশীর মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তবে নিজেদের কোন ভূমিকা নেই বলে অভিযোগ অস্বীকার করেছে পাকিস্তান এবং নয়াদিল্লির দাবিকে "অসার" বলে অভিহিত করেছে (আর্কাইভ লিংক)।
ভারতীয় সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে, ২৪ এপ্রিলের পর থেকে প্রায় প্রতি রাতে তাদের সেনারা পাকিস্তানি সৈন্যদের সাথে বিতর্কিত কাশ্মীর সীমান্তে রাতভর গুলি বিনিময় করেছে।

পাকিস্তানের ওপর ভারতের হামলার দৃশ্যের দাবিতে ভিডিওটিকে ফেসবুকে অন্যত্র এখানে ও এখানে ছড়ানো হয়েছে।
বাংলার পাশাপাশি ভিডিওটি ইংরেজি ভাষায় ফেসবুক এবং এক্স-এ ছড়ানো হয়েছে।
তবে ভিডিওটি কাশ্মীর হামলার আগের এবং গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধ সম্পর্কিত পুরনো প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে।
গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চে ৯ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে আল-জাজিরার ইউটিউব চ্যানেলে গাজায় ইন্দোনেশিয়ার একটি হাসপাতালে বোমা হামলার পর আহতদের নিয়ে প্রকাশিত একটি দীর্ঘ প্রতিবেদনে ভিডিওটি পাওয়া যায় (আর্কাইভ লিংক)।
ভিডিওটির বিবরণের একাংশে বলা হয়, "ফিলিস্তিনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষ যারা উত্তর গাজায় ইন্দোনেশিয়ার হাসপাতালের আঙ্গিনায় আশ্রয় নিচ্ছেন, তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন"।
প্রতিবেদনের ৫ মিনিট ৬ সেকেন্ডে একই ফুটেজ দেখা যায়। যদিও অসত্য পোস্টে ভিডিওটিকে উল্টে দেয়া হয়েছে।

৯ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে এএফপি ওই হামলার বিষয়ে একই ধরনের ফুটেজ প্রকাশ করে। ভিডিওটির শিরোনামে বলা হয়, "গাজার বেইত লাহিয়ায় ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালের কাছে হামলা" (আর্কাইভ লিংক)।
সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়, হাসপাতালের আশেপাশের হামলায় ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং বেইত লাহিয়ার ইন্দোনেশিয়ান হাসপাতালটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। একটি বেসরকারি সংস্থার তোলা অনুদানে নির্মিত হাসপাতালটি ছিল গাজার শেষ অবশিষ্ট হাসপাতালগুলির মধ্যে একটি (আর্কাইভ এখানে ও এখানে)।
একটি ভূগর্ভস্থ কমান্ড এবং নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র লুকানোর জন্য হামাস হাসপাতালটিকে ব্যবহার করছিল বলে হামলার এক সপ্তাহ আগে দাবি করেছিল ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আর্কাইভ লিংক)।
২০২৫ সালের শুরুতে দুই মাসের যুদ্ধবিরতির পর হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অংশ হিসেবে ১৮ মার্চ পুনরায় গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। ৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে ফিলিস্তিনের মিলিট্যান্ট গ্রুপের হামলার মাধ্যমে এই যুদ্ধের সূচনা হয়েছিল (আর্কাইভ লিংক)।
হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ৪ মে জানিয়েছে যে, পুনরায় যুদ্ধ শুরু পর থেকে অন্তত ২,৪৩৬ মানুষ নিহত হয়েছেন। এতে যুদ্ধে মোট প্রাণহানির সংখ্যা ৫২,৫৩৫ জনে দাড়িঁয়েছে।
অফিসিয়াল তথ্যের ভিত্তিতে এএপফি'র তৈরি তালিকা অনুযায়ী, হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১,২১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের বেশির ভাগই বেসামরিক লোক।
মিলিট্যান্টরা আরও ২৫১জনকে অপহরণ করেছে। যাদের মধ্যে ৫৮জনকে এখনও গাজায় আটকে রাখা হয়েছে। তবে এদের মধ্যে ৩৪জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী।
পেহেলগাম হামলা নিয়ে এএফপি অন্যান্য অসত্য দাবি খণ্ডন করে প্রতিবেদন করেছে এখানে,এখানে ও এখানে।
এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?
আমাদের সাথে যোগাযোগ