ছবিটি রাশিয়ান শিল্পীর তৈরি একটি ভাস্কর্যের, শ্রীকৃষ্ণের হৃৎপিণ্ডের নয়

  • নিবন্ধটি এক বছর পুরনো
  • প্রকাশিত 29 জুলাই 2023, 07:34
  • 2 এক্স মিনিটে পড়ুন
  • লেখক: এএফপি বাংলাদেশ
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে এটি একটি কাঠের মূর্তি যার ভেতর হিন্দু ধর্মের দেবতা কৃষ্ণের 'স্পন্দিত ও নিরাপদ' হৃদয় যা পূর্ব ভারতের একটি মন্দিরে সংরক্ষিত আছে। কিন্তু ছবিটি মূলত রাশিয়ান একজন শিল্পী দিমিত্রি সাইকালোভের তৈরি একটি ভাস্কর্যের যা তিনি ২০০১ সালে তৈরি করেন। তিনি এএফপি'কে জানান, তার এই শিল্পকর্মটি প্যারিসের একটি গ্যালারিতে সংরক্ষিত আছে।

ছবিটি গত ১৫ মে তারিখের একটি ফেসবুক পোস্টে শেয়ার করা হয়।

পোস্টটির ক্যাপশনের অংশবিশেষে লেখা রয়েছে, "তাঁর হৃদয় আজ পর্যন্ত নিরাপদ, যা খুব কম মানুষই জানেন। ভগবান জগন্নাথ কাঠের মূর্তির ভিতরে অধিষ্ঠান করে একইভাবে প্রহার করেন! মহাপ্রভুর মহা রহস্য সোনার ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করা হয়....! মহাপ্রভু জগন্নাথ (শ্রী কৃষ্ণ) কে কলিযুগের ঈশ্বরও বলা হয়।
প্রতি 12 বছর পর পর মহাপ্রভুর মূর্তি বদলানো হয়, সেই সময় পুরো পুরী শহরে কালো আউট হয়, অর্থাৎ পুরো শহরের বাতি নিভিয়ে দেওয়া হয়, লাইট নিভানোর পর মন্দির চত্বর ঘিরে ফেলা হয়।"

Image
( Mohammad MAZED)

জগন্নাথ মন্দিরটি ভারতের ওড়িষ্যা রাজ্যের পুরী শহরে অবস্থিত।

ছবিটি হিন্দী ভাষায় একইরকম ক্যাপশন সহকারে ফেসবুকে এখানে শেয়ার করা হয়।

তবে ছবির একটি কাঠের হৃদমূর্তিটি ২০০১ সালে এক রাশিয়ান শিল্পীর তৈরি একটি শিল্পকর্মের।

গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চে দেখা যায় ছবিটি ২০১৩ সালের ২৯ মার্চ রাশিয়ান সংবাদমাধ্যম 'বুরো ২৪/৭' এ প্যারিস আর্ট ফেয়ার নিয়ে প্রকাশিত একটি রিভিউতে (আর্কাইভ লিঙ্ক) প্রকাশিত হয়।

রিভিউটিতে লেখা রয়েছে যে রাশিয়ান শিল্পী দিমিত্রি সাইকালোভের তৈরি হৃদপিণ্ড সদৃশ কাঠের শিল্পকর্মটি প্যারিসের গ্যালারি রাবোয়া মুসিয়ো প্রদর্শিত হয়।

প্রতিবেদনটিতে লেখা রয়েছে, "এবছরের প্যারিস আর্ট ফেয়ারের অন্যতম আকর্ষণ হলো এতে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সমসাময়িক রাশিয়ান আর্টের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রদর্শনী হচ্ছে।"

নীচে বিভ্রান্তিকর পোস্টের ছবির (বামে) ও বুরো ২৪/৭ এ প্রকাশিত ছবির (ডানে) তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেয়া হলো:

Image

ফ্রেঞ্চ সমসাময়িক আর্ট ম্যাগাজিন 'আর্টস হেবদো মিডিয়া'তেও সাইকালোভের তৈরি শিল্পকর্মের বলে ছবিটি প্রকাশিত (আর্কাইভ লিঙ্ক) হয়।

সাইকালোভ ২৫ জুন এএফপি'কে বলেন যে তিনি ২০০১ সালে শিল্পকর্মটি তৈরি করেন যা পরের বছর ২০০২ সালে ফ্রান্সের একটি প্রদর্শনীতে স্থান পায়।

তিনি বলেন, "আমি প্যারিসের গ্যালারি রাবোয়া মুসিয়োর সাথে কাজ করি। গ্যালারিটিতে আমার এই কাজটি সংরক্ষিত আছে।"

তিনি এএফপি'কে তার এই শিল্পকর্মটির একটি ছবিও পাঠান যেখানে গ্যালারিটি মানুষের অন্যান্য অঙ্গের সদৃশ তৈরী শিল্পকর্মও আছে।

Image

সাইকালোভের ওয়েবসাইটেও (আর্কাইভ লিঙ্ক) শিল্পকর্মটির একটি ছবি পাওয়া যায়।

নীচে সাইকালোভের ওয়েবসাইটে থাকা ছবিটির একটি স্ক্রিনশট দেওয়া হলো:

Image

এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?

আমাদের সাথে যোগাযোগ