নিউজিল্যান্ডে জাহাজ থেকে তেল ছড়িয়ে পড়ার পুরনো ছবিকে অসত্য দাবিতে প্রচার 

গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকে লোহিত সাগরে বিভিন্ন জাহাজে ড্রোন ও মিসাইল হামলা চালিয়ে আসছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। তবে সামাজিক মাধ্যমের পোস্টে আশঙ্কাজনকভাবে হেলে থাকা কনটেইনারসহ একটি কার্গো জাহাজের ছড়ানো ছবির সাথে হুতিদের হামলার কোন যোগসাজোস নেই। নিউজিল্যান্ডের নৌবাহিনী একটি ফেসবুক পোস্টে ছবিটি প্রকাশ করে সেটিকে ২০১১ সালে সমুদ্রে আটকে যাওয়া জাহাজ বলে জানিয়েছে।

গত ৮ মে ফেসবুকে শেয়ার করা একটি পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়, "ইসরায়েলের জাহাজ কে লক্ষ্য করে, লোহিত সাগরে ইয়েমেনের খেলোয়াড়েরা আরেকটি গোল করেছে।"

Image

নিজেদের আক্রমণকে ইসরাইল-হামাস যুদ্ধের প্রতিশোধ হিসেবে বর্ণনা করে ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা লোহিত সাগর এবং এডেন উপসাগরে ড্রোন এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করেছে।

ইরান-সমর্থিত বিদ্রোহী গোষ্ঠির আক্রমণের জবাবে মার্কিন এবং ব্রিটিশ বাহিনীকে পাল্টা হামলা চালাতে এবং গুরুত্বপূর্ণ এই শিপিং লেন রক্ষার জন্য একটি আন্তর্জাতিক জোট গঠনের উজ্জীবত করে।

একই ধরনের ফেসবুক পোস্টে ছবিটি এখানেএখানে শেয়ার করা হয়।

নিউজিল্যান্ডের দুর্যোগ

গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চে ছবিটি পাওয়া যায়, যা রয়াল নিউজিল্যান্ড নেভির ফেসবুক পেইজে গত ৫ অক্টোবর ২০২০ তারিখে পোস্ট করা হয়েছিল (আর্কাইভ লিংক)।

ফেসবুক পোস্টের তথ্য মতে, ছবিটিতে ২০১১ সালে সামুদ্রিক প্রবালে আঘাত করার পরে নিউজিল্যান্ডের উপকূলে আটকা পড়া রেনা কনটেইনার জাহাজকে দেখা যায়।

নিচে অসত্যভাবে শেয়ার করা ছবি (বামে) এবং রয়াল নিউজিল্যান্ড নেভি'র প্রকাশিত ছবির (ডানে) তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেয়া হল:

Image

লাইবেরিয়ান-পতাকাবাহী জাহাজটি প্রবালের সাথে ধাক্কা খেয়ে আটকে গেলে সমুদ্রে তেলের একটি আস্তরণ ছড়িয়ে পড়ে। এতে হাজার হাজার সামুদ্রিক পাখি মারা যায় এবং এ ঘটনায় দেশটির নর্থ আইল্যান্ডের পরিচ্ছন্ন বে অব প্লেন্টি দূষিত হয়ে ওঠে।

দুর্ঘটনাটি জনসাধারণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। ধাক্কা খেয়ে জাহাজটির তলদেশ ফেটে যায় আর সমুদ্রের ভারি ঢেউয়ের সাথে সেখান থেকে তেল ছড়িয়ে পড়ে। ফলে রেনার জ্বালানী ট্যাঙ্ক থেকে অবশিষ্ট তেল তুলে আনার জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ উদ্ধার অভিযান চালাতে হয়েছিল।

নিউজিল্যান্ডের সবচেয়ে বড় সামুদ্রিক দূষণের বিপর্যয়ে নিজেদের ভূমিকার কারণে জাহাজের ক্যাপ্টেন এবং সেকেন্ড অফিসারকে ২০১২ সালে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।

এএফপি এক দিকে কাত হয়ে আটকে থাকা জাহাজের চারপাশে ঢেউ আছড়ে পড়ার ফুটেজ প্রকাশ করেছে।

(AFPTV / POOL / -)

এর আগে লোহিত সাগরে জাহাজে হুতিদের হামলার অসত্য দাবিতে অনলাইন ছড়ানো ছবি ও ভিডিওর ফেক্ট চেক করেছে এএফপি

গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে নিজিরবিহীন আক্রমণ চালালে গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়। ইসরায়েলের কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে এএফপির তৈরি তালিকা অনুযায়ি, হামাসের আকষ্মিক হামলায় অধিকাংশ বেসামরিক নাগরিকসহ ১,১৭০ জন নিহত হয়েছে।

হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের পাল্টা অভিযানে গাজায় অন্তত ৩৫, ৯০০ লোক নিহত হয়েছেন। যাদের অধিকাংশ বেসামরিক লোক এবং নারী ও শিশু।

এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?

আমাদের সাথে যোগাযোগ