
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি দখলদারিত্বকে 'অবৈধ' বলেছে জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত, ইসরায়েল রাষ্ট্রকে নয়
- প্রকাশিত 15 অক্টোবর 2024, 09:49
- 2 এক্স মিনিটে পড়ুন
- লেখক: এএফপি বাংলাদেশ
কপিরাইট © এএফপি ২০১৭-২০২৫। এই কন্টেন্টের যেকোন বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
গত ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ একটি ফেসবুক পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়, "ব্রেকিং নিউজ। আন্তর্জাতিক বিচার আদালত কর্তৃক ইসরায়েলকে অবৈধ রাষ্ট্র ঘোষণা করা হয়েছে।"
"এটিকে বিশ্বব্যাপী সার্বভৌম জাতি হিসেবে স্বীকৃতি না দেওয়ার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত, ন্যায়বিচারের জয় হয়েছে। আলহামদুলিল্লাহ এই ভিডিওটি যতটা সম্ভব শেয়ার করুন। ধন্যবাদ।"

তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড এর একটি ভিডিওসহ শেয়ার করা পোস্টটিতে ১৯ জুলাই ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ বিষয়ে আইসিজের 'এডভাইজরি ওপেনিয়ন' জারির পর ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রী রিয়াদ আল মালিকিকে গণমাধ্যমে কথা বলতে দেখা যায় (আর্কাইভ লিংক)।
এ সম্পর্কে নেদারল্যান্ডের হেগে মালিকি সাংবাদিকদের বলেছেন, "ফিলিস্তিন, ন্যায়বিচার এবং আন্তর্জাতিক আইনের জন্য এটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত।"
আইসিজের ওপেনিয়নকে "মিথ্যা সিদ্ধান্ত" বলে নিন্দা জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু (আর্কাইভ লিংক)।
একই ভিডিও ফেসবুকে এখানে ও এখানে ছড়িয়ে অসত্যভাবে দাবি করা হয়েছে যে, ইসরায়েলকে "অবৈধ রাষ্ট্র" ঘোষণা করা হয়েছে।
সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাদেশ ফিলিস্তিনিদের আকাঙ্খিত রাষ্ট্রের একনিষ্ঠ সমর্থক এবং ইসরায়েলের সাথে দেশটির কোন কূটনৈতিক সম্পর্কও নেই (আর্কাইভ লিংক)।
মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, ভারত, শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া এবং কেনিয়া থেকে সামাজিক মাধ্যমের ব্যবহারকারীরা একই ধরনের পোস্ট শেয়ার করার পর তা কয়েক হাজার বার দেখা হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর গাজায় শুরু হওয়া যুদ্ধের মধ্যে এই বিভ্রান্তিকর তথ্যটি ছড়ানো হয়েছে।
ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে এএফপির তৈরি করা তালিকা অনুযায়ী, ওই হামলায় ১,২০৫ জনের মৃত্যু হয়। যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক।
মিলিট্যান্টদের তুলে নেয়া ২৫১ জিম্মীর মধ্যে এখনো ৯৭জন গাজায় বন্দী এবং ৩৩ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী।
হামাস পরিচালিত ওই ভূ-খণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক সামরিক আক্রমণে অন্তত ৪১,৭৮৮ মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগ বেসামরিক নাগরিক।
নিহতদের এই সংখ্যাকে বিশ্বাসযোগ্য বলে বর্ণনা করেছে জাতিসংঘ।
আইসিজের রায়
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অনুরোধে ১৯ জুলাই ইস্যু করা একটি ননবাইন্ডিং এডভাইজরি ওপেনিয়নে আইসিজে বলেছে, ফিলিস্তিনিদের ভূখণ্ডে ইসরায়েলের ধারাবাহিক দখলদারিত্ব আন্তর্জাতিক আইন বিরোধী।
১৯৬৭ সালের জুনে ছয় দিনের এক যুদ্ধে ইসরায়েল তার কিছু আরব প্রতিবেশীকে গুড়িয়ে দিয়ে পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম দখলে নেয়, যা ওই সময় জর্ডান, সিরিয়ার গোলান হাইটস এবং মিশরের গাজা স্ট্রিপ এবং সিনাই উপদ্বীপ হিসেবে যুক্ত ছিল।
ইসরায়েল তখন দখলকৃত ভূমিতে বসতি স্থাপন শুরু করে। পরে জাতিসংঘ ফিলিস্তিনিনের ভূমিতে দখলদারিত্বকে অবৈধ ঘোষণা করে এবং ১৯৭৯ সালে ইসরায়েলের সাথে শাস্তি চুক্তির আওতায় কায়রো সিনাই উপদ্বীপ পুনরুদ্ধার করে।
দখলকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারসহ বসাতি নির্মাণ, ভূমির ওপর স্থায়ী নিয়ন্ত্রণ এবং ফিলিস্তিনিদের উপর বৈষম্যমূলক বিধি নিষেধের ইসরায়েলি নীতিকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করেছে আইসিজে।
দখলকৃত ফিলিস্তিনিদের ভূখণ্ডে ব্যবহার করা হতে পারে এমন আশঙ্কার ভিত্তিতে আদালত জাতি রাষ্ট্রগুলোকে ইসরায়েলকে অস্ত্র "সরবরাহ বন্ধ করার" পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে।
তবে ৮৩ পৃষ্ঠার ওপিনিয়নের কোথাও আদালত ইসরায়েলকে "অবৈধ রাষ্ট্র" ঘোষণা করেনি (আর্কাইভ লিংক)।
এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?
আমাদের সাথে যোগাযোগ