ভারতে মসজিদের জন্য সম্পদ দানের বিষয়ে আসিফ আজিজ প্রকাশ্যে প্রতিশ্রুতি দেননি
- নিবন্ধটি এক বছরেরও বেশি পুরনো।
- প্রকাশিত 8 এপ্রিল 2024, 15:04
- আপডেট করা হয়েছে 16 অক্টোবর 2025, 13:27
- 2 এক্স মিনিটে পড়ুন
- লেখক: এএফপি বাংলাদেশ
কপিরাইট © এএফপি ২০১৭-২০২৫। এই কন্টেন্টের যেকোন বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
সামাজিক মাধ্যমে বারংবার শেয়ার করা পোস্টে অসত্যভাবে দাবি করা হয়েছে যে, ভারতে বিতর্কিত হিন্দু মন্দিরের পাশে মসজিদ নির্মাণের জন্য লন্ডনের ধনকুবের আসিফ আজিজ ৫০০০ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছেন। ব্রিটেনের সংবাদপত্র টেলিগ্রাফের সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই প্রকল্পের জন্য তার সম্পদ 'উৎসর্গ' করার কথা বলেছেন বলে দাবি করা হয়। তবে মসজিদ নির্মার্ণের দায়িত্বে থাকা ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, ১ এপ্রিল পর্যন্ত তারা কোন বিদেশি অনুদান গ্রহণ করেনি। অন্যদিকে আজিজের একজন মুখপাত্র ভারতে মসজিদ নির্মাণে কোন অনুদান দেননি বলে এএফপিকে জানিয়েছেন। টেলিগ্রাফের ওয়েবসাইটেও কথিত প্রতিবেদনের কোনো চিহ্ন খুঁজে পায়নি এএফপি।
গত ২ মার্চ অসত্য দাবিতে পোস্টটি ফেসবুকে ছড়ানো হয়। অযোধ্যায় রাম মন্দিরের পাশে মসজিদ নির্মাণের জন্য ৫,০০০ কোটি টাকা দান করে আসিফ আজিজ বিশ্বের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন বলে পোস্টটিতে দাবি করা হয়।
গত জানুয়ারিতে কয়েক শতাব্দী ধরে বিদ্যমান থাকা বাবরি মসজিদের জয়গায় নতুন করে নির্মাণ করা বিতর্কিত মন্দির উদ্বোধন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ১৯৯২ সালে মোদির ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির সদস্যদের উস্কানিতে উগ্রবাদী হিন্দুরা মসজিদটি ভেঙ্গে ফেলে।
মসজিদটি ভাঙ্গার জেরে দেশজুড়ে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে ২০০০জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই ছিল মুসলিম। এতে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক ব্যবস্থার ভিত্তি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রশ্নের মুখে পড়ে।
বাবরি মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণ ঘিরে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর ভারতের শীর্ষ আদালত শহর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে একটি নতুন মসজিদ নির্মাণের জন্য এক খণ্ড জমি নির্ধারণ করে দেয়।
পোস্টটিতে একটি ভিডিও দেখানো হয়েছে যেখানে দাবি করা হয়েছে যে, লন্ডন-ভিত্তিক আসান ব্যবসায়ী এবং জনহিতৈষী আজিজ দ্য টেলিগ্রাফের সাথে একটি সাক্ষাত্কারে অনুদানের কথা ঘোষণা করেছেন।
ভিডিওটিতে একজন উপস্থাপক বলেন: "যুক্তরাজ্যের সংবাদপত্র দ্য টেলিগ্রাফের সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'মসজিদ নির্মাণ করতে শুধু টাকা নয়, হিম্মত ও সাহসের প্রয়োজন। রাম মন্দিরের পাশে বাবরের ঐতিহ্য ধরে রাখতে আমি আমার সমস্ত সম্পত্তি দান করতে প্রস্তুত রয়েছি।"
ভিডিওটিতে টেলিগ্রাফের কথিত প্রতিবেদনের কোন স্ক্রিনশট অথবা কোন লিংক দেখানো হয়নি।
একই দাবিতে পোস্টটি ফেসবুকে অন্যত্র এখানে এবং ইউটিউবে এখানে শেয়ার করা হয়।
'কোনো সম্পৃক্ততা নেই'
গত ১ এপ্রিল মসজিদ নির্মাণের দায়িত্বে থাকা ইন্দো-ইসলামিক কালচারাল ফাউন্ডেশনের একজন প্রতিনিধি এএফপিকে জানান, এখন পর্যন্ত বিদেশি অনুদান গ্রহণ করার জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতি নেই প্রতিষ্ঠানটি।
ফাউন্ডেশনের সচিব আতহার হুসাইন বলেন, "বিদেশি অনুদানের জন্য অনুমোদন দেওয়ার আগে অ্যাকাউন্টের তথ্য পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই প্রক্রিয়া রয়েছে।"
আজিজের একজন মুখপাত্র পৃথকভাবে এএফপিকে জানিয়েছেন, তিনি মসজিদের পরিকল্পনা বা অর্থায়নের সাথে সম্পৃক্ত নন।
ফ্লেমপিআর জনসংযোগ সংস্থার ওই প্রতিনিধি বলেন, "আমরা স্পষ্ট করতে চাই সামাজিক মাধ্যমের দাবিগুলি অসত্য এবং বিভ্রান্তিকর। জনাব আসিফ আজিজ অযোধ্যায় মসজিদ নির্মাণের জন্য কোন অনুদান কিংবা ৫,০০০ কোটি টাকার দানের ঘোষণা দেননি। এমনকি তিনি কোনভাবে মসজিদটির পরিকল্পনা বা অর্থায়নের সাথে জড়িত হননি।"
দ্য টেলিগ্রাফের ওয়েবসাইটে কিওয়ার্ড অনুসন্ধানে আজিজ এবং মসজিদ সম্পর্কে মাত্র একটি প্রতিবেদন পাওয়া গেছে।
'লন্ডনের ট্রকাডেরোতে মসজিদ নির্মাণ হতে পারে' শীর্ষক শিরোনামের প্রতিবেদনটি ২০২৩ সালের ১৬ জুলাই প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটিতে লন্ডনের ওয়েস্টইন্ডে বিনোদন অবকাঠামো ট্রকাডেরোতে মসজিদ নির্মাণে আজিজের পরিকল্পনার কথা বলা হয় (আর্কাইভ লিংক)।
তবে রাম মন্দিরের পাশে মসজিদ নির্মাণের বিষয়ে প্রতিবেদনটিতে কিছু বলা হয়নি।
মেটাডাটা যোগ করতে এই প্রতিবেদনটি আপডেট করা হয়েছে১৬ অক্টোবর, ২০২৫ মেটাডাটা যোগ করতে এই প্রতিবেদনটি আপডেট করা হয়েছে
এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?
আমাদের সাথে যোগাযোগ