মেট্রাে ট্রেনে দুই নারীর নাচের ভিডিওটি ভারতের, বাংলাদেশের নয়

 

ভারতের একটি ট্রেনের বগিতে ধারণ করা দুই নারীর অন্তরঙ্গ নৃত্য পরিবেশনের একটি ফুটেজকে সম্পূর্ণ বিপরীতভাবে সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করে ঘটনাটি বাংলাদেশে ঘটেছে বলে অসত্যভাবে দাবি করা হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমের এসব পোস্টে ওই দুই নারীর বিরুদ্ধে রক্ষণশীল মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে 'সমকামীতাকে উৎসাহিত' করার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে দিল্লি মেট্রোর একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে, নাচের ঘটনাটি ভারতে রাজধানীতে ঘটেছে। "উৎপাত" এবং "অশ্লীল কাজ ও গান" সংক্রান্ত আইন ভঙ্গ করার অভিযোগে পুলিশ ওই নারীর বিষয়ে তদন্ত করছে দেশটির পুলিশ।

ভিডিওটিতে দু'জন নারীকে ট্রেনের বগির মেঝেতে বসে একে অপরের গায়ে রঙিন পাউডার মাখিয়ে দিতে দেখা যায়। এ সময় ভিডিওটির ব্যাকগ্রাউন্ডে বাংলা প্রেমের গান শুনতে পাওয়া যায়।

ভারতে যে সময়ে হিন্দু ধর্মের রংয়ের উৎসব হলি উদযাপন করা হচ্ছিল, ঠিক তখন গত ২৪ মার্চ ভিডিওটি ফেসবুকে শেয়ার করা হয়েছে (আর্কাইভ লিংক)।

Image

পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়: "বাংলাদেশ নারীরা আসলেই স্বাধীন, তাদের যা ইচ্ছে করার সুযোগ রয়েছে। আর দিন দিন সমকামিতাকে প্রমোট করছে।"

এলজিবিটিকিউ শ্রেণিভুক্ত মানুষজন এখনও বাংলাদেশে ব্যাপক বৈষম্যের সম্মুখীন হচ্ছেন।  ট্রান্সজেন্ডার শ্রেণিভুক্ত মানুষেরা সমাজে ক্রমশ দৃশ্যমান হয়ে উঠলেও সমকামী যৌনতাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য কারাদণ্ডের মতো ঔপনিবেশিক যুগের একটি আইন এখনও বলবৎ রয়েছে। যদিও এই আইনের খুব একটি বাস্তবায়ন দেখা যায় না।

একই ধরণের ফেসবুক পোস্টে এখানেএখানে ভিডিওটি শেয়ার করে এটি বাংলাদেশে ধারণ করা হয়েছে বলে অসত্যভাবে দাবি করা হয়েছে।

দিল্লিতে হলির ভিডিও

গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চে ভারত ভিত্তিক একটি ইনস্টাগ্রাম একাউন্টে ভিডিওটি পাওয়া, যায় গত ২১ মার্চ তারিখে পোস্ট করা হয়েছে (আর্কাইভ লিংক)।

'হ্যাপী হলি' শীর্ষক ক্যাপশনের ভিডিওটিতে 'রোমিও এ্যান্ড জুলিয়েট'-র ভারতীয় সংস্করণ হিন্দি গান 'আগ লাগা দে' শুনতে পাওয়া যায়। কিন্তু কোনো বাংলা গান ছিল না।

নিচে অসত্য দাবিতে শেয়ার করা পোস্টের ভিডিও (বামে) এবং ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা ভিডিওটির (ডানে) তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেয়া হলো:

Image

ভারতের সংবাদ মাধ্যম টাইমস নাউ এক প্রতিবেদনে জানায় যে, দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তর প্রদেশ এবং উত্তরাখন্ড থেকে আসা ভিডিওটির ওই দুই নারী দিল্লিতে বাস করেন (আর্কাইভ লিংক)।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ওই জুটি এবং তাদের একজন পুরুষ বন্ধু ফুটেজটির জন্য আইনি প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হয়েছেন। এছাড়া স্কুটারে চলন্ত অবস্থায় স্টান্ট করার জন্যেও এর আগে তাদেরকে জরিমানা করা হয়েছিল।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, মেট্রো রেলে "অশ্লীল কাজ ও গান" এবং "মাতালতা বা উৎপাত" সংক্রান্ত আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে ওই নারীদের বিষয়ে তদন্ত করছে দিল্লি পুলিশ (আর্কাইভ লিংক)।

ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়েছে বলে গত ২ এপ্রিল এএফপিকে নিশ্চিত করেন দিল্লি মেট্রো রেল কর্পোরেশনের একজন কর্মকর্তা।

এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?

আমাদের সাথে যোগাযোগ