এটি ২০১৪ সালে রাশিয়ার একটি ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনার ভিডিও

একটি জ্বলন্ত গাড়ির দৃশ্য ফেসবুক, টুইটার ও ইউটিউবে ব্যাপকভাবে শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে যে, ভিডিওটি চলতি অক্টোবরে এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া নবী মুহাম্মদের কার্টুন অঙ্কনকারী সুইডিশ কার্টুনিস্ট লার্স ভিকসের মৃত্যুর ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট। দাবিটি অসত্য; ভিডিও ক্লিপটি ২০১৪ সালে রাশিয়ায় একটি সড়ক দুর্ঘটনার খবরের সাথে অনলাইনে আগে থেকেই বিদ্যমান ছিল।

৫ মিনিট দৈর্ঘ্যের ভিডিও ক্লিপটি গত ৫ অক্টোবর ফেসবুকে এখানে শেয়ার করা হয়।

Image

ভিডিওটি এক হাজার সাতশো বারের বেশি দেখা হয়েছে।

পোস্টটির ক্যাপশনে লেখা রয়েছে, ''মহানবী হজরত মোহাম্মদকে (সা.) নিয়ে ব্যঙ্গচিত্র আঁকা সুইডেনের কার্টুনিস্ট লারস ভিকস সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন।''

২০০৭ সালে নবী মুহাম্মদের কার্টুন আঁকার কারণে মৃত্যুর হুমকি পাওয়ার পর থেকে পুলিশি নিরাপত্তায় থাকা ৭৫ বছর বয়সী সুইডিশ কার্টুনিস্ট লার্স ভিকস গত ৩ অক্টোবর এক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান।

ভিডিওটি একইরকম দাবি সহকারে মালয়েশিয়া, ভারত, পাকিস্তাননাইজেরিয়ার ফেসবুক ব্যবহারকারীরাও এখানে ও এখানে শেয়ার করেন।

ক্লিপটি টুইটারইউটিউবেও একইরকম দাবি সহকারে ছড়িয়েছে।

তবে দাবিটি অসত্য।

ভিডিও ক্লিপটির কী-ফ্রেমের সাহায্যে রিভার্স ইমেজ সার্চ দিয়ে ফুটেজটির একটি দীর্ঘতর সংস্করণ পাওয়া গেছে যা ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ইউটিউবে আপলোড করা হয়েছে।

ভিডিওটি 'ইমার্জেন্সি সিচুয়েশন মিনিস্ট্রি অব উদমুর্তিয়া' নামক ইউটিউব চ্যানেল থেকে আপলোড করা হয়।

রাশিয়ান ভাষার শিরোনামটি ছিল এরকম, ''(সতর্কতা ১৮+) ২১/০৯/২০১৪ ইজেভস্ক-মজগা রাস্তায় ৯ টি গাড়ি দুর্ঘটনায় পতিত।''

ইজেভস্ক এবং মজগা হলো রাশিয়ার উদমুর্তিয়ার দুটি শহর।

ফেসবুকে ছড়ানো বিভ্রান্তিকর ভিডিওটি ইউটিউবে পাওয়া ভিডিওর ২ মিনিট ৩ সেকেন্ড থেকে দেখতে পাওয়া যায়।

নীচে বিভ্রান্তিকর ফেসবুক পোস্টের ভিডিও (বামে) ও ইউটিউবে পাওয়া ভিডিওর (ডানে) একটি তুলনামূলক স্ক্রিনশট দেওয়া হলো:

Image

একই ভিডিওর অংশবিশেষ রাশিয়ার উদমুর্তিয়া ভিত্তিক স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইজলাইফের ইউটিউব চ্যানেলেও পোস্ট করা হয়েছিলো ২০১৪ সালে।

২০১৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত ইজলাইফের এই প্রতিবেদনেও ক্লিপটি পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল, ''নিজ গাড়িতে পুড়ে নিহত ইজেভস্কের বাসিন্দার স্ত্রী জানান তার সাথে তার ছোট মেয়েরও থাকার কথা ছিল।''

২০১৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত ইজলাইফের আরেকটি প্রতিবেদন অনুসারে জানা যায় যে, সেই দুর্ঘটনায় কয়েকটি গাড়ি একসাথে পতিত হয়েছিল।

রাশিয়ান টিভি চ্যানেল রেন টিভি ও সংবাদমাধ্যম ফনটানকা'র প্রতিবেদনও ভিডিও ক্লিপটি পাওয়া যায়। দেখুন এখানে ও এখানে।

এমন কোনো কন্টেন্ট আছে যা আপনি এএফপি’কে দিয়ে ফ্যাক্ট চেক করাতে চান?

আমাদের সাথে যোগাযোগ