
নাটকীয় কাদাধ্বসের ক্লিপটি পাকিস্তানের নয়, জাপানের পুরনো ভিডিও
- প্রকাশিত 28 আগস্ট 2025, 14:49
- 3 এক্স মিনিটে পড়ুন
- লেখক: Masroor GILANI, এএফপি পাকিস্তান, এএফপি বাংলাদেশ
- অনুবাদ এবং অভিযোজন Rasheek MUJIB
কপিরাইট © এএফপি ২০১৭-২০২৫। এই কন্টেন্টের যেকোন বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
২০ আগস্ট ২০২৫ তারিখে ছড়ানো একটি ফেসবুক রিলের ক্যাপশনে বলা হয়, “পাকিস্থানের খাইবার পাখতুনখোয়ার কি ভয়াবহ অবস্থা দেখুন।”
ক্যাপশনটিতে পাকিস্তান ও বন্যা নিয়ে হ্যাশট্যাগ যুক্ত করা হয়েছে। সম্প্রতি পাকিস্তানের পাহাড়ি খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে মুষলধারে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ফলে মারাত্মক বন্যা এবং ভূমিধ্বস দেখা দিয়েছে (আর্কাইভ লিংক)।
কয়েকটি ক্লিপ নিয়ে তৈরি ভিডিওটির প্রথম ক্লিপটিতে একটি পাহাড়ি এলাকায় কাদা এবং ধ্বংসাবশেষ আছড়ে পড়তে দেখা যায়।

অস্বাভাবিক তীব্র বর্ষা মৌসুমে পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চল যখন বিধ্বস্ত হয়ে পড়ে এবং ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারায়, তখন একই ধরনের রিলে ফুটেজটি অন্যত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে (আর্কাইভ লিংক)।
দক্ষিণ এশিয়ার বার্ষিক বৃষ্টিপাতের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ হয়ে থাকে বর্ষা মৌসুমে, যা কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়ে থাকে এই বৃষ্টিপাত।
পাকিস্তানে চলমান বৃষ্টিপাতের ফলে সৃষ্টি হওয়া বন্যা ও ভূমিধ্বসে অনেক গ্রাম পুরো ভেসে গেছে। অনেক বাসিন্দা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছে এবং শত শত মানুষ এখনও নিখোঁজ রয়েছে।
কিন্তু অনলাইনে ছড়ানো ভিডিও সংকলনটির প্রথম ক্লিপটি খাইবার পাখতুনখোয়ার নয়।
অসত্যভাবে ছড়ানো ক্লিপটির কিফ্রেম ব্যবহার করে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চে একই ফুটেজটি জাপানের সংবাদমাধ্যম সানকেই নিউজের ইউটিউবে পাওয়া যায়। যা ৩ জুলাই ২০২১ তারিখে প্রকাশিত হয়েছিল (আর্কাইভ লিংক)।
পুরনো প্রতিবেদনে দীর্ঘ ফুটেজটি ওয়্যার এজেন্সি আইপ্রেসের ক্রেডিটে প্রকাশ করা হয়।
ক্যাপশনে বলা হয়, এটি ৩ জুলাই ২০২১ তারিখে জাপানের শিজুওকা প্রিফেকচারের আতামির ইজুসান অঞ্চলে একটি কাদাধ্বসের ঘটনার।

ভিডিওটি টোকিও থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার (৫৫ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত একটি শহরের গুগল স্ট্রিট ভিউ চিত্রের সাথে মিলে যায় (আর্কাইভ লিংক)।
এএফপির রিপোর্ট অনুসারে, কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টিপাতের পর শহরটির কিছু অংশে কাদার স্রোত বয়ে যায় (আর্কাইভ লিংক)। ধ্বংসাত্মক ভূমিধ্বসে ২৭ জন মানুষ মারা যায়।
ভিডিওটি সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরও কিছুবার অসত্যভাবে অন্যান্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের চিত্র হিসেবে ছড়ানো হয়েছিল।
ভিডিও সংকলনটির অন্যান্য ক্লিপে প্রচণ্ড বন্যার পানি এবং ভবনধ্বসের চিত্র দেখানো হয়েছে।
যদিও এএফপি সবগুলো ক্লিপ ২০২৫ সালের আগস্টে পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলে ঘটে যাওয়া মৌসুমি বৃষ্টিপাতের প্রভাবের সাথে সম্পর্কিত কিনা, তা যাচাই করতে পারেনি, তবে অন্তত একটি ক্লিপ বেশ কয়েক বছরের পুরনো বলে নিশ্চিত হয়েছে।
২০২২ সালের আগস্ট মাস থেকেই ভবনের উপর দিয়ে তীব্র বেগে প্রবাহিত একটি কর্দমাক্ত স্রোতের ভিডিও ফেসবুক এবং ইউটিউবে ছড়ানো হচ্ছে (আর্কাইভ লিংক এখানে এবং এখানে)।

২০২২ সালে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ফলে দেশের এক তৃতীয়াংশ জলমগ্ন হয়ে পড়ে এবং প্রায় ১,৭০০ জন মারা যায়।
সেই সময় এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, খাইবার পাখতুনখোয়ার অনেক নদীর তীর ভেঙে গেছে। এতে ১৫০ কক্ষের একটি হোটেলসহ বেশ কয়েকটি ভবন প্রচণ্ড স্রোতের তোড়ে ভেঙে তলিয়ে যায় (আর্কাইভ লিংক)।
কর্মকর্তারা জানায় যে, সেই বছরের মৌসুমি বন্যায় প্রায় দশ লক্ষ ঘরবাড়ি ধ্বংস বা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ৩ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছিল।
এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?
আমাদের সাথে যোগাযোগ