জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবে ফিলিস্তিনিদের জন্য পূর্ণ সদস্যপদ পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানানো হয়েছে

জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য হওয়ার বিষয়ে ফিলিস্তিনিদের প্রচেষ্টাকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমর্থন দিয়েছে সংস্থাটির সাধারণ পরিষদ। তবে ২০২৪ সালের মে মাস পর্যন্ত ফিলিস্তিনিরা বিশ্ব সংস্থাটির 'নন-মেম্বার অবর্জাভার স্টেট' হিসেবে স্বীকৃত আছে। কিন্তু সামাজিক সামাজিক মাধ্যমে সম্পূর্ণ অসত্যভাবে ফিলিস্তিনকে 'স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি' দেয়া হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। গাজায় যুদ্ধ পরিস্থিতির ভয়াবহতার মধ্যে ফিলিস্তিনিদের জন্য নিজস্ব রাষ্ট্র নিশ্চিত করার দাবি যখন জোরালে রূপ নিয়েছে এবং একই দাবির পক্ষে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সমর্থন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তখন পোস্টটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়াতে শুরু করে।

গত ১১ মে ২০২৪ ফেসবুকে প্রকাশিত একটি পোস্টে বলা হয়, "অভিনন্দন ফিলিস্তিন! জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের পূর্ণ সদস্যপদ লাভ করলো ফিলিস্তিন। তাও ১৪৩/৯ ভোটের ব্যবধানে।"

Image

জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্যপদের জন্য ফিলিস্তিনিদের চেষ্টার প্রতি বিশ্ব সংস্থাটির সাধারণ পরিষদ স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন দেয়ার একদিন পর পোস্টটি শেয়ার করা হয়েছে।

একই দাবিতে পোস্টটি ফেসবুকে অন্যত্র এখানে এবং ইন্দোনেশিয়ার ভাষায় এখানে এখানে শেয়ার করা হয়েছে।

গাজায় ইসরায়েলের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধেের তীব্রতার মধ্যে ফিলিস্তিনিদের জন্য নিজস্ব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি পুনরুজ্জীবিত হওয়ার পর থেকে এই পোস্টটি অনলাইনে ছড়ানো শুরু হয়। ফিলিস্তিনিদের জন্য নিজস্ব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবির প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক দেশ ক্রমেই সমর্থন জানিয়ে আসছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় হামাস। ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের তথ্যের উপর ভিত্তি করে এএফপির তৈরি তালিকা অনুযায়ী হামলায় বেসামরিক নাগরিক নিহত হন। হামাস মিলিট্যান্টরা এসময় আরো ২৫০জনকে জিম্মি হিসেবে নিয়ে যায়।

হামাসকে ধ্বংস করার শপথ নিয়ে গাজা উপত্যকায় প্রতিশোধমূলক আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল। হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলায় ৩৬,১৭১ জন নিহত হয়েছেন, যাদের অধিকাংশ নারী এবং শিশু।

ফিলিস্তিনের সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ভোটাভুটির আয়োজন করলেও বিশ্ব সংস্থাটি ফিলিস্তিনিদের পুর্ণাঙ্গ সদস্যপদ নিশ্চিত করেনি।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রস্তাব

ফিলিস্তিন রাষ্ট্র  জাতিসংঘের সদস্য হওয়ার জন্য যোগ্য এবং তা স্বীকার করার দাবি জানিয়ে ১০ মে ১৪৩ দেশের সমর্থনে প্রস্তাবটি পাশ হয় (আর্কাইভ লিংক)।

প্রস্তাবটিতে বলা হয়, সাধারণ পরিষদ "একইভাবে নিরাপত্তা পরিষদকে বিষয়টি ইতিবাচকভাবে পুনর্বিবেচনার সুপারিশ করছে"।

নিরাপত্তা পরিষদ থেকে একটি সবুজ সংকেত এবং সাধারণ পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠ দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের পর বিভিন্ন দেশ জাতিসংঘের কাছে দাবিটি জানিয়ে আসছে (আর্কাইভ লিংক)।

গাজায় যুদ্ধের তীব্রতা বৃদ্ধির মধ্যে জাতিসংঘের পূর্ণাঙ্গ সদস্যপদ লাভের জন্য ২০১১ সালের একটি আবেদন ফিলিস্তিনিরা এপ্রিল মাসে পুণরায় উত্থাপন করে।

গত ১৮ এপ্রিল নিরাপত্তা পরিষদের ১২ সদস্য ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্যপদ দেয়ার একটি সুপারিশ সমর্থন করে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের কট্টর মিত্র দেশগুলো ওই সুপারিশের বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। প্রস্তাবটি আটকে দিতে তারা নিজেদের ভেটো ব্যবহার করেন।

 

গত ৩০ মে পর্যন্ত জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে সদস্য রাষ্ট্রের তালিকায় ফিলিস্তিনের নাম অর্ন্তভুক্ত ছিল না। ফিলিস্তিনকে নন-মেম্বার রাষ্ট্র হিসেবে তালিকাভুক্ত দেখা যায় (আর্কাইভ লিংক এখানে এখানে)।

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত ঘিরে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর তথ্য খণ্ডন করে এএফপি আরো প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এখানে

এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?

আমাদের সাথে যোগাযোগ