বাংলাদেশি নাগরিকের তৈরি করা বিমানের ভিডিও, ভারতীয় কিশোরের নয়

ভারতের সামাজিক মাধ্যম ব্যবহাকারী এবং গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান এক ব্যক্তির এক আসনের একটি বিমান ওড়ানোর ভিডিও  ছড়িয়ে সেটিকে ওই দেশে ধারণ করা ভিডিও বলে অসত্য দাবি করেছে। তবে বিমানটির নির্মাতা এএফপিকে নিশ্চিত করেছেন যে, তিনি বাংলাদেশি।

৭ জুলাই ২০২৫ তারিখে ছড়ানো একটি ইন্সটাগ্রাম ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়, “বিহারের মুজাফ্ফরপুরের বাচ্চা ছেলে অবনীশ কুমার স্ক্র্যাপ এবং বেসিক মেকানিক্স ব্যবহার করে একটি উড়ন্ত বিমানের মডেল তৈরি করেছিলেন।”

বিমানটি ৭,০০০ ভারতীয় রুপি তথা ৭৯ মার্কিন ডলার ব্যয়ে তৈরি করা হয়েছে বলে ক্যাপশনটিতে দাবি হয়।  

পোস্টে যুক্ত ভিডিওতে একটি একক আসনের বিমান উড্ডয়নকালে লোকজনকে বিমানটির পেছনে দৌড়াতে দেখা যায়।

Image
লাল ক্রস চিহ্নসহ ১৮ আগস্ট ২০২৫ তারিখে নেয়া অসত্য পোস্টের স্ক্রিনশট

একই ধরনের পোস্টে ফুটেজটি অন্যত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো হয়েছে। কিছু ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনেও ভিডিওটি অসত্য দাবিতে প্রচার করা হয়েছে। 

কিন্তু ক্লিপটি বাংলাদেশের জাফরগঞ্জে ধারণ করা হয়েছে। 

অসত্যভাবে ছড়ানো ক্লিপটির কিফ্রেম ব্যবহার করে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চে একই ফুটেজটি এভিয়েশন ভিডিওস নামের একটি ফেসবুক পেজে পাওয়া যায়। ফুটেজটি ১১ জুন ২০২৫ তারিখে ওই পেজে প্রকাশিত হয়েছিল (আর্কাইভ লিংক)। 

পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়, “মানিকগঞ্জের ২৮ বছর বয়সী বাংলাদেশি উদ্ভাবক সফলভাবে নিজের আল্ট্রালাইট বিমান তৈরি করেছেন এবং উড়িয়েছেন। বিমানবিদ্যায় কোন আনুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ ছাড়া এবং আর্থিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও তিন বছর গবেষণার করে জুলহাস প্রায় ৮ লক্ষ টাকা তথা ৬,৬০০ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করে এক বছরে বিমানটি তৈরি  করেছেন।”

Image
অসত্য ফেসুবক পোস্টে ছড়ানো ক্লিপ(বামে) এবং ফেসবুকে আপলোড করা ভিডিওর তুলনামূলক স্ক্রিনশট

আরও কিওয়ার্ড অনুসন্ধানে ৫ মার্চ বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে একটি দীর্ঘ ভিডিও পাওয়া যায়। এতে বলা হয়, পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান ২৮ বছর বয়সী জুলহাস মোল্লা জাফরগঞ্জে তার নিজের তৈরি আল্ট্রালাইট বিমান সফলভাবে উড়িয়েছেন (আর্কাইভ লিংক)। 

অসত্যভাবে ছড়ানো পোস্টে যে বিমানটি দেখানো হয়েছে, সেটি তাঁর তৈরি বলে এএফপিকে নিশ্চিত করেছেন জুলহাস।

৭ আগস্ট এএফপিকে মোল্লা বলেন, “নিয়মিত কাজের ফাঁকে বিমানটি তৈরি করতে আমার প্রায় এক বছর সময় লেগেছে।”  

তিনি আরও বলেন, “এটি একজন ভারতীয় কিশোর তৈরি করেছে বলে আমি ভিডিওটিকে ভারতে ছড়াতে দেখেছি। তবে দাবিটি সম্পূর্ণ মিথ্যা।”

এএফপি এর আগেও বাংলাদেশে সংঘটিত ঘটনা সম্পর্কে ভারতীয় সামাজিক মাধ্যমের অসত্য পোস্ট খণ্ডন করে এখানে, এখানে এবং এখানে প্রতিবেদন করেছে। 

এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?

আমাদের সাথে যোগাযোগ