ভিডিওটি ভারতের একটি মন্দিরের, বাংলাদেশের বন্যার নয়
ফেসবুকের বিভিন্ন পোস্টে একটি ভিডিও কয়েক হাজার বার দেখা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে পানির প্রবল স্রোতের মধ্যে একটি মন্দির অক্ষত অবস্থায় টিকে আছে। দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওটি ২০২২ সালের জুন মাসে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সংঘটিত বন্যার সময় ধারণ করা। দাবিটি অসত্য; ভিডিওটি ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে অনলাইনে পাওয়া যায় এবং এতে মূলত ভারতের মধ্য প্রদেশের একটি মন্দির দেখা যাচ্ছে।
গত ২০ জুন ফেসবুকে করা এই পোস্টটির ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “হাজার হাজার ঘর-বাড়ি সিলেট-সুনামগঞ্জে নদীর জলে তলিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু ঈশ্বরের ঘর(মন্দির) এখনো মাথা উচু করে দাড়িয়ে আছে।”
৩০ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের ভিডিওটিতে দেখা যায় পানির তীব্র স্রোতের মধ্যে মন্দিরের মতো একটি স্থাপনা দাঁড়িয়ে আছে যা ইতোমধ্যে ৩২ হাজারের বেশি দেখা হয়েছে।

চলতি জুন মাসে বাংলাদেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় সিলেট ও সুনামগঞ্জে প্রবল বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সৃষ্ট বন্যায় প্রায় চার মিলিয়ন মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। এএফপির প্রতিবেদন দেখুন এখানে।
একই ভিডিও ক্লিপ ফেসবুকে এখানে ও এখানে একই রকম দাবি সহকারে শেয়ার করা হয়।
তবে দাবিটি অসত্য।
গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চে দেখা যায় দেখতে হুবহু একটি ভিডিও ২০২১ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ইউটিউবে পোস্ট করা হয়।
হিন্দি ভাষার ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, “শ্রী কপিলেশ্বর মন্দির, সারাংপুর।”
সারাংপুর ভারতের মধ্য প্রদেশের একটি শহর।
নীচে বিভ্রান্তিকর ফেসবুক পোস্টের ভিডিও (বামে) ও ইউটিউবে পোস্ট করা ভিডিওর (ডানে) মধ্যে একটি তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেখানো হলো:

মধ্য প্রদেশের রাজগড় জেলার সরকারি ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী কপিলেশ্বর মন্দিরটি কালি সিন্ধ নদীতে নির্মিত হয়। সারাংপুর এই রাজগড় জেলাতেই অবস্থিত।
মন্দিরটির একটি ছবিও ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়।

গুগল ম্যাপসেও মন্দিরটিকে কালি সিন্ধ নদীতে দেখানো হয়েছে এবং ম্যাপসে প্রাপ্ত ছবির সাথে বিভ্রান্তিকর ফেসবুক পোস্টের ভিডিওর দৃশ্যের মিল রয়েছে।
সিলেটের বন্যাকে কেন্দ্র করে এর আগেও ফেসবুকে বিভ্রান্তিকর দাবি করা হলে এএফপি তার উপর ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন করে। দেখুন এখানে।