পুতিন পাকিস্তানিদের সমালোচনা করে এমন বক্তব্য দিয়েছেন বলে প্রমাণ মেলেনি
ফেসুবকে একটি পোস্ট ছড়িয়েছে যেখানে দাবি করা হয়েছে, রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ‘ধনী পাকিস্তানীদের‘ নিয়ে সমালোচনামূলক কিছু উক্তি করেছেন। যদিও এএফপি ফ্যাক্ট চেক যাচাই করে দেখেছে, পুতিন পাকিস্তানীদের বিষয়ে এমন মন্তব্য করেছেন বলে কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
৫৫ জন ব্যক্তি রিয়েক্ট দিয়েছেন এবং ৬ জন শেয়ার করেছেন এমন একটি ফেসবুক পোস্ট শুরু হয়েছে পুতিন কথিত বক্তব্য দিয়ে: “রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট, ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন: পাকিস্তান পাকিস্তানিদের জন্য একটি কবরস্থান: ′′যখন একজন পাকিস্তানি ধনী হয়ে যায়, তখন তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট সুইজারল্যান্ডে থাকে । মেডিকেল চিকিৎসার জন্য তিনি লন্ডন / আমেরিকা ভ্রমণ করেন।” গত ২ জুন পোস্টটি করা হয়েছে।
পোস্টটিতে আরও লেখা হয়েছে, “তিনি (পাকিস্তানী) যুক্তরাজ্য/দুবাইয়ে বিনিয়োগ করেন । তিনি দুবাই থেকে কিনেন। সে চাইনিজ খায়। সে রোম বা মক্কায় প্রার্থনা করে। তার সন্তানরা ইউরোপে পড়াশোনা করে। পর্যটনের জন্য তিনি কানাডা, ইউএসএ, ইউরোপ ভ্রমণ করেন। মারা গেলে তাকে কবর দেওয়া হবে তার পাকিস্তানের আদি দেশে। পাকিস্তান পাকিস্তানিদের কবরস্থান মাত্র। কিভাবে একটি কবরস্থান উন্নত করা সম্ভব?”

বাংলায় এরকম পোস্ট আরও দেখুন এখানে ও এখানে।
এছাড়া একই রকম পোস্ট ইংরেজিতে দেখুন এখানে, এখানে ও এখানে।
২০২০ সালের ১৪ অক্টোবর এএফপি ফ্যাক্ট চেক একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিলো যেখানে দেখা যাচ্ছে, পুতিনের বক্তব্য হিসেবে একই ধরনের টেক্সট ২০১৮ সাল থেকে বিভিন্ন দেশের নাম যুক্ত করে ছড়ানো হয়েছে। ওই সময় কিছু পোস্টে 'পাকিস্তান' এর বদলে 'আফ্রিকা' লিখে ছড়ানো হয়েছে। দেখুন এখানে ও এখানে। কিছু পোস্টে তখন ‘পাকিস্তান’ লিখেও ছড়ানো হয়েছিল। যেমন দেখুন এখানে।
পুতিনের এমন কোন বক্তব্য ক্রেমলিনের অফিসিয়াল বিবৃতিতে কিম্বা রাশিয়ার কোন উল্লেখযোগ্য সংবাদমাধ্যমে খুঁজে পায়নি এএফপি ফ্যাক্ট চেক।
২০১৯ সালে কয়েকটি রাশিয়ান ওয়েবসাইট কর্তৃকও পুতিনের এমন দেয়ার বিষয়টি নাকচ করা হয়েছিল। ক্রেমলিনপন্থী একজন রুষ রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রুসলান ওস্তাচকো সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ব্যবহারকারীদের ‘অন্ধ বিশ্বাস‘ এর সমালোচনাও করেছিলেন। “যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সমাজ সোশাল নেটওয়ার্কগুলোতে প্রকাশিত তথ্য বিশ্বাস করবে ততক্ষণ পর্যন্ত ‘পুতিন আফ্রিকাকে কবরস্থান মনে করেন‘ এই ভুয়া খবরটি বন্ধ হবে না“, বলেছিলেন অস্তাচকো।
ফ্রেঞ্চ এবং ইংরেজি দুই ভাষায় বেশ কিছু ওয়েবসাইটও এই বিষয়টি খতিয়ে দেখার চেষ্টা করেছে এবং প্রমাণ না থাকায় পুতিনের এমন বক্তব্য নাকচ করেছে। এরকম কয়েকটি ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিবেদন দেখুন এখানে এখানে ও এখানে।