![](/sites/default/files/medias/factchecking/g2/2021-08//5d25ab2601a1b21c46b4c58f883fa12a.jpeg)
ছবিগুলো শিল্পকর্মের, সত্যিকারের দু'মুখো মানুষের নয়
- নিবন্ধটি এক বছর পুরনো
- প্রকাশিত 5 আগস্ট 2021, 11:51
- 3 এক্স মিনিটে পড়ুন
- লেখক: এএফপি বাংলাদেশ
কপিরাইট © এএফপি ২০১৭-২০২4। এই কন্টেন্টের যেকোন বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
গত ২৬ জুলাই ছবিগুলো ফেসবুকে এখানে পোস্ট করা হয়।
''দুমুখো মানুষ'' শিরোনামে পোস্টটির বাংলা ক্যাপশনে লেখা আছে: ''১৯শ শতকে জন্ম নেয়া মানুষটির নাম এডওয়ার্ড মরডেক। ২৩ বৎসর বয়সে আত্মহত্যার আগ পর্যন্ত যিনি ডাক্তারদের কাছে অনুনয় করতেন যেন পিছনের মুখটি সরিয়ে দেওয়া যায়। শ্রুতি আছে মরডেকের পিছনের মুখটা হাসতে পারত,কাঁদতে পারত,ফিসফিস করে কথা বলতে পারত এমনকি কোন জিনিস ধরতেও পারত। মুলত ফিসফিসিয়ে বলা কথাই তার জীবনটা দূর্বিষহ করে তুলেছিল।''
![](/sites/default/files/styles/image_in_article/public/medias/factchecking/g2/2021-08/c7c4d3f8d7911c3033bf302ed405c264.jpeg?itok=TT9TMttp)
এডওয়ার্ড মরডেকেকে একটি নিয়ে একটি কিংবদন্তী প্রচলিত আছে যা ১৮৯৫ যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টন পোস্ট পত্রিকায় ছাপা হয়।
হুবহু ছবিসহ পোস্ট ফেসবুকে এখানে, এখানে ও এখানে শেয়ার করা হয়েছে।
একাধিক পোস্টের মন্তব্য অংশে কিছু ব্যবহারকারীকে ছবিগুলোকে সত্যিকারের কোনো মানুষের ভেবে মন্তব্য করতে দেখা গেছে।
একজন মন্তব্য করেছেন, ''আর কারো যেন এমন না হয় স্রষ্টার কাছে এই প্রার্থনা করি।''
অপর একজন মন্তব্য করেছেন. ''আল্লাহ সব করতে পারেন।''
কিন্তু দাবিটি অসত্য। ছবিগুলো কোনো সত্যিকার মানুষের নয়, বরং এগুলো মোমের তৈরি শিল্পকর্ম।
মোমের শিল্পকর্ম
বিভ্রান্তিকর ফেসবুক পোস্টগুলোতে কথিত দু'মুখো পুরুষ মানুষের একটি রঙ্গীন এবং একটি সাদাকালো ছবি সংযুক্ত আছে। ছবি দুটি হুবহু একই না হলেও দেখতে খুবই কাছাকাছি এবং এগুলো মোমের তৈরি শিল্পকর্ম।
গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চে জার্মানির হামবুর্গে অবস্থিত পানোপটিকোম মোম জাদুঘরের জন্য নির্মিত একটি প্রচারণামূলক ইউটিউব ভিডিওতে শিল্পকর্মটির ছবি পাওয়া যায়।
জাদুঘরটির একজন ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুসান ফায়েরবার নিশ্চিত করেছেন যে, ছবিটি তাদের একটি প্রদর্শনী থেকে নেওয়া।
তিনি এএফপি'কে বলেন, ''রঙ্গীন ছবিটি আমাদের একটি প্রদর্শনী থেকে তোলা হয়। সম্ভবত সাদাকালো ছবিটিও, তবে ছবির পেছনের অংশ দৃশ্যমান না থাকায় এটির ব্যাপারে স্পষ্টভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। এই শিল্পকর্মগুলো আমরা তৈরি করিনি, আমরা এগুলো রাশিয়া থেকে ক্রয় করেছি।''
