এটি ২০১৫ সালে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দলের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার ছবি
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক ধর্মীয় সহিংসতার প্রেক্ষিতে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের কুষ্টিয়া জেলায় এক হিন্দু পুলিশ কর্মকর্তা কর্তৃক তিন জন মুসলমানকে হত্যা করার সময়কার ছবি এটি। দাবিটি অসত্য; ২০১৫ সালে কুষ্টিয়ায় ক্ষমতাসীন দলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের খবরের সাথে ছবিটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
গত ১৫ অক্টোবর ফেসবুকে এখানে ছবিটি শেয়ার করা হয়।
বাংলাদেশে সম্প্রতি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে ছবিটি অনলাইনে ছড়ানো হচ্ছে।
পোস্টটি ইতোমধ্যে নয় হাজার বারের বেশি শেয়ার করা হয়েছে।

ফেসবুক পোস্টটির ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, "কুষ্টিয়াতে হিন্দু পুলিশ কমকর্তা সৌমেন কুমার রায় প্রকাশ্যে গুলি করে মুসলিম স্বামী-স্ত্রীসহ ৬ বছরের শিশুকে হত্যা করেছে.. ছবিতে সৌমেন রায় শটগান হাতে নিয়ে হামলা করার ছবি।"
সৌমেন রায় বাংলাদেশ পুলিশের একজন এএসআই ছিলেন যিনি এ বছরের জুন মাসে কুষ্টিয়ায় তার স্ত্রী, সৎ ছেলে এবং অপর এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করেন বলে খবর প্রকাশিত হয়।
ভাইরাল হওয়া দাবিসহ ছবিটি ফেসবুকে এখানে ও এখানে পোস্ট করা হয়।
তবে দাবিটি অসত্য।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাব্বিরুল আলম নিশ্চিত করেন যে, ছবিটি সৌমেন রায় নামের কোন পুলিশ কর্মকর্তার নয়।
তিনি এএফপিকে বলেন, "এই ব্যক্তি সৌমেন রায় নন। বরং ছবিটি ২০১৫ সালে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের র্যালির পরে দুই গ্রপের মধ্যে সংঘর্ষের সময়ের।"
গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চে ছবিটি ২০১৫ সালে প্রকাশিত বাংলা দৈনিক প্রথম আলোর একটি প্রতিবেদনে পাওয়া যায়।
প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল, "কুষ্টিয়ায় শোক র্যালি শেষে সংঘর্ষে আ.লীগ কর্মী নিহত।"
২০১৫ সালের ১৬ আগস্ট প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়। প্রাথমিকভাবে ছবির যুবককে অজ্ঞাত বলে উল্লেখ করা হয় প্রথম আলোর রিপোর্টে।
নীচে বিভ্রান্তিকর ফেসবুক পোস্ট (বামে) ও প্রথম আলোতে প্রকাশিত ছবির (ডানে) তুলনামূলক একটি স্ক্রিনশট দেওয়া হলো-

পরবর্তীতে একই ঘটনার ফলো-আপ প্রতিবেদনে প্রথম আলো ছবির ব্যক্তিকে স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের কর্মী আনিসুর রহমান আনিস বলে চিহ্নিত করে।
প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল, "গুলি ছুড়েছেন চাকরিচ্যুত এএসআই।"
প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, আনিসুর রহমান বাংলাদেশ পুলিশের একজন এএসআই ছিলেন।
প্রতিবেদনটি থেকে আরো জানা যায়, ফেনসিডিল আত্মসাতের দায়ে চাকরিচ্যুত হওয়ার পর আনিস কুষ্টিয়ায় স্থানীয় রাজনীতিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপের সাথে যোগ দেন।