চিতাবাঘের আক্রমণের ভিডিওটি ভারতের, বাংলাদেশের নয়

চিতাবাঘের সাথে খালি হাতে ভারতের এক ব্যক্তির লড়াইয়ের একটি ভিডিওকে বাংলাদেশের ঘটনা হিসেবে অসত্য ভাবে অনলাইনে ছড়ানো হয়েছে। সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রামের বনাঞ্চলে ক্যামেরা ট্র্যাপে একটি চিতাবাঘের ছবি তোলা  হলেও, বাংলাদেশে অত্যন্ত বিপন্ন প্রজাতির এই প্রাণীটি খুব কমই দেখা যায়। 

২৮ জুন ২০২৫ তারিখে একটি ফেসবুক পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়, “লক্ষীপুর ইট ভাটায় চিতা বাঘের সাথে মানুষের লড়াই”।

পোস্টে যুক্ত একটি ভিডিওতে একজন লোককে একটি বড় বিড়ালের সাথে লড়াই করতে এবং দূর থেকে কিছু মানুষকে প্রাণীটিকে লক্ষ্য করে পাথর ও ইট ছুঁড়ে মারতে দেখা যায়।

Image
লাল ক্রস সংযুক্ত করে ৮ জুলাই ২০২৫ তারিখে নেয়া অসত্য পোস্টের স্ক্রিনশট

সম্প্রতি পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি চিতাবাঘ দেখা যাওয়ার পর ভিডিওটি একই ধরনের দাবিতে ফেসবুক পোস্টে এখানে এবং এখানে ছড়ানো হয় (আর্কাইভ লিংক)। 

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচারের তথ্য অনুসারে, বিশ্বব্যাপী চিতাবাঘকে ঝুঁকিপূর্ণ প্রজাতি হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তবে চিতাবাঘের জনসংখ্যা আর এই দেশে টিকে থাকতে পারবে না বলে সতর্ক করে বাংলাদেশে প্রাণীটিকে অত্যন্ত বিপন্ন ঘোষণা করা হয়। 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ মনিরুল খানের মতে, বিড়ল প্রজাতির এই বিড়ালদের নিয়ে আগের প্রতিবেদনগুলো থাবার ছাপ এবং বনে ক্ষণিকের দৃশ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছিল। 

অসত্য ভাবে ছড়ানো ক্লিপটির কিফ্রেম নিয়ে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চে এনডিটিভি চ্যানেলে ২৫ জুন ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে ভিডিও পাওয়া যায় (আর্কাইভ লিংক)। 

ভিডিওটির উপর জুড়ে দেয়া ক্যাপশনে বলা হয়, “লাখিমপুর খেরিতে একজন লোক খালি হাতে চিতাবাঘের সাথে লড়াই করছে,”। লাখিমপুর ভারতের বৃহৎ রাজ্য উত্তর প্রদেশের একটি জেলার নাম, যার সাথে বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর জেলার নামের সাদৃশ্য রয়েছে। 

ভিডিওটিতে হিন্দি ভাষায় লোকজনকে কথা বলতে শোনা যাচ্ছে। 

Image
অসত্য ভাবে ছড়ানো ক্লিপ (বামে) এবং এনডিটিভি’র ভিডিওর তুলনামূলক স্ক্রিনশট

বেশ কয়েকটি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ঘটনাটি নিয়ে রিপোর্ট করেছে, যেখানে অসত্য ভাবে প্রচারিত ভিডিওটির মত একই রকম দৃশ্য দেখা যায় (আর্কাইভ লিংক এখানে এবং এখানে)। 

উত্তর প্রদেশের বন বিভাগের একজন কর্মকর্তা লাখিমপুর খেরি এলাকার বাবুরি গ্রামের একটি ইটভাটায় এই ঘটনাটি ঘটেছে বলে এএফপিকে নিশ্চিত করেছেন।

ফরেস্ট রেঞ্জার রাজেশ দীক্ষিত ৮ জুলাই  এএফপিকে জানান, “গ্রামবাসী বন বিভাগকে সতর্ক করে, পরবর্তীতে চিতাবাঘটিকে শান্ত করা হয় এবং বন বিভাগের চিকিৎসা কেন্দ্রে স্থানান্তরিত করা হয়”। “বন বিভাগের কিছু কর্মকর্তা এই সময়ে আহত হন”।

এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?

আমাদের সাথে যোগাযোগ