ছবিটি ২০১১ সালে জাপানে অঘাত হানা সুনামির, ২০২৪ সালে ভূমিকম্প পরবর্তী দৃশ্যের নয়
- প্রকাশিত 21 জানুয়ারি 2024, 13:04
- 2 এক্স মিনিটে পড়ুন
- লেখক: এএফপি বাংলাদেশ
কপিরাইট © এএফপি ২০১৭-২০২4। এই কন্টেন্টের যেকোন বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
জানুয়ারির ১ তারিখে ফেসবুকে এখানে শেয়ার করা একটি বাংলা অনলাইন নিউজ পোর্টালের শিরোনামে বলা হয়: "বছরের প্রথম দিনে জোরালো ভূমিকম্প জাপানে, জারি সুনামি সতর্কতা।"
পোস্টে ব্যবহৃত ছবিতে একটি বিশাল ঢেউয়ের সাথে শহর রক্ষা বাঁধের উপর রাখা কয়েকটি গাড়ি উপকূলীয় রাস্তার ওপর ভেসে যেতে দেখা যায়।
নতুন বছরের প্রথম দিন জাপানের পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় শহর ইশিকাওয়াতে ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানার দিন থেকে ছবিটি অনলাইনে ছড়াতে শুরু করে। ভূমিকম্পে ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ৬২ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।
ভূমিকম্পে শহরের শত শত ভবন ভেঙে পড়ে, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাসহ বহু সড়ক ফেটে চৌচির হয়ে যায়। ভারী বৃষ্টিপাত এবং ভূমিধ্বসের সতর্কতার মধ্যে উদ্ধারকারীরা জীবিতদের সন্ধানে জোরালো অভিযান চালায়।
ভূমিকম্পের তীব্রতা সুনামিতে রূপ নিয়ে এক মিটারেরও বেশি উচ্চতার ঢেউ আকারে ইশিকাওয়ার ওয়াজিমা বন্দরে আঘাত হানে। কিছু কিছু জায়গায় ছোট আকারের সুনামির খবর পাওয়া যায়। তবে বড় আকারে সামুদ্রিক ঢেউয়ের খবর পাওয়া যায়নি। একই সঙ্গে ২রা জানুয়ারি জাপান সুনামির সমস্ত সতর্কতা তুলে নেয়।
একই প্রেক্ষাপটে অন্য সংবাদমাধ্যমও তাদের ওয়েবসাইটে এখানে এবং এখানে ছবিটি প্রচার করে। পাশাপাশি এসব সংবাদমাধ্যমের ফেসবুকে পেইজে এখানে এবং এখানে শেয়ার করে।
তবে ছবিটি নতুন বছরের প্রথম দিনে জাপানে আঘাত হানা ভূমিকম্প পরবর্তী পরিস্থিতির নয়।
২০১১ সালের ভূমিকম্প পরবর্তী পরিস্থিতি
গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ করে এএফপি প্রকাশিত একই রকম একটি ছবি খুঁজে পাওয়া যায়, যেখানে ২০১১ সালের মার্চ মাসে জাপানে আঘাত হানা ৯.০-মাত্রার বিধ্বংসী ভূমিকম্প পরবর্তী সুনামির দৃশ্যের বিষয়ে বিবরণ দেয়া হয়।
ছবিটির ক্যাপশনে বলা হয়: "২০১১ সালের ১১ মার্চ মিয়াকো শহরের কর্মকর্তারা এই ছবিটি ধারণ করেছিলো এবং ওই মাসের ১৮ তারিখ ছবিটি প্রকাশ করেছিলো। এতে দেখা যায় যে, জাপানের উত্তরাঞ্চলে ৯.০-মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানার সঙ্গে সঙ্গে একটি সুনামি শহর রক্ষা বাঁধ ভেঙে মিয়াকো শহরের দিকে ধাবিত হচ্ছে।"
ছবিটির ক্যাপশনে আরো বলা হয়েছে: "এক সপ্তাহ আগে বিধ্বংসী ভূমিকম্প এবং সুনামিতে ধ্বংসস্তুপে পরিণত হওয়া জাপানের উত্তরাঞ্চলে মোট প্রাণহানি ও নিখোঁজের অফিসিয়াল সংখ্যা ১৬,৬০০ দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে ৬,৪০৫ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে।"
তখন জাপানের মন্ত্রিসভা অফিস জানিয়েছিল, ১১ মার্চের বিধ্বংসী ভূমিকম্প ও সুনামির ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ঘরবাড়ি, শিল্প কারখানা এবং সড়ক ও সেতু মেরামত বাবাদ পরবর্তী তিন বছর ২৫ ট্রিলিয়ন ইয়েনের বেশি ব্যয় করে হবে।
নিচে অসত্য দাবিতে অনলাইন সংবাদমাধ্যমে শেয়ার করা পোস্টের ছবি (বামে) এবং এএফপির ধারণ করা ২০১১ সালের সুনামির ছবির (ডানে) তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেয়া হলো:
গুগুল স্ট্রিট ভিউতে মিয়াকো শহরের তোলা ছবির সাথেও অসত্য দাবিতে ছড়ানো ছবিটির মিলে পাওয়া যায় (আর্কাইভ এখানে)।
এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?
আমাদের সাথে যোগাযোগ