নীচে বিভ্রান্তিকর ফেসবুক পোস্টের রঙ্গীন ছবি (বামে) ও পানোপটিকোম জাদুঘরের ইউটিউব ভিডিওর (ডানে) তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেওয়া হলো:
![](/sites/default/files/styles/image_in_article/public/medias/factchecking/g2/2021-08/45fe97564dc592be29ae1a5f8dbb556f.jpeg?itok=eZfHHodB)
সাদাকালো ছবিটিও ইউটিউব ভিডিওটির দৃশ্যের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ দেখা যায়। নীচে তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেখুন:
![](/sites/default/files/styles/image_in_article/public/medias/factchecking/g2/2021-08/1a3710a8642c15f2610a62f2d1411631.jpeg?itok=iilHpgSe)
এটা স্পষ্ট নয় যে, সাদাকালো ছবির শিল্পকর্মটি আসলে রঙ্গীন ছবিরই আরেকটি সংস্করণ কিনা।
ফায়েরবার জাদুঘরে শিল্পকর্মটির সাথে সংযুক্ত জার্মান ভাষায় লেখা একটি বর্ণনার ছবিও এএফপি'কে সরবরাহ করেন।
বর্ণনায় লেখা আছে: ''দু'মুখো মানুষ। কথিত আছে তার নাম ছিল এডওয়ার্ড মরডেক এবং তার দুটি মুখ ছিল। একটি সামনে এবং একটি মাথার পেছনে। সম্ভবত জোড়া মানবের বংশগত রূপ এটি। ৩৩ বছর বয়সে তিনি আত্নহত্যা করেন।''
![](/sites/default/files/styles/image_in_article/public/medias/factchecking/g2/2021-08/50123d428980ab26aef0a9418f0f67a1.jpeg?itok=JN8_1TyL)
মাথার খুলির ছবি
ফেসবুক পোস্টে এডওয়ার্ড মরডেকের বলে সংযুক্ত মাথার খুলির ছবিটি মার্কিন ভাস্কর্য নির্মাতা টস কুবলারের ইন্সটাগ্রামে পাওয়া যায়।
কুবলার নিজেকে 'অদ্ভুত/অবাস্তব জিনিসের শিল্পী' (Sculptor of the Bizarre) বলে উল্লেখ করেছেন।
অনলাইন শপিং ওয়েবসাইট ইটসি-তে কুবলারের শিল্পকর্মটির বর্ণনা অনুযায়ী এটি দু'মুখো মানুষের মাথার খুলির অনুরূপ একটি ভাস্কর্য।
পন্যটির বর্ণনায় লেখা আছে, ''এটি পেশাদার শিল্পী থমাস টম কুবলারের হাতে নির্মিত এবং অতিবাস্তব দু'মুখো এই খুলিকে প্রকৃত খুলির রূপ দেওয়ার জন্য এটি জতু তথা ধুনা নামক একধরণের পদার্থ দিয়ে তৈরী করা হয়েছে।''
নীচে বিভ্রান্তিকর ফেসবুক পোস্টের ছবি (বামে) ও কুবলারের ইন্সটাগ্রামে পোস্ট করা ছবির (ডানে) একটি তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেওয়া হলো:
![](/sites/default/files/styles/image_in_article/public/medias/factchecking/g2/2021-08/c8f5bd82dca03bf67423747abb435633.jpeg?itok=oQzdvkSA)
ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা স্নোপস ও ইউএসএ টুডে ফ্যাক্ট চেকও এ নিয়ে এখানে ও এখানে ফ্যাক্ট চেক প্রতিবেদন করেছে।
এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?
আমাদের সাথে যোগাযোগ