কয়েক মাস আগের পুরনো ভিডিওটি মিয়ানমারের ভূমিকম্পের, রাশিয়ার নয়

পৃথিবীর ইতিহাসে রেকর্ড করা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পগুলোর একটিতে জুলাইয়ের শেষের দিকে রাশিয়ার দূর পূর্বাঞ্চলে তুলনামূলক কম জনবহুল এলাকা কেঁপে ওঠার পর পুরনো একটি ভিডিও বিভিন্ন পোস্টে শেয়ার করে সেটিকে ওই ভূমিকম্পের প্রভাব হিসেবে অসত্যভাবে দাবি করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, ক্লিপটি ২০২৫ সালের মার্চ মাসের, যখন ৭.৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্পে মিয়ানমার কেঁপে উঠেছিল। 

জুলাই ৩০ তারিখে একটি ফেসবুক পোস্টের ক্যাপশনে ভিডিওটি শেয়ার করে বলা হয়, “৮.৭ মাত্রার ভূমিকম্প রাশিয়ায়, আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুক।”

ক্লিপটিতে একটি দোকানের ভেতরের একটি সিসিটিভি ফুটেজে ভূমিকম্প আঘাত হানার পর দোকানের তাক ভেঙে পড়তে দেখা যায়। 

Image
লাল ক্রস চিহ্নসহ ৪ আগস্ট ২০২৫ তারিখে নেয়া অসত্য পোস্টের স্ক্রিনশট

রাশিয়ার সুদূর পূর্ব কামচাটকা উপদ্বীপের উপকূলে ৮.৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানার কয়েক ঘন্টা পরেই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। ভূমিকম্পের ফলে প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলের কিছু অংশে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয় এবং সুনামির সতর্কতা জারি করা হয় (আর্কাইভ লিংক)।

তবে দেশে দেশে সতর্কতা তুলে নেওয়া এবং হ্রাস করে উপকূলীয় বাসিন্দাদের ফিরে আসতে বলার সাথে সাথে বিপর্যয়ের আশঙ্কা অনেকটা কমে যায়। 

একই দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অন্যত্র ভিডিওটি শেয়ার করা হয়। 

কিন্তু ভিডিওটি ভিন্ন একটি ভূমিকম্পের, রাশিয়ার আঘাত হানা ভূমিকম্পের নয়। 

মিয়ানমারের ভূমিকম্পের চিত্র

অসত্যভাবে শেয়ার করা ক্লিপটির বিশ্লেষণে ভিডিওটির উপরের ডান কোণায় একটি টাইমকোড দেখা যায়। যেখানে লেখা, “২০২৫-০৩-২৮", ওই দিন সেন্ট্রাল মিয়ানমারের সাগাইং শহরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ৭.৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত করেছিল (আর্কাইভ লিংক)। 

ওই ভূমিকম্পে ৩,৭০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়। এছাড়া অনেক বাড়িঘর এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে যায়(আর্কাইভ লিংক)।

Image
অসত্য পোস্টের টাইমকোডটি এএফপি কর্তৃক ম্যাগনিফাই করে স্ক্রিনশট

অসত্যভাবে ছড়ানো ক্লিপটির কিফ্রেম ব্যবহার করে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চে ৩০ মার্চ “টপ ওয়ান মোবাইল” নামের একটি টিকটক অ্যাকাউন্টে একটি দীর্ঘ সংস্করণ পাওয়া যায়(আর্কাইভ লিংক)।

ভিডিওটির বার্মিজ ভাষার ক্যাপশনে বলা হয়, “তিন সেকেন্ডের মধ্যে পালানো সহজ নয়।” 

Image
অসত্য ভাবে ছড়ানো ক্লিপ (বামে) এবং মার্চে টিকটকে পোস্ট করা ছবির তুলনামূলক স্ক্রিনশট

অ্যাকাউন্টটিতে ভিন্ন কোণ থেকে একই রকম একটি ভিডিও শেয়ার করেছে (আর্কাইভ লিংক)। 

আরও কিওয়ার্ড সার্চে একই ফুটেজটি “২০২৫ সাগাইং ভূমিকম্প আর্কাইভ” নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে পাওয়া যায়। যেখানে বলা হয় যে, ফুটেজটি মায়ানমারের টাডা-উ নামক জায়গার একটি দোকানের (আর্কাইভ লিংক)।

গুগল ম্যাপে টপ ওয়ান স্টোরের সামনের দিকের ছবির সাথে টিকটক অ্যাকাউন্টে পোস্ট করা অন্যান্য ভিডিওর ছবির মিল পাওয়া যায় (আর্কাইভ লিংক এখানে এবং এখানে)। 

৩০ জুলাইয়ের ভূমিকম্পের পর আরও কিছু অপতথ্য ---যা প্রাকৃতিক দুর্যোগের পর প্রায়ই দেখা যায়, খণ্ডন করেছে এএফপি।  

এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?

আমাদের সাথে যোগাযোগ