ভারতে ভাঙচুর হওয়া মসজিদের ক্লিপকে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের সাথে অসত্যভাবে সম্পৃক্ত করে প্রচার
- প্রকাশিত 13 জানুয়ারি 2025, 15:41
- 3 এক্স মিনিটে পড়ুন
- লেখক: Eyamin SAJID, এএফপি বাংলাদেশ
- অনুবাদ এবং অভিযোজন Eyamin SAJID
কপিরাইট © এএফপি ২০১৭-২০২৫। এই কন্টেন্টের যেকোন বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
২৮ নভেম্বর ২০২৪ প্রকাশিত একটি ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, "শেরপুরের মুরশিদপুর দরবার শরীফের মসজিদ। এখন আপনার বিবেক কোথায়..?"।
পোস্টটিতে শেয়ার করা ২৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে একটি মসজিদের মেঝেতে ছড়ানো ছিটানো পোড়া বস্তু দেখা যায়।
২০২৪ সালের ২৭ নভেম্বর বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় শহর শেরপুর সদরের মুরশিদপুর দরবার শরিফে নামে একটি মুসলিম সুফি দরবারের ওপর কট্টোরপন্থী মুসলমানরা হামলা চালানোর পর পোস্টটি ছড়ানো হয় (আর্কাইভ লিংক এখানে ও এখানে)।
সুফিবাদ ইসলামের একটি শাখা। তবে সুন্নি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠদের মধ্যে কট্টরপন্থীরা সুফিবাদকে ধর্মদ্রোহী এবং বিচ্যুত বলে ভৎসনা করে থাকে (আর্কাইভ লিংক)।
দরবারে হামলার ঘটনাটি ২০২৪ সালের আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বাধীন অভ্যুত্থানে দীর্ঘ-সময়ের স্বৈরাচারী নেতা শেখ হাসিনার উৎখাতের পর থেকে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া হামলার ঝড়ের একটি অংশ (আর্কাইভ লিংক)।
হাসিনার উৎখাত পরবর্তী অস্থিতিশীল সময়ে কট্টরপন্থী ইসলামিস্টরা হিন্দু এবং মুসলিম সুফি দরবারের ওপর হামলা চালায়।
একই দাবিতে ভিডিওটি ফেসবুকে অন্যত্র এখানে ও এখানে শেয়ার করা হয়েছে।
তবে ক্লিপটি প্রকৃতপক্ষে ভারতে ধারণ করা হয়েছে।
ভারতের মসজিদ
গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চে ভিডিওটির একটি দীর্ঘ ভার্সন একটি ইনস্টাগ্রামে পোস্টে পাওয়া যায়, যা ২০২৪ সালের ৯ অক্টোবর পোস্ট করা হয়েছিল (আর্কাইভ লিংক)।
পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয় যে, ভিডিওটি উত্তর-পূর্ব ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কদমতলা বাজারে একটি মসজিদ ভাঙচুর পরবর্তী পরিস্থিতির।
নিচে অসত্য পোস্টে ছড়ানো ভিডিও (বামে) এবং ইনস্টাগ্রাম ভিডিওটির (ডানে) তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেয়া হল:
আরো কিওয়ার্ড সার্চে ভারতীয় গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান দি সিয়াসাত ডেইলিতে একই দৃশ্যের ছবিসহ একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায় (আর্কাইভ লিংক)।
এতে বলা হয়, ৭ অক্টোবর ২০২৪ ত্রিপুরার কদমতলায় সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষের সময় এক মুসলিম ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। এসময় একটি মসজিদ এবং বেশ কয়েকটি দোকান লুটপাট, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়।
হিন্দু উৎসবের জন্য চাঁদার দিতে স্থানীয় মুসলমানদের ওপর একটি হিন্দু ক্লাব "চাপ" প্রয়োগ করলে সংঘর্ষ শুরু হয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
ভারতীর গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান মিল্লাত টাইমস ১১ অক্টোবর ২০২৪ তার একটি ভিডিও প্রতিবেদনেও ভাংচুর হওয়া মসজিদটির ছবি রয়েছে (আর্কাইভ লিংক)।
এছাড়া অসত্য ছবিতে দৃশ্যমান মসজিদ এবং এর আশপাশের লোকেশনের সাথে গুগল স্ট্রিট ভিউর ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায় (আর্কাইভ লিংক)।
নিচে অসত্য পোস্টে ছড়ানো ভিডিও (বামে) এবং গুগল স্ট্রিট ভিউর ছবির (ডানে) যেসব মিল রয়েছে সেগুলো হাইলাইট করে একটি স্ক্রিনশট দেয়া হল:
হাসিনার উৎখাতের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসাতাকে কেন্দ্র করে ছড়ানো অন্যান্য অসত্য দাবি খণ্ডন করে এএফপি এখানে ও এখানে প্রতিবেদন করেছে।
এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?
আমাদের সাথে যোগাযোগ