পুরনো বিমান দুর্ঘটনার দৃশ্যকে সাম্প্রতিক দুর্ঘটনা হিসেবে বিভ্রান্তিকরভাবে প্রচার

আগুনে পুড়তে থাকা একটি বিমান মাঝ আকাশ থেকে আছড়ে পড়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্টে ছড়িয়ে সেটিকে ২১ জুলাই ২০২৫ তারিখে রাজধানী ঢাকায় যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনার সাথে অসত্যভাবে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। ওই দুর্ঘটনায় অন্তত ৩৩ জন নিহত হন। তবে ভিডিওটি ২০২৪ সালের মে মাস থেকে চট্টগ্রামে একটি নদীতে একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনার বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদ প্রতিবেদনে পাওয়া যায়।  

২১ জুলাই ২০২৫ তারিখে ছড়ানো একটি ফেসবুক ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়, “যে ভাবে বিমান বাহিনীর প্রশিক্ষণ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়ে উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের উপর পড়ছে।”

ভিডিওটিতে একটি যুদ্ধবিমানের পেছনের অংশে আগুন লাগার পর একটি জলাধারে পতিত হতে এবং দুইজন ব্যক্তিকে বিমান থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়। 

Image
লাল ক্রস চিহ্নসহ ১৩ আগস্ট ২০২৫ তারিখে নেয়া অসত্য পোস্টের স্ক্রিনশট

২১ জুলাই ২০২৫ তারিখে স্কুল ছুটির পরমুহূর্তে ঢাকার মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজে একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর একই ধরনের ফেসবুক পোস্টেক্লিপটি  ছড়ানো হয় (আর্কাইভ লিংক)।

মর্মান্তিক ওই দুর্ঘটনায় ৩৩ জন নিহত হন এবং ১৭০ জনেরও বেশি আহত হন, যাদের বেশিরভাগই শিশু। অগ্নিদগ্ধদের অনেকেই এখনও ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন (আর্কাইভ লিংক)। 

তবে ভিডিওটি সাম্প্রতিক দুর্ঘটনার নয়।

অসত্যভাবে ছড়ানো ভিডিওর কিফ্রেম ব্যবহার করে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চে ৯ মে, ২০২৪ তারিখে ইউটিউবে প্রকাশিত দ্য ডেইলি স্টারের একটি ভিডিও প্রতিবেদন পাওয়া যায়(আর্কাইভ লিংক)। 

ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়, “আগুন লেগে বিমানটি যেভাবে কর্ণফুলী নদীতে ছিটকে পড়ে।” 

Image
অসত্য পোস্টে ছড়ানো ক্লিপ(বামে) এবং ডেইলি স্ট্যারের ইউটিউব প্রতিবেদনের তুলনামূলক স্ক্রিনশট

৯ মে ২০২৪ তারিখে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো দুর্ঘটনাটি নিয়ে তাদের প্রতিবেদনেও ভিডিওটি প্রকাশ করেছে।

বিমানটির দুইজন পাইলট - উইং কমান্ডার সোহান হাসান খান এবং স্কোয়াড্রন লিডার অসীম জাওয়াদ - বিমান থেকে বেরিয়ে নদীতে পড়ে যান। পরবর্তীতে জাওয়াদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন (আর্কাইভ লিংক)। 

একটি বিবৃতিতে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী জানায়, বিমানটিতে আগুন লাগার পর পাইলটরা ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা করার জন্য প্লেনটিকে জনবহুল এলাকা থেকে সরিয়ে জনবিচ্ছিন্ন এলাকায় নিয়ে যেতে সক্ষম হন (আর্কাইভ লিংক)। 

এএফপি এর আগেও বিমান দুর্ঘটনার সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য অসত্যদাবি খণ্ডন করেছে। 

এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?

আমাদের সাথে যোগাযোগ