তলোয়ার চালানোর নৈপুন্য প্রদর্শনকারী এই নারী রাজস্থানের উপ-মুখ্যমন্ত্রী নন

একজন তলোয়ারযুদ্ধ প্রশিক্ষকের কৌশল প্রদর্শনের ভিডিওকে সামাজিক মাধ্যমের পোস্টে বারবার শেয়ার করে কৌশল প্রদর্শনকারী নারীকে ভারতের রাজস্থান রাজ্যের নবনিযুক্ত উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে অসত্য দাবি করা হয়েছে। একটি রাজকীয় যোদ্ধা বংশে জন্ম নেয়া দিয়া কুমারী গত ডিসেম্বরে রাজস্থানের উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর অনলাইনে অসত্যসহ ভিডিওটি ছড়াতে শুরু করে।

চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি ফেসবুকে এখানে শেয়ার করা একটি ভিডিও পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়: "রাজকুমারী শ্রীমতি দিয়া কুমারী, উপ-মুখ্যমন্ত্রী (রাজস্থান)।

Image

গত ডিসেম্বরে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজস্থান রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জয়ের পর দিয়া কুমারীকে উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় (আর্কাইভ লিংক এখানে এবং এখানে)।

স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দিয়া কুমারী রাজস্থানের জয়পুর শহরের শেষ রাজা দ্বিতীয় মান সিংয়ের নাতনী এবং রাজপুত যোদ্ধা সম্প্রদায়ের উত্তরসূরী।

এক মিনিট ২১ সেকেন্ডর ভিডিওটিতে শাড়ি পরিহিত একজন নারীকে উচ্ছ্বসিত জনতার সামনে একটি তলোয়ার উঁচিয়ে নৈপুন্য প্রদর্শন করতে দেখা যায়। এসময় হিন্দু দেবতা রামকে উৎসর্গ করে বাজানো গান শুনতে পাওয়া যায় ভিডিও ব্যাকগ্রাউন্ডে।

একই দাবিতে ভিডিওটি ফেসবুকে এখানে এবং এখানে শেয়ার করা হয়।

তবে ভিডিওটিতে দৃশ্যমান নারী রাজস্থানের উপ-মুখ্যমন্ত্রী কুমারী নন। বরং নৈপুন্য প্রদর্শনকারী নারী গুজরাট রাজ্যের একজন পেশাদার তলোয়ারযুদ্ধ প্রশিক্ষক।

ভুল পরিচয়

ভিডিওটির কী-ফ্রেম দিয়ে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চে ২২ জানুয়ারি ইনস্টাগ্রামে নিকিতাবা রাথোঢ় নামে এক নারীর আপলোড করা একই ভিডিও পাওয়া যায় (আর্কাইভ লিংক)।

পোস্টটির গুজরাটি ভাষার ক্যাপশনে বলা হয়: "সর্বত্র একই নাম, জয় শ্রী রাম, জয় শ্রী রাম।"

ক্যাপশনটি হিন্দু দেবতা রামকে নির্দেশ করে। আর ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের অযোধ্যায় যেদিন বিতর্কিত রাম মন্দির উদ্বোধন করা হয়, ঠিক ওইদিনই ভিডিওটি শেয়ার করা হয়।

নিচে অসত্য দাবিতে ছড়ানো ভিডিওটির (বামে) এবং  ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা ক্লিপের (ডানে) সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ বিষয়ের তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেয়া হল:

Image

রাথোঢ় এএফপিকে জানান, তার ভিডিওটি "অসত্য দাবিসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয়েছে"।

তিনি বলেন, "অযোধ্যায় রাম মন্দির উদ্বোধন উদযাপন উপলক্ষে জানুয়ারির ২২ তারিখে আহমেদাবাদে আয়োজিত একটি  অনুষ্ঠানে আমি এই স্টান্ট প্রদর্শন করেছিলাম।"

গুজরাটের সবচেয়ে বড় শহর হচ্ছে আহমেদাবাদ।

নিজেকে একজন তলোয়ারযুদ্ধের প্রশিক্ষক হিসেবে পরিচয় দেন রাথোঢ়।  শিশুদের প্রশিক্ষণ দেয়ার ভিডিও দেখা যাবে তার ইনস্টাগ্রাম এবং ইউটিউব চ্যানেলে এখানে এখানে (আর্কাইভ এখানে এখানে)।

নিচে ইনস্টাগ্রাম থেকে রাথোঢ়ের ছবি (বামে) এবং এএফপি ফোরামের ওয়েবসাইট থেকে দিয়া কুমারীর ছবি (ডানে) দেয়া হল:

Image

এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?

আমাদের সাথে যোগাযোগ