মিশরে তেল পাইপলাইনে বিস্ফোরণের ভিডিওকে 'ইসরায়েলে হামাসের হামলা' বলে ভুল তথ্য প্রচার
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সংঘর্ষ যখন চলছে তখন বিশাল অগ্নিকাণ্ডের একটি ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে যে, তাতে হামাসের হামলার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। ওই হামলায় কয়েকশ ইহুদি মারা গেছেন বলেও দাবি করা হয়েছে। কিন্তু দাবিগুলো ভুয়া। প্রকৃতপক্ষে ভিডিওটিতে কায়রোর একটি তেল পাইপলাইনে ২০২০ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত অগ্নিকান্ডের দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।
গত ১৬ মে ২০২১ তারিখে ১৫ হাজার সদস্যের একটি ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করা হয়।
ক্যাপশনে লেখা ছিলো, ''আলহামদুলিল্লাহ ইসরায়েলকে দাঁতভাঙা জবাব দিচ্ছে ফিলিস্তিন : হামাস। ইসরায়েলে ইয়াহুদীদের মধ্যে একটি বড় বিস্ফোরণ ঘটেছে, প্রায় ৬৫০ জন ইয়াহুদী মারা গেছে।''
ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, রাস্তার পাশে দাঁড়ানো কয়েকটি গাড়ি থেকে আগুনের লেলিহান শিখা এবং কুণ্ডুলি বেঁধে ধোঁয়া উড়ছে। ব্যাকগ্রাউন্ডে মানুষের আহাজারি এবং সাইরেনের শব্দ শোনা যাচ্ছে।
ইসরায়েল এবং ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গ্রুপগুলোর- যাদের বৃহত্তম সংগঠন হামাস- মধ্যকার ১১ দিনের যুদ্ধের সময় ফুটেজটি অনলাইনে ছড়ায়। ওই ১১ দিনের সহিংসতায় ২৫০ এর বেশি লোক প্রাণ হারিয়েছেন এবং গাজা উপত্যকার কয়েক হাজার বাসিন্দা গৃহহীন হয়েছেন। মিশর কর্তৃক যুদ্ধবিরতি উদ্যোগের পর তা ২১ মে থেকে কার্যকর রয়েছে।
ভিডিওটি ফেসবুকে এখানে, এখানে ও এখানেও পোস্ট করা হয়েছে।

যদিও এসব দাবি ভুয়া।
ভিডিওটি থেকে কী-ফ্রেইম বাছাই করে গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ করে ২০২০ সালের ১৫ জুলাই প্রকাশিত স্কাই নিউজ এর একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায় যার শিরোনাম, “Egypt: Seventeen people injured in oil pipeline explosion on Cairo motorway”. প্রতিবেদনে ভিডিও ফুটেজটি যুক্ত রয়েছে।
এছাড়া গুগল কীওয়ার্ড সার্চ করে আরও কিছু প্রতিবেদনে দেখা যায়, মিশরের কায়রোর উপকণ্ঠে একটি ব্যস্ত মহাসড়কের পাশে শুকাইর-মস্তরদ অঞ্চলে তেলের পাইপলাইনে আগুনের দৃশ্য এটি। রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে মিশরের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রণালয়কে উদ্ধৃত করে লেখা হয়েছে, ''পাইপলাইন থেকে লিক হওয়া তেলের সাথে পাশ দিয়ে যাতায়াত করা কোনো কারের ছিটকে পড়া স্ফুলিঙ্গ মিশে আগুন ধরে যায়।''
কানাডা ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল নিউজ ২০২০ সালের ১৫ জুলাই ভিডিওটির আরও দীর্ঘ একটি ভার্সন প্রকাশ করে। ওই ভিডিওতে সড়কের পাশে একটি সাইনবোর্ড দেখা যায় যাতে আরবি এবং ইংরেজিতে লেখা রয়েছে, ''কায়রো বিমানবন্দর''।

এর আগে একই ফুটেজকে দুবাইয়ে বিস্ফোরণের ঘটনা বলে ছড়ানো ফেসবুক পোস্টকে এএফপি খণ্ডন করেছে।