এটি ভিয়েতনামের যুদ্ধ জাদুঘরে প্রদর্শনীর ছবি, সিরিয়ার কারাগারের নয়

১৩ বছরের বেশি সময় গৃহযুদ্ধের পর ইসলামপন্থী নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীদের দ্বারা প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে উৎখাতের পর সিরিয়ার কুখ্যাত সায়দনায়া কারাগারের লোমহর্ষক ছবি প্রকাশিত হতে শুরু করে, তবে সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো একটি ছবি দেশেটির কুখ্যাত কারাগারগুলির কোন সেলের নয়। প্রকৃতপক্ষে ছবিটি ভিয়েতনামের হো চি মিন শহরের একটি যুদ্ধ জাদুঘরে প্রদর্শনীর ছবি।

একটি কক্ষে বেঁধে রাখা কৃশকায় ব্যক্তির ছবিটি ৯ ডিসেম্বর ২০২৪ ফেসবুকে শেয়ার করা হয়েছে।

বিদ্রোহীরা সিরিয়ার সায়দনায়া কারাগার খুলে দেয়ার পর থেকে ছবিটি অনলাইন ছড়ানো হয়। কারাগার খুলে দেয়ার কয়েক ঘন্টা আগে বিদ্রোহীরা প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে দেশ থেকে বিতাড়িত করে ১৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে রাজধানী দামেস্ক দখলে নেয় (আর্কাইভ লিংক)।

কারাগারটিকে বন্দীদের "নির্মূল" করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে মন্তব্য করে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এটিকে "মানব কসাইখানা" বলে অভিহিত করেছে।

বাংলাদেশের আয়নাঘর বন্দীদশার সাথে তুলনা করে ফেসবুক পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়, "সিরিয়ার আয়নাঘর"।

বন্দীরা নিজেদের ছাড়া আশেপাশে কখনো অন্য কাউকে দেখতে পেতনা বলে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার শাসনামলে পরিচালিত কারাগারটির এই নামকরণ করা হয়েছিল।

Image
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ এ নেয়া ফেসবুকের অসত্য পোস্টের স্ক্রিনশট

একই ছবি অন্যত্র ফেসবুকে এখানে এখানে শেয়ার করা হয়েছে।

তবে ছবিটি সিরিয়ার সায়দনায়া কারাগারের কোন বন্দীর নয়।

ভিয়েতনামের যুদ্ধ জাদুঘর

গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চে স্টক ফটো এজেন্সি আলামির ওয়েবসাইটে একই ধরনের একটি ছবি পাওয়া যায় (আর্কাইভ লিংক)।

ছবিটির ক্যাপশনে বলা হয়, "ভিয়েতনামের হো চি মিন সিটিতে যুদ্ধকালীন কারা জাদুঘরে বাঘের খাঁচা হিসেবে পরিচিত একটি সেলের পুনঃসংস্কার"।

অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের তথ্য মতে, "বিদেশী আগ্রাসী শক্তি কর্তৃক ভিয়েতনামের জনগণের ওপর যুদ্ধাপরাধ এবং এর পরিণতি অধ্যয়ন, সংগ্রহ, সংরক্ষণ এবং প্রদর্শনীর জন্য  ১৯৭৫ সালের ৪ সেপ্টেম্বর জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠা করা হয়" (আর্কাইভ লিংক)।

নিচে অসত্য পোস্টের ছবি (বামে) এবং আলামির ওয়েবসাইটের একই ছবির (ডানে) মধ্যে একটি তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেয়া হল:

Image
অসত্য পোস্টের ছবি (বামে) এবং আলামির ওয়েবসাইটের একই ছবির (ডানে) মধ্যে একটি তুলনামূলক স্ক্রিনশট

জাদুঘরের একই ধরনের ছবি এএফপিও তার গ্রাহকদের কাছে বিতরণ করেছে (আর্কাইভ লিংক)।

এ সংক্রান্ত অপর একটি কীওয়ার্ড সার্চে অসত্য পোস্টে যেমনটি দেখানো হয়েছে, সেরকম একটি দৃশ্য ২৪ মার্চে প্রকাশিত একটি ইউটিউব ভিডিওতে পাওয়া যায়। ভিডিওটির শিরোনামে বলা হয় "ভিয়েতনামে যুদ্ধকালীন জাদুঘর ঘুরে দেখা। একটি ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা" (আর্কাইভ লিংক)।

এএফপি সিরিয়ায় আসাদ সরকারের পতনকে কেন্দ্র করে ছড়ানো অন্যান্য বিভ্রান্তিকর তথ্য খন্ডন করে প্রতিবেদন করেছে এখানে, এখানে এখানে

এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?

আমাদের সাথে যোগাযোগ