ভারতে ট্রেন দুর্ঘটনার স্থানের পাশে মসজিদ থাকার ভুয়া দাবি

  • নিবন্ধটি এক বছর পুরনো
  • প্রকাশিত 21 জুন 2023, 10:59
  • 2 এক্স মিনিটে পড়ুন
  • লেখক: এএফপি বাংলাদেশ
কয়েক দশকের মধ্য ভারতে অন্যতম ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার পর একটি ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে ছবিতে একটি মসজিদ দেখা যাচ্ছে এবং এর মাধ্যমে দুর্ঘটনাটির সাথে মুসলমানদের সম্পৃক্ততা থাকার দাবি করা হচ্ছে। তবে এএফপি'র একজন সাংবাদিক সরেজমিন ওড়িশ্যার স্থানটিতে গিয়ে নিশ্চিত হয়েছেন যে, ছবিটিতে দৃশ্যমান স্থাপনাটি মূলত হিন্দুদের একটি মন্দির। স্থানীয় পুলিশ ঘটনাটির তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে এবং ঘটনাটির সাথে সাম্প্রদায়িক কোন সম্পর্কের সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিয়েছে।

ছবিটি গত ৪ জুন ফেসবুকে এখানে শেয়ার করা হয়।

Image
( Mohammad MAZED)

ছবিতে ট্রেন দুর্ঘটনাস্থলের পাশে একটি সাদা ভবন দেখা যাচ্ছে।

পোস্টটির ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “বালেশ্বরে চেন্নাই গামী ট্রেনের ভয়াবহ দূর্ঘটনাটি আমার এই অবধি স্বাভাবিক মনে হয় নি!তবে এখনো আমি কনফিন্ডেন্সলি কিছুই বলতে চাই না কারণ এটা অনেক সেনসিটিভ ইস্যু!তবে এই ঘটনায় তিনটি পয়েন্ট যুক্ত করছি---- ১.দিনটি শুক্রবার ছিল! ২.বালেশ্বরে যে স্থানে ভয়াবহ ট্রেন দূর্ঘটনা হয়েছে তার পাশেই রয়েছে মায়ানমার থেকে আগত প্রায় ২ হাজার রোহিংগা মুসলিমের বাস! আপনারা ছবিতে লাল মার্ক করা দেখবেন রোহিংগাদের জন্য পাশেই তৈরী হয়েছে বৃহৎ মসজিদ! ৩.দূর্ঘটনায় আক্রান্ত ট্রেনের স্টেশন মাষ্টার ছিল মোহাম্মদ শরিফ!মানলাম এটা দূর্ঘটনায় ছিল তবে আজ ৩ দিন ধরে মোহাম্মদ শরিফ পালাতক কেন??”

ওড়িশ্যার বালাশোরে সংঘটিত এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় প্রায় ৩০০ মানুষ নিহত হন।

ছবিটি একইরকম দাবি সহকারে ফেসবুকে এখানে এখানে শেয়ার করা হয়।

৫ জুনের এএফপি'র প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতের রেলওয়ে মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব এই ঘটনাটি “ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং এর পরিবর্তনের” কারণে সংঘটিত হয়েছে বলে মতামত দিয়েছেন।

ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং ট্রেনগুলোকে সংঘর্ষ থেকে রক্ষা করার জন্য তাদের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার একটি জটিল প্রক্রিয়া।

ভারতের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে ঘটনাটিকে সিগন্যালিংয়ের ভুলের ফলাফল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

তবে দাবিটি অসত্য। ছবিটিতে দৃশ্যমান সাদা রংয়ের স্থাপনাটি কোন মসজিদ নয়।

হরে কৃষ্ণ মন্দির

বালাশোরে সংঘটিত দুর্ঘটনাটি কাভার করা এএফপি'র একজর সাংবাদিক নিশ্চিত হয়েছেন যে স্থাপনাটি হিন্দু ধর্মের একটি শাখা ইসকনের একটি মন্দির। ইসকন হরে কৃষ্ণ আন্দোলন নামেও পরিচিত।

নীচে এএফপি'র তোলা বালাশোরের এই মন্দির ও এর ছাদ থেকে নেয়া ছবি দেয়া হলো:

Image

মন্দিরটির যাজক ব্রিজ শরন দাস এএফপি'কে বলেন যে সংঘর্ষটি ২ জুন সংঘটিত হয়।

তিনি বলেন, “ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। কিন্তু তারচেয়েও মর্মান্তিক হচ্ছে যে কিছু মানুষ ঘটনাটির সাথে সাম্প্রদায়িক সম্পর্ক দেখানোর জন্য ইসকনের মন্দিরের ছবিকে মসজিদের ছবি বলে শেয়ার করছেন।”

ইসকনের মন্দিরটি গুগল ম্যাপসেও এখানে (আর্কাইভ এখানে) দেখতে পাওয়া যায়।

নীচে বিভ্রান্তিকর পোস্টের ছবি (বামে) ও গুগল ম্যাপসে পাওয়া ছবির (ডানে) একটি তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেওয়া হলো:

Image

এছাড়া ওড়িশ্যা পুলিশও একটি টুইটের মাধ্যমে ঘটনাটির সাথে সাম্প্রদায়িক সম্পর্ক থাকার সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিয়েছে এবং যারা এরকম দাবি করছেন তাদেরকে বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে।

এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?

আমাদের সাথে যোগাযোগ