কুমিরের আক্রমণের শিকারের ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়, ভারতের

২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সুন্দরবনে কুমিরের আক্রমণে একজন জেলে নিহত হন। ওই ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা একটি ভিডিও ছড়িয়ে সেটিকে কুষ্টিয়া জেলায় অন্য একটি কুমির আক্রমণের দৃশ্য হিসেবে অসত্যভাবে দাবি করা হয়। ক্লিপটি আসলে প্রতিবেশী দেশ ভারতের।  

৯ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে ছড়ানো একটি ফেসবুক ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়, “বাংলাদেশের বিভিন্ন নদীতে কুমির দেখা যাচ্ছে উদ্বেগজনক ভাবে। এবার কুষ্টিয়ায় গড়াই নদীতে কুমিরে এক নারীকে ধরে নিয়ে যাওয়ার মুহূর্ত।” 

পোস্টের সাথে যুক্ত আট সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে ঘোলাটে পানিতে একটি কুমিরের মুখে মানুষের হাতের মতো বস্তু এবং দৃশ্যটি ধারণকারী ব্যক্তিকে কুমিরটির দিকে ইঙ্গিত করতে দেখা যায়।  

Image
লাল ক্রস চিহ্নসহ ১৯ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে নেয়া অসত্য পোস্টের স্ক্রিনশট

৩০ সেপ্টেম্বর সুন্দরবনের জঙ্গলে কুমি একজন জেলেকে টেনে নিয়ে খালে ফেলে হত্যা করার পর ভিডিওটি অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার পর স্থানীয়রা আরও শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থার দাবি জানান(আর্কাইভ লিংক)। 

ভিডিওটি অন্যত্র এখানে এবং এখানে শেয়ার করা হয়। কিন্তু ভিডিওটি আসলে ভারতের, বাংলাদেশের নয়। 

অসত্যভাবে ছড়ানো ভিডিওটির কিফ্রেম নিয়ে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার ফেসবুক পেজে ৮ অক্টোবর ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত একটি ভিডিও পাওয়া যায়, যেখানে একই দৃশ্য দেখা যায় (আর্কাইভ লিংক)। 

ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, “খরস্রোতা নদীতে ৫৯ বছর বয়সী এক নারী নোনা জলের কুমিরের আক্রমণে নিহত হন। তার দেহ আংশিকভাবে খাওয়া অবস্থায় পাওয়া গেছে।” 

Image
অসত্যভাবে ছড়ানো ভিডিও (বামে) এবং টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিলের তুলনামূলক স্ক্রিনশট

ভিডিওটিতে সৌদামিনী মহালা নামের এক ভুক্তভোগীর বলে ১৩ অক্টোবর ফোনে এএফপিকে নিশ্চিত করেছেন জাজপুরের স্থানীয় বন কর্মকর্তা সন্তোষ কুমার পতি।

পতি আরও বলেন, “ঘটনার পরের দিন তার মৃতদেহ পাওয়া যায়।”

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে যে ওডিশার জাজপুর এবং কেন্দ্রপাড়া জেলায় এই ধরনের আক্রমণের ঘটনা প্রায়েই ঘটে। ভিতরকণিকা অভয়ারণ্য থেকে মাঝে মাঝে কুমির কাছাকাছি জলাশয়ে প্রবেশ স্থানীয়দের জন্য হুমকি সৃষ্টি করে (আর্কাইভ লিংক)।

এএফপি এর আগেও এমন অসত্য দাবি খণ্ডন করেছে, যেখানে অন্য ঘটনার ফুটেজকে বাংলাদেশ বলে বিভ্রান্তিকরভাবে ছাড়ানো হয়েছে।

এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?

আমাদের সাথে যোগাযোগ