সামাজিক মাধ্যমের পোস্টে বিমান দুর্ঘটনায় নিহতের অসত্য সংখ্যা প্রচার

বাংলাদেশের একটি স্কুল কর্তৃৃপক্ষ জানিয়েছে, ঢাকায় তাদের ক্যাম্পাসে একটি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ২২ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছে। যদিও অনলাইনে ছড়ানো একটি ফটোকার্ডে মৃতের সংখ্যা ২৪৭ জন বলে অসত্য ভাবে দাবি করা হয়। অসত্য পোস্টে বর্ণিত সংখ্যাটি অসম্ভব বলে জানান স্কুলের একজন মুখপাত্র, কারণ পোস্টে ছড়ানো সংখ্যাটি ওই সময় ক্যাম্পাসে উপস্থিত লোকের সংখ্যার চেয়েও বেশি। 

দুর্ঘটনার দুই দিন পরে ২৩ জুলাই ২০২৫ তারিখে একটি ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, “নিহত --২৪৭; আহত --৫২২। সোর্সঃ মাইলস্টোন স্কুল কর্তৃপক্ষ”।

ঢাকার বেসরকারি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ছুটির পর শিক্ষার্থীরা ক্লাস থেকে বের হওয়ার সময় একটি যুদ্ধবিমান স্কুল ভবনের উপর বিধ্বস্ত হয়(আর্কাইভ লিংক)। 

Image
২৪ জুলাই ২০২৫ তারিখে নেয়া অসত্য পোস্টের স্ক্রিনশট

পোস্টটিতে ১০০ টিরও বেশি মন্তব্য দেখা যায়। অনেকেই পোস্টে বর্ণিত সংখ্যাটি নিয়ে বিভ্রান্ত হতে দেখা যায়, যা সরকারি প্রতিবেদনের চেয়ে বেশি।

মৃত্যুর সংখ্যা ধামাচাপা দেয়া হচ্ছে বলে অনেকে মনে করেন। আবার অনেকে অসত্য দাবিটিকে বিশ্বাস করতে দেখা যায়। 

একজন বলেন, “কি নির্মমতা! আমরাই সব সময় বলির পাঁঠা হই”। অন্য একজন লিখেন, “অনেকে নিহত হয়েছে আর তারা বলছে ২৬/২৭ জন মারা গেছে”। 

একই ধরনের পোস্ট ফেসবুকে অন্যত্র  ছাড়ানো হয়েছে। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ দাবিটি খারিজ করে দেন। 

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সমন্বয়ক লুতফুন্নেসা লোপা ২৪ জুলাই এএফপিকে বলেন, “এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং ভুল তথ্য”। 

তিনি বলেন, দাবিগুলো “অসম্ভব”, কারণ অসত্য পোস্টটিতে বর্ণিত আহতদের সংখ্যা - ৫২২ - যা দুর্ঘটনার সময় ক্যাম্পাসে উপস্থিত লোকের চেয়ে বেশি। 

এএফপি স্কুলের ওয়েবসাইট বা ফেসবুক পেজে এমন কোনও প্রতিবেদন খুঁজে পায়নি, যেখানে দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা ২৪৭ উল্লেখ করা হয়েছে (আর্কাইভ লিংক এখানে এবং এখানে)। 

স্কুল কর্তৃপক্ষ ২৪ জুলাই একটি বিবৃতিতে জানায়, দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২২ জন শিক্ষার্থী মারা গেছে এবং অনেকে গুরুতর আহত রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন (আর্কাইভ লিংক)।

লোপা বলেন, তাদের প্রকাশিত সংখ্যায় শুধুমাত্র নিহত শিশুদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অন্যদিকে সরকারের প্রকাশিত সংখ্যায় নিহত বাবা-মা, শিক্ষক এবং কর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

২৫ জুলাই সারাদেশে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। তখন মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩২ জনে পৌছায় (আর্কাইভ লিংক)। 

বাংলাদেশের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ অধিদপ্তরও পৃথকভাবে মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে ছড়ানো অপতথ্য খণ্ডন করেছে। 

 সংবাদমাধ্যমকে দেয়া একটি বিবৃতিতে অধিদপ্তর বলেন, “মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক গুজব ছড়ানো হচ্ছে। অনেকেই না বুঝে এসব গুজব বিশ্বাস করছেন” (আর্কাইভ লিংক)। 

এএফপি বিমান দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছড়ানো আরও অপতথ্য খণ্ডন করেছে। 

এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?

আমাদের সাথে যোগাযোগ