হ্যাকার হামজা বেনদেলাজ বিষয়ক পোস্টের সাথে বিভ্রান্তিকরভাবে ছবিটি ছড়ানো হয়েছে
- নিবন্ধটি এক বছর পুরনো
- প্রকাশিত 8 ডিসেম্বর 2021, 14:16
- 3 এক্স মিনিটে পড়ুন
- লেখক: এএফপি বাংলাদেশ
কপিরাইট © এএফপি ২০১৭-২০২4। এই কন্টেন্টের যেকোন বানিজ্যিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি নেয়া বাধ্যতামূলক। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
ছবিগুলো গত ১৮ নভেম্বর ফেসবুকে এখানে শেয়ার করা হয়।
পোস্টটির বাংলা ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, "এই সেই হামজা বেনদেলাজ, যিনি ২১৭ টি ব্যাংক থেকে ৪০ কোটি ডলার হ্যাক করেন এবং আফ্রিকা ও ফিলিস্তিনে অনাহারে অর্ধাহারে মরে যাওয়ার উপক্রম মানুষদের মাঝে বিলিয়ে দেন।আদালতে তাঁর ফাঁসির রায় হলে অবশেষে হাসি মুখে ফাঁসিতে ঝুলে পড়েন।"
একইরকম ছবি অনুরূপ দাবি সহকারে ফেসবুকে এখানে ও এখানে শেয়ার করা হয়।
দাবিটি অসত্য।
প্রথম ছবি
রিভার্স ইমেজ সার্চে দেখা যায় প্রথম ছবিটি হামজা বেনদেলাজের। এটি ২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারী গেটি ইমেজে প্রকাশিত হয়।
ছবিটির ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, "বিশ্বব্যাপী ২১৭ টি ব্যাংক এবং আর্থিক সংস্থার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার অভিযোগে মার্কিন ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (এফবিআই) শীর্ষ দশ ওয়ান্টেড অভিযুক্তের একজন আলজেরিয়ার হামজা বেনদেলাজকে ২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারীতে ব্যাংককে ইমিগ্রেশন পুলিশ ব্যুরোতে একটি প্রেস কনফারেন্সের সময় থাই পুলিশ অফিসাররা নিয়ে যাচ্ছেন।"
হামজা বেনদেলাজ একজন আলজেরীয় হ্যাকার যিনি হামজা বিন দালাজ নামেও পরিচিত।
নিজের আড়ম্বর জীবন যাপনের জন্য মার্কিন বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে হ্যাক করে কয়েক মিলিয়ন ডলার চুরির অভিযোগে বেনদেলাজ এফবিআই এর ওয়ান্টেড তালিকায় ছিলেন। থাই পুলিশ কর্তৃক হামজার গ্রেফতারের খবরটি ২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারীর এএফপির প্রতিবেদনে পাওয়া যায়।
মার্কিন বিচার বিভাগের ২০১৬ সালের এই বিবৃতি অনুযায়ী, "স্পাইআই নামক ম্যালওয়ার তৈরী করে বিশ্বের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ চুরির দায়ে" ২০১৬ সালের এপ্রিলে বেনদেলাজকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
নীচে বিভ্রান্তিকর ফেসবুক পোস্টের ছবি (বামে) এবং গেটি ইমেজের ছবির (ডানে) একটি তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেওয়া হলো:
দ্বিতীয় ছবি
গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চে দেখা যায় গলায় দড়িযুক্ত অবস্থায় হাস্যরত ব্যক্তির ছবিটি এক বিচারককে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত এক ইরানী যুবককে ২০০৭ সালে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়ার খবরের সাথে পাওয়া যায়।
২০০৭ সালের ৭ আগস্ট ইসলামিক রিপাবলিক নিউজ এজেন্সী (ইরনা) এর এই প্রতিবেদনে ছবিটি প্রকাশিত হয়। এর শিরোনাম ছিল, "বিচারক হত্যার বার্ষিকীতে তেহরানে হত্যাকারীদের ফাঁসি কার্যকর।"
প্রতিবেদনটি অনুযায়ী, "তেহরানের বিচারক হাসান মোকাদ্দাসকে হত্যার বার্ষিকীতে গত বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে হত্যাকারীদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। দুই বছর আগে উত্তর তেহরানে একটি বিচারিক ভবন থেকে বের হওয়ার পর এই বিচারককে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করা হয়।"
প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়, "২৮ বছর বয়সী মাজিদ কাভুসিফার ও তার কাজিন ২৪ বছর বয়সী হোসেনকে ঘটনাস্থল আহমেদ কাসির স্ট্রিটে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়।"
ছবিটি ইরানিয়ান স্টুডেন্ট নিউজ এজেন্সী (ইসনা) এর ফটোগ্রাফার আলি রেজা সোটাকবারের সৌজন্যে প্রকাশিত হয়।
ছবিটি ইসনা'র ওয়েবসাইটেও পাওয়া যায়।
২০০৭ সালের এএফপির একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, "২০০৫ সালে ইরানের এক বিচারককে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তিকে বৃহস্পতিবার তেহরানের রাস্তায় প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়া হয়। গত ৫ বছরে ইরানের রাজধানীতে প্রকাশ্যে ফাঁসি দেওয়া ঘটনা এই প্রথম।"
নীচে নীচে বিভ্রান্তিকর ফেসবুক পোস্টের ছবি (বামে) এবং ইরনা'তে প্রকাশিত ছবির (ডানে) একটি তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেওয়া হলো:
এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?
আমাদের সাথে যোগাযোগ