পতাকা অপসারণের ভিডিওকে অসত্যভাবে জোহরান মামদানির বিজয়ের সঙ্গে জড়িয়ে প্রচার চলছে
- প্রকাশিত 25 নভেম্বর 2025, 13:31
- 2 এক্স মিনিটে পড়ুন
- লেখক: Bill MCCARTHY, এএফপি যুক্তরাষ্ট্র, এএফপি বাংলাদেশ
- অনুবাদ এবং অভিযোজন Rasheek MUJIB
কপিরাইট © এএফপি ২০১৭-২০২৫। এই কন্টেন্টের যেকোন বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
৩৩ বছর বয়সী জোহরান মামদানি বিপুল ভোটে নিউ ইয়র্ক সিটির সর্বপ্রথম মুসলিম মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন ৪ নভেম্বর ২০২৫। মামদানির জয়ের পর অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায় যে একজন ব্যক্তি একটি সড়কবাতির ওপরে উঠে আমেরিকা এবং জাতিসংঘের পতাকা ছিড়ে ফেলছেন। আদতে ক্লিপটি সাম্প্রতিক সময়ের নয়। ভিডিওটিতে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ফিলিস্তিন-পন্থী বিক্ষোভের সময় ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা দেখানো হয়েছে।
“নিউ ইয়র্ক সিটিতে আমেরিকার পতাকা ছিড়ে ফেলছে সদ্য মেয়র নির্বাচনে জয়ী বামপন্থীরা, ভাগ্যিস ভারতে কোথাও বামপন্থীরা এককভাবে জিততে পারেনি,” ৭ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে ছড়ানো বাংলা ভাষার একটি ফেসবুক পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়।
ভিডিওটি একই অসত্য দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত হয়। ইংরেজি এবং স্প্যানিশ ভাষার কিছু পোস্টেও ভিন্ন দাবিতে ভিডিওটি পাওয়া যায়।
পোস্টগুলো নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে মামদানির ঐতিহাসিক জয়ের পর পর ছড়িয়ে পড়ে (আর্কাইভ লিংক)। স্বঘোষিত সমাজতান্ত্রিক মামদানি প্রাক্তন নিউ ইয়র্ক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমোকে পরাজিত করে নিউ ইয়র্কের পরবর্তী মেয়র নির্বাচিত হন।
প্রচারণা জুড়ে মামদানি তার মুসলিম পরিচয়কে প্রকাশ করেন, মসজিদ এবং কমিউনিটি সেন্টারে ঘন ঘন পরিদর্শনের মাধ্যমে নিউ ইয়র্কবাসীকে তাঁর মুসলিম পরিচয় গ্রহণ করার সুযোগ করে দেন। জানান দেন যে, তিনিই হবেন নিউ ইয়র্কের প্রথম মুসলিম মেয়র (আর্কাইভ লিংক)।
কিন্তু ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতে ৩৩ বছর বয়সী এই ব্যক্তির অভূতপূর্ব উত্থান তাকে নানা ধরনের আক্রমণের মুখোমুখি হতে বাধ্য করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁকে একজন "খাঁটি কমিউনিস্ট" হিসাবে আখ্যা দিয়েছেন এবং অন্যান্য রিপাবলিকান আইন প্রণেতারা তাঁর ধর্ম এবং বর্ণকে লক্ষ্য করে নানা আক্রমণ করেছেন।
অনলাইনে মামদানিকে বিভ্রান্তিকর তথ্যের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইরাকের ইসলামিক মিছিলের একাধিক ভিডিওকে নিউ ইয়র্ক সিটিতে মামদানির সমর্থকদের প্রাথমিক সাফল্য উদযাপনের দৃশ্য হিসেবে ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
আমেরিকা ও জাতিসংঘের পতাকা ছিঁড়ে ফেলার ভিডিওটিও একইভাবে মামদানির জয়ের সাথে সম্পর্কিত নয়।
গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চে দেখা যায় ক্লিপটি ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর অনলাইনে পোস্ট করা হয়। এটি গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ শুরুর এক মাসেরও বেশি সময় পর নিউ ইয়র্ক শহরে ফিলিস্তিন-পন্থী বিক্ষোভ শুরু হওয়ার সময় তোলা (আর্কাইভ লিংক)।
ফক্স নিউজ এবং অন্যান্য সংবাদমাধ্যম বিভিন্ন কোণ থেকে একই ঘটনার পৃথক ফুটেজ প্রকাশ করে (আর্কাইভ লিংক এখানে এবং এখানে)।
আরও কিছু সংবাদ প্রতিবেদনেও বিক্ষোভটির বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে (আর্কাইভ লিংক)।
জুন মাসে মেয়রাল প্রাইমারিতে মামদানির প্রাথমিক জয়ের পরেও অসত্য ভিডিওটি মিথ্যা দাবিতে প্রচার করা হয়।
১ জুলাই ২০২৫ তারিখে একটি ইমেলে নিউ ইয়র্ক পুলিশ বিভাগ (এনওয়াইপিডি) এএফপিকে নিশ্চিত করে যে ঘটনাটি ঘটেছিল ১০ নভেম্বর, ২০২৩ তারিখে, নিউ ইয়র্ক সিটির পূর্ব ৪৩তম স্ট্রিট এবং লেক্সিংটন অ্যাভিনিউয়ের কোণে।
নিউ ইয়র্ক পুলিশ জানিয়েছে যে ১৭ বছর বয়সী অপরাধীকে আটক করা হয়েছিল। প্রায় ১০ ফুট উচ্চতার খুঁটির ওপরে থাকা বেশ কয়েকটি পতাকা সরিয়ে ফেলা এবং ক্ষতিগ্রস্ত করার পর তাঁকে আটক করা হয়।
১০ নভেম্বর ২০২৩ তারিখে তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদোলুর জন্য সেলকুক আকারের তোলা ছবিতেও একই পতাকা-সজ্জিত ল্যাম্পপোস্ট এবং একই ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে (আর্কাইভ লিংক এখানে এবং এখানে)।
এএফপি মার্কিন রাজনীতি সম্পর্কে অন্যান্য ভুল তথ্য খণ্ডন করেছে এখানে।
এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?
আমাদের সাথে যোগাযোগ