নারীর নেতৃত্বে নামাজ আদায়ের ফুটেজটি ভারতের, বাংলাদেশের নয়

সামাজিকভাবে রক্ষণশীল বাংলাদেশে সাধারণত নামাজে নারীদের ইমামতির বিষয়ে অনুমতি নেই। বাংলাদেশী একজন নারী সামাজিক এই ট্যাবু ভেঙে পুরুষদের নামাজে ইমামতি করেছেন, এমন অনুমানের ভিত্তিতে ছড়ানো একটি ফুটেজ সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। তবে ক্লিপটি বিভ্রান্তিকরভাবে প্রচার করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ক্লিপটি ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় কেরালা রাজ্যে ধারণ করা হয়েছিল। 

৯ মার্চ ২০২৫ তারিখে একটি ফেসবুক পোস্টে ক্লিপটি শেয়ার করে বলা হয়, "মহিলা ইমামতি করে, পুরুষেরা পিছে নামাজ পড়ে!! আমরা কোন বাংলাদেশে আছি বর্তমানে।"

ফুটেজটিতে একদল পুরুষের সামনে একজন নারীকে নামাজে ইমামতি করতে দেখা যায়। 

Image
১৩ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে নেয়া অসত্য পোস্টের স্ক্রিনশট

অন্যত্র ফেসবুকে ছড়ানো একই রকম পোস্ট বাংলাদেশী ব্যবহারকারীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে, যারা বিশ্বাস করেন যে পুরুষের নামাজে নারীদের নেতৃত্ব দেয়া উচিত নয় (আর্কাইভ লিংক)।

একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেন, "পুরুষরা কিভাবে একজন নারীর পেছনে নামাজ আদায় করে! আল্লাহ আমাদের ক্ষমা করুন"। 

অন্য একজন লিখেন, "ধর্ম কি পাল্টে গেছে"। 

যদিও ভিডিওটিতে সত্যিকার অর্থেই একজন নারীকে প্রথাগত নিয়ম ভেঙ্গে নামাজের ইমামতি করতে দেখা যায়, তবে ফুটেজটি বাংলাদেশে নয়, বরং এটি ভারতে ধারণ করা হয়েছিল।

ভিডিওটির কিফ্রেম নিয়ে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চে দেখা যায় যে এটি ২০১৮ সালের ২৯ জানুয়ারি ভারতের স্থানীয় গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান দৈনিক সাভেরার ভেরিফাইড ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করা হয়েছিল (আর্কাইভ লিংক)।

ভিডিওটির শিরোনামে বলা হয়, "প্রথমবারের মতো কেরালায় জুমার নামাজে নারীর ইমামতি"। 

Image
অসত্য পোস্টের (বামে) এবং দৈনিক সাভেরার ভিডিওটির (ডানে) তুলনামূলক স্ক্রিনশট

টাইমস অব ইন্ডিয়া এবং স্ক্রোলের প্রতিবেদনে ভিডিওটির ওই নারীকে জামিদা বিবি হিসেবে শনাক্ত করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ২৬ জানুয়ারি, ২০১৮ তারিখে প্রথম ভারতীয় মুসলিম নারী হিসেবে জামিদা কেরালার মালাপ্পুরাম জেলায় প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের নামাজের জামাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন (আর্কাইভ লিংকস এখানেএখানে)। 

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, জামিদা বিবি কুরআন সুন্নাহ সোসাইটি নামে মুসলিম সম্প্রদায়ের "সংস্কারে কাজ করা" একটি দলের সদস্য। 

২০১৮ সালের জানুয়ারিতে মালায়লাম টেলিভিশন চ্যানেল এশিয়ানেট নিউজকে দেয়া এক ইন্টারভিউতে জামিদা জানান যে, "ধর্মের মধ্যে পুরুষের আধিপত্য চ্যালেঞ্জ করার জন্য" তিনি এমনটি করেছেন (আর্কাইভ লিংক)।  

ভারতীয় গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান রেডিফ ডট কমের তথ্য মতে, নামাজে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে তিনি মৃত্যুর হুমকি পেয়েছেন(আর্কাইভ লিংক)।

এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?

আমাদের সাথে যোগাযোগ